প্রকাশিত : ০৫ অক্টোবর, ২০২৫, ০২:৪২ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দেশে অ্যানথ্রাক্স সংক্রমণ: দুজনের মৃত্যু, আক্রান্ত অর্ধশতাধিক

ছবিঃ সংগ্রহীত।

মাইদুল হক মিকুঃ 

রংপুরের পীরগাছা উপজেলায় অ্যানথ্রাক্স সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। একইসঙ্গে মিঠাপুকুর ও কাউনিয়া উপজেলায় অ্যানথ্রাক্স সন্দেহে কয়েকজনের নমুনা পরীক্ষা চলছে। গত জুলাই ও সেপ্টেম্বর মাসে দুজন অ্যানথ্রাক্স উপসর্গে মারা গেছেন

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অন্তত ৫০ জন মানুষ ত্বকের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন এবং গত দুই মাসে তিন শতাধিক গবাদিপশু মারা গেছে। অসুস্থ পশু জবাই ও মাংস নাড়াচাড়া করার কারণে একটি পরিবারের চারজনসহ অন্তত ১০ জন সংক্রমিত হয়েছেন।

কীভাবে ছড়ায়

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জানায়, অ্যানথ্রাক্স ব্যাকটেরিয়া ব্যাসিলাস অ্যানথ্রাসিস দ্বারা সৃষ্ট সংক্রমণ, যা মূলত গরু, ছাগল ও ভেড়ার মতো পশু থেকে মানুষে ছড়ায়।

  • মানুষে মানুষে সংক্রমণ বিরল, তবে ত্বকের ক্ষত থাকলে ঝুঁকি থাকে।

  • স্পোরযুক্ত ব্যাকটেরিয়া খাবার, শ্বাসপ্রশ্বাস বা ত্বকের ক্ষতের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে।

অ্যানথ্রাক্সের ধরন

১️⃣ কিউট্যানিয়াস (ত্বকজনিত): সবচেয়ে সাধারণ ধরন; ক্ষতস্থানে ফোঁটা বা কালো ঘা তৈরি হয়।
২️⃣ গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল (খাদ্যজনিত): অপরিপক্ব মাংস খেলে পেটব্যথা, বমি, রক্তবমি হয়।
৩️⃣ ইনহেলেশন (শ্বাসজনিত): সবচেয়ে ভয়ানক; ফুসফুসে সংক্রমণ হয়ে দ্রুত শ্বাসকষ্ট ও মৃত্যুর কারণ হতে পারে।

চিকিৎসা ও প্রতিরোধ

বিশেষজ্ঞরা জানান, দ্রুত অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগে অধিকাংশ সংক্রমণ নিরাময়যোগ্য
প্রতিরোধে যা করতে হবে—

  • অসুস্থ পশু জবাই বা মাংস বিক্রি করা যাবে না।

  • মৃত বা আক্রান্ত পশু নিরাপদে পুড়িয়ে ফেলা বা গভীর গর্তে পুঁতে ফেলা জরুরি।

  • আক্রান্ত এলাকায় কোয়ারেন্টিন ও জীবাণুমুক্ত কার্যক্রম চালু রাখতে হবে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে

পীরগাছা, সিরাজগঞ্জ, চট্টগ্রাম, কুষ্টিয়া, মেহেরপুরসহ দেশে এর আগেও অ্যানথ্রাক্স ছড়িয়েছে। বর্তমানে স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, পর্যাপ্ত ওষুধ মজুত আছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ—

“সচেতন থাকাই অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায়। অসুস্থ পশুর মাংস, দুধ বা চামড়া ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।”

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়