
মাইদুল হক মিকুঃ
পাঁচ দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় দরপতনের মুখে পড়েছে মার্কিন ডলার। নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বাণিজ্য অংশীদার দেশগুলোর মুদ্রার বিপরীতে ডলারের মান ১০ শতাংশেরও বেশি কমে গেছে, যা ১৯৭৩ সালের পর সর্বনিম্ন।
১৯৭৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র যখন স্বর্ণমান থেকে বেরিয়ে আসে, তখনও ডলারের বড় পতন ঘটে। সেসময় দেশটি প্রায় ১৮০ বছর ধরে চালু থাকা স্বর্ণনির্ভর মুদ্রানীতি থেকে সরে দাঁড়ায়। এই পরিবর্তন বৈশ্বিক অর্থনীতিতে মার্কিন ডলারের আধিপত্য তৈরি করলেও, বর্তমান পরিস্থিতি একেবারেই ভিন্ন।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পতনের অন্যতম কারণ ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগ্রাসী শুল্কনীতি ও বৈদেশিক নীতিতে আমূল পরিবর্তন। ট্রাম্প প্রশাসনের বাণিজ্যনীতির কারণে বৈশ্বিক বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। একইসঙ্গে উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বাড়তে থাকা সরকারি ঋণ ও দীর্ঘমেয়াদি সুদের প্রভাব ডলারের ওপর চাপ বাড়িয়েছে।
ডলারের মান কমে যাওয়ার অর্থ হলো, আমেরিকানদের বিদেশ ভ্রমণ খরচ বাড়বে, আবার বিদেশিদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ আকর্ষণহীন হয়ে পড়বে। এমন এক সময়ে এই সংকট দেখা দিয়েছে, যখন দেশটি আরও বেশি ঋণ নিতে চাচ্ছে।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের জি১০ মুদ্রা গবেষণার প্রধান স্টিভ ইংল্যান্ডার বলেন, ‘‘ডলার শক্তিশালী না দুর্বল, সেটাই আসল প্রশ্ন নয়। আসল প্রশ্ন হলো, বিশ্ব যুক্তরাষ্ট্রের নীতিকে কীভাবে দেখছে।’’
ট্রাম্পের প্রথম দফা বিজয়ের পর ডলার কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী থাকলেও, ব্যবসাবান্ধব নীতির প্রতিশ্রুতি বাস্তবে রূপ না নেওয়ায় বিনিয়োগকারীদের আস্থা দ্রুত কমে যায়। ফলে জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকেই ডলার সূচকে পতন শুরু হয়।
এই দীর্ঘমেয়াদি পতন ডলারের আধিপত্য নিয়ে ভবিষ্যতে নতুন প্রশ্নের জন্ম দিতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।