কে এম সুজনঃ
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে টানা ৮ দিন মাঠে রাখার পরিকল্পনা করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সোমবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত প্রাক-প্রস্তুতিমূলক আইনশৃঙ্খলা বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ইসি সচিব আখতার আহমেদ।
তিনি বলেন, “ইসির পক্ষ থেকে ৫ দিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রাখার প্রস্তাব ছিল। তবে বৈঠকে ৮ দিন রাখার প্রস্তাব এসেছে। বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
সচিব আরও জানান, ভোটের আগে তিন দিন, ভোটের দিন ও ভোটের পরে নিরাপত্তায় থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এবারের নির্বাচন রোজার আগে, অর্থাৎ ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে এবং ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি।
বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে চার নির্বাচন কমিশনার, স্বরাষ্ট্র সচিব, ইসি সচিব এবং বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
আখতার আহমেদ বলেন, “বৈঠকে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা, ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা, নির্বাচন কার্যালয়ের সুরক্ষা ও নির্বাচনী এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার কর্মপরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এছাড়া সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা, অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) অপব্যবহার রোধ এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া তথ্য প্রচার বন্ধে কৌশল নির্ধারণ করা হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, নির্বাচনী প্রচারণায় ড্রোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তবে প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবহার করতে পারবে। এছাড়া পুলিশের সদস্যরা বডিওর্ন ক্যামেরা ব্যবহার করবেন। নির্বাচনে দেড় লাখ পুলিশ এবং আনসারসহ প্রায় ছয় লাখ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। সেনাবাহিনীও “ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার” হিসেবে মোতায়েন থাকবে, যার সংখ্যা প্রায় এক লাখ।
ইসি সচিব বলেন, “ভোটের পরিবেশ নিয়ে কারও মধ্যে উদ্বেগ দেখিনি, শঙ্কা নেই। নিরাপত্তা পরিকল্পনার অনেক বিষয় বাজেটের ওপর নির্ভর করবে, বরাদ্দ পাওয়ার পরই তা নির্ধারিত হবে।”
উল্লেখ্য, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ৮ দিনের জন্য মাঠে ছিল, এবং একাদশ নির্বাচনে ১০ দিন মোতায়েন ছিল।
বৈঠকটি সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলে।