প্রকাশিত : ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৮:৪৬ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

৮ বছর পর মানোন্নয়নের আবেদন ইবি ছাত্রদল নেতার, অনুমোদন নিতে চলছে জোর লবিং

ইবি প্রতিনিধি:

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রদলের সদস্য-সচিব মাসুদ রুমী মিথুন ও সদস্য উল্লাস মাহমুদ নিয়ম বহির্ভূতভাবে স্নাতক পরীক্ষার মানোন্ননয়ের জন্য আবেদন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী, স্নাতক পরীক্ষার ফল প্রকাশের ২০ দিনের মধ্যে মানোন্নয়ন পরীক্ষার জন্য আবেদন করতে হয়। তবে তারা ফল প্রকাশের আট বছর পর এই আবেদন করেছেন। এ ঘটনায় ক্যাম্পাসে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। তবে নিয়মে না থাকলে তারা কোনোভাবেই মানোন্নয়ন পরীক্ষা দিতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ।  

জানা গেছে, মাসুদ রুমী মিথুন ও উল্লাস মাহমুদ ইংরেজি বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তাদের স্নাতক পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয় ২০১৭ সালে। দীর্ঘ আট বছর পর চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তারা বিভাগের সভাপতির বরাবর মানোন্নয়ন পরীক্ষার জন্য আবেদন করেন। এছাড়াও বিভাগটির ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের তাপস অধিকারীও মানোন্নয়নের আবেদন করেছেন। উল্লাস মাহমুদ ইবি শাখা ছাত্রদলের সক্রিয় সদস্য এবং ঝিনাইদহ জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-সম্পাদক।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার অর্ডিন্যান্স ২০০৬-০৭ ও ২০১৭-১৮ অনুযায়ী স্নাতক ফল প্রকাশের তারিখ থেকে ২০ দিনের মধ্যে বিভাগের সভাপতির মাধ্যমে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর মানোন্নয়ন পরীক্ষার জন্য আবেদন পাঠানোর নিয়ম উল্লেখ রয়েছে। যদি নির্দেশিত তারিখের মধ্যে সিজিপিএ উন্নত করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে পূর্ববর্তী ফলাফলই বলবৎ থাকবে। এছাড়া আরেকটি ধারায় উল্লেখ রয়েছে কোনো শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট ব্যাচের জন্য অনুষ্ঠিত মানোন্নয়ন পরীক্ষা দিতে ব্যর্থ হয় তাহলে মানোন্নয়নের আর কোনো সুযোগ দেওয়া হবে না। এদিকে আজ বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় অনুমোদনের জন্য বিষয়টি আলোচ্যসূচিতে রয়েছে। বিষয়টির অনুমোদন নিতে শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মী ও বিএনপিপন্থী শিক্ষকরা প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের কাছে জোর লবিং করছেন বলে জানা গেছে। 

শাখা ছাত্রদলের সদস্য-সচিব মিথুন তার আবেদনে বলেন, বিগত সময়ে রাজনৈতিক কারণে তিনি ঠিকভাবে ক্লাস-পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেননি। তবে একই সময়ে শাখা ছাত্রদলের অন্যান্য নেতা-কর্মীরা পরীক্ষায় অংশ নিতে পেরেছেন বলে জানা গেছে। তারা উভয়ই ১৪টি কোর্সে মানোন্নয়নের জন্য আবেদন করছেন। বিভাগীয় সূত্রে জানা যায়, তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে মানোন্নয়ন পরীক্ষা গ্রহণ সম্ভব কি না— এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাছে সুপারিশ করেছেন বিভাগীয় সভাপতি অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ।

বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ইংরেজি বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ইবি ছাত্রদলের সদস্য সচিব মিথুন, একই শিক্ষাবর্ষের উল্লাস এবং আরেক শিক্ষাবর্ষের একটি ছেলে দীর্ঘসময় পর মানোন্নয়নের আবেদন করেছে। বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির মিটিংয়ের পর তাদের বিষয়ে আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত জানাতে কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ যাচাই-বাছাই শেষে কি সিদ্ধান্ত জানায় তার উপর নির্ভর করছে তাদের আসলে মানোন্নয়ন নেওয়া সম্ভব কি না।

ইবি শাখা ছাত্রদলের সক্রিয় সদস্য এবং ঝিনাইদহ জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-সম্পাদক উল্লাস মাহমুদ বলেন, তখন পরীক্ষা তো ভালো করে দিতে পারিনি তাই আবার পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আবেদন করেছি। শুধু পরীক্ষা দেওয়ার জন্যই আবেদন করেছি অন্য কোনো কারণ নেই।

ইবি শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মাসুদ রুমী মিথুন বলেন, রাজনৈতিক কারণে ক্লাস-পরীক্ষা ঠিকমতো করতে না পারায় রেজাল্ট খারাপ হয়েছিল। তাই মানোন্নয়ন পরীক্ষার জন্য আবেদন করেছি। প্রশাসন যদি সুযোগ দেয় তাহলে পরীক্ষা দেব, নাহলে দেব না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. ওয়ালিউর রহমান পিকুল বলেন, ইংরেজি বিভাগ থেকে এ বিষয়ে একটি সুপারিশ এসেছিল। সেটি অডিনেন্সের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় আজকের একাডেমিক কাউন্সিলে পাঠানো হয়েছে। সেখানে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। 

উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, নিয়মের বাইরে গিয়ে আমি কোনো কাজ করবো না। আমার হাত দিয়ে কোনো ধরনের অনিয়ম হবে না। নিয়মে না থাকলে তারা কোনোভাবে পরীক্ষা দিতে পারবে না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়