
মাসুম বিল্লাহঃ
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) শুরু করেছে প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ। ধারণা করা হচ্ছে, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই হতে পারে জাতীয় নির্বাচন। সেই অনুযায়ী দলটি এবার মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে কঠোর মানদণ্ড নির্ধারণ করেছে।
বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, তিনটি মূল যোগ্যতার ভিত্তিতে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মূল্যায়ন করা হবে। যাদের মধ্যে এই তিনটি গুণ সবচেয়ে বেশি থাকবে, তারা মনোনয়নের দৌড়ে অগ্রাধিকার পাবেন।
? ১. ত্যাগ ও আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ
যেসব নেতাকর্মী দীর্ঘ সময় ধরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন, নিপীড়নের শিকার হয়েছেন, জেল-জুলুম সহ্য করেছেন—তাদের ত্যাগকে প্রাধান্য দেওয়া হবে।
? ২. ব্যক্তিগত সততা ও সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা
যেসব প্রার্থী ব্যক্তিজীবনে সৎ এবং এলাকায় "ভালো মানুষ" হিসেবে পরিচিত, তাদেরই গুরুত্ব দেওয়া হবে। সমাজে যাদের ভাবমূর্তি ইতিবাচক, তারাই মনোনয়ন পাবেন।
? ৩. জনপ্রিয়তা ও ভোট পাওয়ার সম্ভাবনা
নির্বাচনি এলাকায় যিনি বেশি জনপ্রিয়, জনসাধারণের মাঝে যিনি গ্রহণযোগ্য, এবং যিনি ভোট পাওয়ার ক্ষেত্রে বেশি সম্ভাবনাময়—তাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
এর পাশাপাশি ২০০১, ২০০৮ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশ নেওয়া পুরনো প্রার্থীদের বর্তমান অবস্থান বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। দলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন জরিপ ও গোয়েন্দা রিপোর্টের তথ্যও বিবেচনায় আনা হচ্ছে।
বিএনপি তরুণ ও উদ্যমী প্রার্থীদের বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে চায়। তবে নবীন ও প্রবীণের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করার কথা জানিয়েছে দলটি। জোটগত রাজনীতির অংশ হিসেবে কিছু আসন মিত্র দলগুলোকে ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ ও মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ এ বিষয়ে স্পষ্ট করে বলেছেন, যিনি ত্যাগী, সৎ এবং জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য—তিনিই মনোনয়ন পাবেন। জনপ্রিয়তাহীন বা বিতর্কিত কেউ মনোনয়ন পাবেন না।
এবার বিএনপির সিদ্ধান্ত এক আসনে এক প্রার্থী। ২০১৮ সালের মতো একাধিক মনোনয়ন দেওয়া হবে না বলেও জানিয়েছেন সালাহউদ্দিন আহমদ।
এদিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি জানিয়েছেন, "বিএনপি সবসময় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক, ত্যাগ ও আনুগত্যের ভিত্তিতেই প্রার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে।"