মাসুম বিল্লাহঃ
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিল, তা বাতিল করেছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। আজ রোববার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এই রায় দেয়।
এর ফলে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া জামায়াতের নিবন্ধন আবারও বৈধ বলে বিবেচিত হবে—এমনটাই জানাচ্ছেন দলটির আইনজীবীরা।
তবে দলটির ‘দাঁড়িপাল্লা’ প্রতীক এখনই নিশ্চিত নয়। এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর জামায়াতে ইসলামীর সাময়িক নিবন্ধন দেয় ইসি। কিন্তু পরের বছরই জামায়াতের বিরুদ্ধে রিট করে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, জাকের পার্টি ও সম্মিলিত ইসলামী জোটের নেতারা। তাদের দাবি ছিল, জামায়াতের গঠনতন্ত্র সংবিধানবিরোধী এবং দলটির নিবন্ধন অবৈধ।
এই রিটের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ২০১৩ সালের ১ আগস্ট রায় দিয়ে বলেছিল—নিবন্ধন দেওয়া নির্বাচন কমিশনের আইনগত ক্ষমতার বাইরে। সেই রায়ের বিরুদ্ধেই জামায়াত আপিল করে।
বছরের পর বছর ধরে নানা কারণে মামলার শুনানি পিছিয়েছে। একবার জামায়াতের পক্ষে কেউ আদালতে উপস্থিত না থাকায় মামলাটিও খারিজ হয়ে যায়। পরে আবার তা পুনরুজ্জীবিত হয়।
সবশেষে, চলতি বছরের ১৪ মে আপিল শুনানি শেষ হয় এবং আজ ১ জুন রায় ঘোষণা করা হলো।
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে আওয়ামী লীগ সরকার টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় আসে। তবে এরপর কোটা সংস্কার আন্দোলন, ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ এবং ৫ আগস্ট সরকার পতনের ঘটনা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে নতুন মোড় দেয়।
সরকার পতনের পর জামায়াতের ওপর থাকা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়া হয় এবং দলটি তাদের নিবন্ধনের বৈধতা ফেরাতে ফের আদালতের দ্বারস্থ হয়।
আজকের রায়ের মাধ্যমে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর জামায়াতে ইসলামী আবারও রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে আইনগত বাধা থেকে মুক্ত হলো। এখন সবাই তাকিয়ে আছে—নিবন্ধন ফেরানোর পর তারা মাঠে কেমন কার্যক্রম চালায় এবং নির্বাচন কমিশন প্রতীক নিয়ে কী সিদ্ধান্ত দেয়।