হাফিজুর রহমান:

দেশের রাজনৈতিক  পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে ইতোমধ্যেই আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠন ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবুও সংগঠনের কিছু প্রভাবশালী নেতাকর্মী এখনও বিভিন্নভাবে সক্রিয় থেকে নাশকতা ও ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর অন্যতম উদাহরণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী এবং এফ রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তাহমিদ তাজওয়ার নিলয়।

 তাহমিদ তাজওয়ার নিলয় চারুকলা বিভাগের সাবেক প্রচার সম্পাদক ছিলেন। ছাত্রলীগের নিষিদ্ধ ঘোষণার পরও তিনি সংগঠনের ছত্রছায়ায় থেকে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। গত জুলাই-আগস্ট মাসে যখন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন দেশজুড়ে বিস্তার লাভ করেছিল, তখন তাহমিদ নিলয়ের ভূমিকা ছিল সরাসরি নেতিবাচক।

 তিনি আন্দোলন ভাঙতে এবং শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন বলে অভিযোগ। এতে ছাত্র আন্দোলনের অগ্রযাত্রা বাধাগ্রস্ত হলেও শিক্ষার্থীরা ঐক্যবদ্ধ থেকে আন্দোলন চালিয়ে যায়। গত পহেলা বৈশাখের আগে চারুকলা অনুষদের ভেতরে মঙ্গল শোভাযাত্রার উপকরণ তৈরির সময় একটি রহস্যজনক অগ্নিকাণ্ড ঘটে। অভিযোগ রয়েছে, এই অগ্নিকাণ্ডে সরাসরি জড়িত ছিলেন তাহমিদ তাজওয়ার নিলয়। সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ঐতিহ্যবাহী এই শোভাযাত্রাকে ভেস্তে দেওয়ার মাধ্যমে তিনি শিক্ষাঙ্গনে আতঙ্ক ও বিশৃঙ্খলা ছড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সাংস্কৃতিক মহলে এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বর্তমানে তাহমিদ তাজওয়ার নিলয় বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপনে থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিরোধী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন। গোপন বৈঠক, উস্কানিমূলক প্রচারণা এবং নাশকতার পরিকল্পনায় তার সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ নিয়ে শিক্ষার্থী মহলে আলোচনা চলছে। 

অনেকেই মনে করছেন, নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের দোসর হিসেবেই তিনি এসব কার্যকলাপে লিপ্ত। শিক্ষার্থী সমাজ, বিশ্লেষক এবং সাধারণ মানুষ মনে করছেন, এ ধরনের ব্যক্তি মুক্তভাবে ঘুরে বেড়ালে দেশের স্থিতিশীলতা ও শিক্ষাঙ্গনের শান্তি বিঘ্নিত হবে। তাই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে—তাহমিদ তাজওয়ার নিলয়কে দ্রুত গ্রেপ্তার করে কঠোর আইনের আওতায় আনা হোক।

বর্তমানে সমাজে স্পষ্ট একটি বার্তা উঠে এসেছে: নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও তার দোসরদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না। তাহমিদ তাজওয়ার নিলয়ের মতো ব্যক্তি যেন শিক্ষাঙ্গন বা রাজনীতির নামে অরাজকতা সৃষ্টি করতে না পারে, সেটাই এখন সময়ের দাবি।