
এনামুল হক আরিফ
ব্যুরো চিফ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে সাবেক উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম আযম (৪৮)কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার (৫ অক্টোবর) সকালে উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনে করে ঢাকা যাওয়ার সময় তাকে স্টেশন প্ল্যাটফর্ম থেকে আটক করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত গোলাম আযম কসবা পৌরসভার শাহপুর গ্রামের মৃত কফিল উদ্দিনের ছেলে এবং সাবেক পৌর মেয়র গোলাম হাক্কানীর ছোট ভাই।পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি কসবা থানায় বিভিন্ন রাজনৈতিক সহিংসতা, নাশকতা ও সরকারি কাজে বাধা সংক্রান্ত মামলার তদন্তে গোলাম আযমের সম্পৃক্ততার অভিযোগ পাওয়া যায়।এরই ধারাবাহিকতায় চলমান “ডেভিল হান্ট” নামে বিশেষ অভিযানের অংশ হিসেবে কসবা থানা পুলিশ সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় অবস্থান নেয়। ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার আগমুহূর্তে তাকে শনাক্ত করে পুলিশ সদস্যরা গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়।
গ্রেপ্তারের সময় স্টেশনে উপস্থিত লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়, তবে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল কাদের সাংবাদিকদের জানান,
“গ্রেপ্তার গোলাম আযমের বিরুদ্ধে একাধিক রাজনৈতিক মামলা রয়েছে। ‘ডেভিল হান্ট’ অভিযানের অংশ হিসেবে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আইনানুগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তাকে আদালতে প্রেরণ করা হবে।”
তিনি আরও বলেন,
“অভিযান চলমান রয়েছে। রাজনৈতিক পরিচয় বা প্রভাব নির্বিশেষে আইনের আওতার বাইরে কেউ নয়।স্থানীয় রাজনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, গোলাম আযম অতীতে কসবা উপজেলা যুবলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তিনি সংগঠন থেকে কিছুটা দূরে ছিলেন। তার বিরুদ্ধে নাশকতা ও সরকারি সম্পত্তি ক্ষতিসাধনের একাধিক মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।রাজনৈতিক মহলে এই গ্রেপ্তারকে ঘিরে নানান আলোচনা চলছে। কেউ কেউ বলছেন, এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পদক্ষেপ; আবার কেউ বলছেন, চলমান বিশেষ অভিযানে এটি আইনগতভাবে যৌক্তিক পদক্ষেপ।গ্রেপ্তারের খবর ছড়িয়ে পড়তেই কসবা শহরজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। অনেকে স্টেশনের ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করছেন। কেউ কেউ গোলাম আযমের মুক্তি দাবি করেছেন, আবার অনেকেই আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় পুলিশের এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন।স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন,“তিনি একসময় এলাকার রাজনীতিতে প্রভাবশালী ছিলেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে তার নামে বেশ কিছু মামলা হয়েছে। পুলিশ তাকে ধরেছে শুনে অনেকে অবাক হয়েছেন।কসবা থানার পুলিশ জানিয়েছে, গোলাম আযমের গ্রেপ্তারের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
ডেভিল হান্ট অভিযানের অংশ হিসেবে আরও কয়েকজনের নাম তদন্তে এসেছে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।