প্রকাশিত : ০১ অক্টোবর, ২০২৫, ০৩:৪৮ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কুষ্টিয়ায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সফল অভিযান, উদ্ধার ১২ হাজার মামলায় ৫ হাজার

বাদশা আলমগীর,  স্টাফ রিপোর্টার:

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫) মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর অভিযান চালিয়ে আটক করে যুবক মোঃ বুলবুল ইসলাম (২৫)-কে। অভিযান ও মামলায় উল্লেখ আছে, তার কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ৫,০০০ পিস ট্যাপেন্ডা ডল ট্যাবলেট কিন্তু স্থানীয়রা বলছেন, এখানে তো অন্যও সংখ্যা রহস্য জড়িয়ে আছে।

বুলবুলের স্ত্রী রুপা খাতুন অভিযোগ করেছেন, আমার স্বামীর কাছে ছিল ১২,০০০ পিস ট্যাবলেট, অথচ মামলায় দেখানো হয়েছে মাত্র ৫,০০০। তাহলে বাকি ৭,০০০ পিস কোথায় গেল? নিশ্চয়ই তারা মেরে দিয়েছে।

বুলবুলের বন্ধু মুন্না জানান, তাকে বুলবুলের সঙ্গে আটক করা হয়েছিল, পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। থানায় গিয়ে বুলবুল মুন্নাকে জানান, তার কাছে ১২,০০০ পিস ট্যাবলেট ছিল, কিন্তু মামলায় দেখিয়েছে ৫,০০০। মুন্না অভিযোগ করেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা  তাকে জিজ্ঞেস করে, তুই মিলাদ টিলাদ দিছিস তো? মুন্না বলেন মিলাদ দিবো কেনো, তার উত্তরে তারা বলেন, তোকে ছেড়ে দিয়েছি এজন্য, তখন মুন্না বলেন আমি তো আসামী না, তাহলে আমাকে কেনো ছাড়বেননা। পরে মাদকের কর্মকর্তারা বলেন, তোকে ছাড়ার কারনে আমাদের উপরে সাংবাদিকদের চাপ আসছে।

মামলার সাক্ষী খন্দকার শাহিন, সুন্দরবন কুরিয়ারে কর্মরত তিনি বলেন, আমাকে শুধু সাক্ষী হতে বলা হয়েছিল। আমি সই করেছি, কিন্তু আমার সামনে কোনো প্যাকেট খোলা হয়নি। ভেতরে কত পিস ছিল, আমি জানি না। এই বক্তব্য স্বাভাবিকভাবে মামলার স্বচ্ছতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, আমরা ৫,০০০ পিস উদ্ধার করেছি। মামলাতেও তাই দেখানো হয়েছে। এর বাইরে কোনো তথ্য সঠিক নয়।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক পারভিন আখতারকে অফিসে না পেয়ে মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলে তিনি কল কেটে দেন।

তবুও স্থানীয়রা বলছেন, এ ধরনের ঘটনা নতুন নয়। বহুদিন ধরেই অভিযানে ধরা মালামালের প্রকৃত সংখ্যা কম দেখানো হয়। এক ক্ষুব্ধ বাসিন্দা প্রশ্ন তুলেছেন, রক্ষক যখন ভক্ষক হয়, তখন সাধারণ মানুষ আস্থা রাখবে কিভাবে?

ঘটনার পর প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে—বাস্তবে উদ্ধার হয়েছিল কত? আর মামলায় কম দেখানো হলো কেন? স্থানীয় জনগণ জোরালোভাবে দাবি তুলেছেন, বিষয়টি নিরপেক্ষ তদন্ত করে প্রকৃত সত্য প্রকাশ করতে হবে। তাদের ভাষায়—মাদক দমন হবে কিভাবে, যদি উদ্ধার হওয়া মালামালের সংখ্যাতেই এত রহস্য লুকিয়ে থাকে?

পুরো ঘটনার প্রেক্ষাপট এখন কুষ্টিয়ায় আলোচিত ইস্যু। প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে, মাদকবিরোধী অভিযানের বিশ্বাসযোগ্যতা ও জনগণের আস্থা একসঙ্গে প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়