প্রকাশিত : ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১১:২৫ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

টেকসই উন্নয়নে সাশ্রয়ী ও নির্ভরযোগ্য জ্বালানির ভূমিকা অনস্বীকার্য- ডুয়েট উপাচার্য

হাফিজুর রহমান গাজীপুর 

ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট), গাজীপুর-এর  উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মাদ জয়নাল আবেদীন বলেছেন, 'টেকসই উন্নয়নে সশ্রয়ী ও নির্ভরযোগ্য জ্বালানির ভূমিকা অনস্বীকার্য। বর্তমানে এই জ্বালানি খাত এক বৈপ্লবিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি, স্মার্ট গ্রিড, এনার্জি স্টোরেজ, হাইড্রোজেন ইকোনমি, কার্বন-নিউট্রাল প্রযুক্তি- এগুলো আর ভবিষ্যতের গল্প নয়, বরং আমাদের বর্তমান ব্যস্তবতা। শিক্ষার্থীদের শুধু বইয়ের জান নয়, বাস্তব সমস্যার সমাধানের জন্য তাদের দক্ষতাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগিয়ে শিক্ষার্থীদেরকে সৃজনশীল গবেষণা এবং এভাই, ইন্টারনেট অব থিংসসহ প্রযুক্তি-ভিত্তিক উদ্ভাবনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। এনার্জি খাতে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে পারলে বাংলাদেশ শুধু স্বনির্ভরই হবে না, বজ্র বিশ্ববাজারেও প্রতিযোগিতা করতে পারবে। আজ বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিনারে কক্ষে আয়োজিত "এক্সপ্লোরিং দ্য ক্যারিয়ার অপারচুনিটি ইন এনার্জি ইঞ্জিনিয়ারিং শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ইনস্টিটিউট অব এনার্জি ইঞ্জিনিয়ারিং (আইইই) ও ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেল  (আইকিউএসি)-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত উক্ত সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন  উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আরেফিন কাওসার। আইইই-এর পরিচালক অধ্যাপক ড. এন এম মোমিনুল ইসলাম মুকুটের সভাপতিত্বে সেমিনারে বক্তব্য রাখেন যন্ত্রকৌশল অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ গবেষণা কাউন্সিলের (সিইপিআরসি) সদস্য (ইনোভেশন) (ইন্যে ও অতিরিক্ত সচিব ড. মো. রফিকুল ইসলাম। আইইই-এর প্রভাষক সেজুতি জামানের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন আইকিউএসি-এর অতিরিক্ত পরিচালক অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলাম।

সেমিনারে  উপাচার্য বলেন, 'বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার ব্যাপকভাবে বাড়ছে। এ খাতে রয়েছে অপার সম্ভাবনা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও গবেষকগণ এসব বিষয়কে সামনে রেখে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে। শিক্ষার্থীদের চিন্তাশক্তি প্রসারিত করা, গবেষণা মনোভাব জাগ্রত করা এবং এনার্জি সেক্টরে ক্যারিয়ার গঠনের জন্য ভবিষ্যতে এ ধরনের আরও আয়োজন করা যেতে পারে।' তিনি বলেন, 'দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথ গবেষণা কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষা ও গবেষণার উৎকর্ষতায় প্রাণপ্রিয় ডুয়েটকে শীর্ষ অবস্থানে নিয়ে যেতে আমরা কাজ করছি।' তিনি এ ব্যাপারে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি আরও বলেন, 'আমি আশা করি, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সকলেই গবেষণার ক্ষেত্রে পরিবেশবান্ধব, টেকসই এবং দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক বিষয়গুলোতে আগ্রহী হয়ে প্রাণের এই বিশ্ববিদ্যালয় ও দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।' তিনি এই ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য আইইই ও আইকিউএসিসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে  উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আরেফিন কাওসার বলেন, 'এনার্জি ইঞ্জিনিয়ারিং এমন একটি ক্ষেত্র- যা একদিকে বিদ্যুৎ উৎপাদন, ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরের সঙ্গে যুক্ত, অন্যদিকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, নীতিনির্ধারণ, এনার্জি হারভেস্টিং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-ভিত্তিক এনার্জি অপ্টিমাইজেশনদয় নানা ধরণের নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে সম্পর্কিত। আমাদের শিক্ষার্থীদের উচিত এই পরিবর্তনের অংশ হওয়া এবং জ্বালানি খাতে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কাজ করে যাওয়া।' তিনি আরও বলেন, 'আজকের এই সেমিনারটি অংশগ্রহণকারী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য গবেষণার নতুন দিকগুলোর প্রতি সুযোগ সৃষ্টি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।'

আইইই-এর পরিচালক তাঁয় বক্তব্যে এনার্জি সেক্টরে ইনোভেশনের গুরুত্ব তুলে ধরে জলবায়ু পরিবর্তন, জ্বালানি নিরাপত্তা, সৌরশক্তি, বয়শক্তি, জৈব-জ্বালানি, আধুনিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ইত্যাদির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং শিল্প, গবেষণা ও সরকারি খাতে এনার্জি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চাহিদার বিষয়ে আলোচনা করেন।

সেমিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম জ্বালানি খাতের বৈশ্বিক প্রবণতা, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং বাংলাদেশে সুযোগ-চ্যালেঞ্জ বিশদভাবে তুলে ধরেন। তিনি জ্বালানি খাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্প, এনার্জি এফিশিয়েন্সি, কার্বন ম্যানেজমেন্ট এবং এ খাতে ক্যারিয়ার গঠন ও নতুন নতুন চাকরির সুযোগের বিষয়ে বিস্তরিত তুলে ধরেন। পরে প্রশ্নোত্তর পর্বের মাধ্যমে সেমিনারটি সমাপ্ত হয়। সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, পরিচালকসহ বিভাগ ও ইনসিস্টটিউটের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়