প্রকাশিত : ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১০:৩৯ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কাশফুলের শুভ্রতায় সেজেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছয়বাড়িয়া, দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়

ইয়াছিন মিয়াঃ

শরতের মৃদু মন্দ বাতাসে দোলায় উন্মাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কাশফুল, আর সেই অপরূপ দৃশ্যের সাক্ষী হতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুনিয়াউট এলাকার ছয়বাড়িয়ায় ভিড় করছেন হাজারো প্রকৃতিপ্রেমী। দিগন্তজোড়া কাশফুলের শুভ্রতা যেন পুরো এলাকাকে ঢেকে দিয়েছে সাদা চাদরে। এই মনোমুগ্ধ সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন অসংখ্য মানুষ, কেউ আসছেন পরিবার-পরিজন নিয়ে, কেউবা বন্ধু-বান্ধবদের সাথে। চারপাশে শুধু কাশফুলেরই সমারোহ, যা ক্যামেরায় বন্দি করছেন আগত দর্শনার্থীরা।
কাশফুলের বৈজ্ঞানিক নাম Saccharum spontaneum। এর আদি নিবাস রোমানিয়া হলেও বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলেই এই ফুল দেখতে পাওয়া যায়। সাধারণত নদীর ধার, জলাভূমি, চরাঞ্চল বা পরিত্যক্ত স্থানে এর গাছ জন্মায়। কাশফুলের গাছটির পাতাগুলো চিরল এবং এর দু’পাশ খুবই ধারালো। পালকের মতো নরম ও ধবধবে সাদা ফুলগুলো শরতের স্নিগ্ধ বাতাসে দুলে এক অসাধারণ দৃশ্য তৈরি করে।

কাশবনের এই অপরূপ সৌন্দর্য  দেখে মুগ্ধ হয়ে এক কলেজছাত্রী জানান, “শহরের কোলাহল থেকে দূরে এমন নির্মল পরিবেশে এসে সত্যিই মন ভরে গেল। কাশফুলের সৌন্দর্য ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। মনে হচ্ছে প্রকৃতির খুব কাছাকাছি এসে সময় কাটাচ্ছি।”
আরেকজন নারী দর্শনার্থী জানান, "মেয়েদের আসলে কাশবন অনেক প্রিয় একটি জায়গা তারা রংবে রঙের শাড়ি পরে আসে এবং ছবি তোলে"

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রতি বছর শরৎ এলেই এই এলাকায় কাশফুল ফোটে এবং মাস জুড়ে  এর সৌন্দর্য বিদ্যমান থাকে। তাদের মতে, পরিকল্পিত উদ্যোগ নিলে ছয়বাড়িয়ার এই কাশবন দেশের অন্যতম একটি আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে। যদি এখানে দর্শনার্থীদের জন্য কিছু সুযোগ-সুবিধা  করা যায়, তাহলে এটি শুধু স্থানীয় পর্যটনই নয়, অর্থনৈতিক উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
তবে আনন্দের এই মুহূর্তে কিছু অভিযোগও তুলে ধরেছেন স্থানীয়রা। কাশবনের পাশেই অবস্থিত একটি সরকারি মডেল মসজিদ। তারা জানান, অনেক দর্শনার্থী মসজিদের পবিত্রতা সম্পর্কে অসচেতন। অনেকে মসজিদের ভেতরে ও তার আশপাশে দাঁড়িয়ে ছবি তোলেন, ভিডিও করেন এবং টিকটক বানান। এতে মসজিদের পবিত্রতা ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে।
স্থানীয়রা মনে করেন, প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করার অধিকার সবারই আছে, কিন্তু একই সাথে ধর্মীয় স্থানের মর্যাদা রক্ষা করাও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ছয়বাড়িয়ার কাশফুল যেমন শরতের আগমনী বার্তা নিয়ে আসছে, তেমনি এটি স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে যে প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সহাবস্থান এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ কতটা জরুরি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়