মাইদুল হক মিকুঃ
যুদ্ধবিরতি চুক্তি সত্ত্বেও দখলদার বাহিনীর ধারাবাহিক বিমান হামলায় শতাধিক মানুষের মৃত্যুতে গাজা উপত্যকায় উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করেছে। এই পরিস্থিতির জন্য ইসরায়েলকেই দায়ী করেছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে হামাস জানিয়েছে, ইসরায়েল গাজায় ‘নতুন বাস্তবতা’ চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে, যা তারা কখনোই মেনে নেবে না।
বিবৃতিতে বলা হয়, “হামাস নিশ্চিত করছে, এই বিপজ্জনক উত্তেজনা বৃদ্ধির জন্য—এর ক্ষেত্র ও রাজনৈতিক পরিণতির জন্য, এবং ট্রাম্পের পরিকল্পনা ও যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে নাশকতার চেষ্টার জন্য ইসরায়েল সম্পূর্ণ দায়ী।”
দখলদার বাহিনীর প্রাণঘাতী হামলার পরও হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রতি পূর্ণ সমর্থনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে এবং মধ্যস্থতাকারীদের ইসরায়েলের ওপর অবিলম্বে চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছে যেন ফিলিস্তিনিদের ওপর “গণহত্যা বন্ধ হয়।”
এর আগে, মঙ্গলবার রাতে গাজা উপত্যকাজুড়ে ইসরায়েলি ভয়াবহ হামলায় ১০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়। এটি ট্রাম্পের ২০-দফা পরিকল্পনার অধীনে ১০ অক্টোবর কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির স্পষ্ট লঙ্ঘন।
ইসরায়েল দাবি করেছে, রাফায় তাদের বাহিনীর ওপর হামলার জবাবে এই অভিযান চালানো হয়েছে। তবে হামাস এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে।
বর্তমানে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা ৬৭ হাজার ছাড়িয়েছে, আর আহতের সংখ্যা ১ লাখ ৭০ হাজারেরও বেশি। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অনেকেই এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন।
চলতি বছরের শুরুতেও একবার যুদ্ধবিরতি ভেঙে ইসরায়েল গাজায় পৃথক খাদ্য ও সাহায্য বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেছিল, যার পর থেকেই অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ প্রকট আকার ধারণ করে।
ইসরায়েলি বাহিনী একাধিক খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে জড়ো হওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলিও চালায়, এতে শত শত মানুষ নিহত হয় এবং ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে আরও বহু শিশুর মৃত্যু ঘটে।
গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
এছাড়া ইসরায়েল বর্তমানে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (ICJ) গাজায় গণহত্যার মামলার মুখোমুখি।