
মিলন শেখ :
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, “ভারত পায়ে পারা দিয়ে, গায়ে ধাক্কা দিয়ে পুশ-ইনের মাধ্যমে দেশের ভেতরে সমস্যা তৈরি করতে চাইছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অগ্রাহ্য করে এ ধরনের কর্মকাণ্ড চালিয়ে গেলে তার দায়ভার তাদেরই নিতে হবে।” তিনি আরও বলেন,
"অনেক অত্যাচার, অবিচার, গুম-খুন সহ্য করেছি। এখন আমাদের সামনে অনেক কাজ—নির্বাচন আছে, আন্দোলন আছে। দেশের বিরুদ্ধে সবসময়ই ষড়যন্ত্র চলে, কেউই তার বাইরে নয়।"শনিবার (১৪ জুন) গাজীপুর সদর উপজেলার ভবানীপুর মুক্তিযোদ্ধা কলেজ মাঠে গাজীপুর জেলা বিএনপির আয়োজনে সদস্য ফরম বিতরণ ও নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
রিজভী বলেন, "ড. মুহাম্মদ ইউনুস অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হয়েছেন বিএনপির দীর্ঘ ১৬ বছরের রক্তাক্ত আন্দোলনের ফসল হিসেবে। তিনি অত্যন্ত সম্মানীয় ব্যক্তি। তারেক রহমান ও ড. ইউনুসের লন্ডন বৈঠক নিয়ে অনেকেই জ্বলে উঠেছেন, মেনে নিতে পারছেন না। কেন এত জ্বালা?" তিনি আরও বলেন, "রমজান, ঈদ ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান বাদ দিয়ে নির্বাচনের সঠিক সময় হতে পারে ফেব্রুয়ারির প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহ। লন্ডনের বৈঠকে এ নিয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে।"
জামায়াতকে ইঙ্গিত করে রিজভী বলেন, "আপনারা নিরপেক্ষতার কথা বলেন, অথচ ইতিহাস বলে আপনারাই বারবার জনগণের সাথে বেইমানি করেছেন—৭১ সালে বিরোধিতা করেছেন, ৮৬ সালে আওয়ামী লীগের সাথে নির্বাচন করেছেন, পরে আবার মাফ করে দেবার কথা বলেছেন।"
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, "এই হাসিনা গণতন্ত্র ধ্বংস করেছেন, নির্বাচন কমিশনকে দলীয়করণ করেছেন। অথচ কেউ কেউ এখন আওয়ামী লীগকে মাফ করার কথা বলেন।"
অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সামাদ আজাদ বলেন, "নতুন প্রজন্ম গত ১৫ বছর ভোট দিতে পারেনি। তাদের রাজনৈতিক মত প্রকাশের সুযোগ দিতে সদস্য ফরম বিতরণ করা হচ্ছে।"
গাজীপুর জেলা বিএনপির আহবায়ক ফজলুল হক মিলন বলেন, "বর্তমান সরকার আমাদের আন্দোলনের ফসল। তাই তাদের প্রতি আমাদের একটি রাজনৈতিক আমানত রয়েছে। সেই আমানতের বিশ্বাস যেন কেউ খেয়ানত না করে, সেদিকে সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে।"
তিনি আরও জানান, গাজীপুরের চারটি সাংগঠনিক ইউনিটে দেড় থেকে দুই লাখ নতুন সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হুমায়ুন কবির খান বলেন, "সদস্য সংগ্রহের সময় অগ্রাধিকার পাবে তারা যারা আগের আন্দোলনগুলোতে সক্রিয় ছিলেন। আওয়ামী দোসর কিংবা হাইব্রিড যেন ফরম না পায়।" দলের নেতারা বলেন, সদস্য নবায়নের পাশাপাশি নতুন সদস্য সংগ্রহের মাধ্যমে তরুণ, ফ্যাসিস্ট বিরোধী ও ক্লিন ইমেজধারী নাগরিকদের দলে অন্তর্ভুক্ত করাই এ কর্মসূচির উদ্দেশ্য।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফজলুল হক মিলন এবং সঞ্চালনায় ছিলেন যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ্ রিয়াজুল হান্নান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হুমায়ুন কবির খান, শামীমুর রহমান শামীম, অধ্যাপক ডা. এস এম রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, হাসান উদ্দিন সরকার, উমর ফারুক সাফিন, মজিবুর রহমান, আবু তাহের মুসুল্লী ও আবু বকর সিদ্দিক প্রমুখ।