মো: আকরাম হোসেন
ক্যাম্পাস প্রতিনিধি | ঢাকা | ১২ অক্টোবর ২০২৫
ঢাকা কলেজের প্রায় ২৮.৪ শতাংশ শিক্ষার্থী জীবনে অন্তত একবার আত্মহত্যার চিন্তা করেছেন বা নিজেকে আঘাত করেছেন - এমন উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে ঢাকা কলেজ সাইকোলজি সোসাইটি কর্তৃক পরিচালিত এক পাইলট রিসার্চে।
গত ১০ সেপ্টেম্বর, বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে পরিচালিত এই জরিপে দেখা যায়, কলেজের মোট শিক্ষার্থীদের প্রায় ৮৮ শতাংশ হতাশায় ভুগছেন। এর মধ্যে ৪২ শতাংশ শিক্ষার্থী উচ্চ মাত্রার হতাশায়, ৪৬ শতাংশ মাঝারি মাত্রার হতাশায়, এবং মাত্র ১২ শতাংশ শিক্ষার্থী তুলনামূলকভাবে কম হতাশায় রয়েছেন।
গবেষক টিম বলেন,
“ঢাকা কলেজে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা ও কাউন্সেলিং সেন্টার না থাকায় অনেক শিক্ষার্থী নীরবে হতাশায় ভুগছেন। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতার অভাবও পরিস্থিতিকে আরও জটিল করছে।”
রিসার্চ টিমের সদস্যরা জানান, এটি একটি পাইলট স্টাডি মাত্র। বৃহত্তর ডাটা নিয়ে গবেষণা করা গেলে সমস্যার মূল কারণ ও প্রভাব আরও স্পষ্টভাবে নির্ণয় করা সম্ভব হবে। তবে এজন্য কলেজ প্রশাসনের সহায়তা ও পর্যাপ্ত বাজেট প্রয়োজন।
তাদের মতে,
“যদি কলেজ প্রশাসন মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা এবং কাউন্সেলিং সুবিধা নিয়ে উদ্যোগ নেয়, তাহলে কয়েক বছরের মধ্যেই পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন সম্ভব।”
বর্তমানে ঢাকা কলেজে কোনো মানসিক স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র বা কাউন্সেলিং রুম নেই। ফলে হতাশা, উদ্বেগ ও মানসিক চাপসহ বিভিন্ন সমস্যায় থাকা শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনীয় সহায়তা পাচ্ছেন না।
ঢাকা কলেজ সাইকোলজি সোসাইটি জানিয়েছে, তারা প্রায়ই এমন অনেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে যোগাযোগ পান যাদের কাউন্সেলিং প্রয়োজন। কিন্তু কলেজে কোনো ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট না থাকায়, সঠিকভাবে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয় না।
সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা এসব শিক্ষার্থীকে সাইকোলজি বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর নাজমুন ম্যাম ও সিনিয়র শিক্ষার্থীদের কাছে রেফার করে থাকেন। যদি কলেজে একটি আলাদা কাউন্সেলিং রুম স্থাপন করা হয়, তবে শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে আরও নিরাপদ ও স্বস্তিতে সেবা নিতে পারবেন। পাশাপাশি সাইকোলজি বিভাগের শিক্ষার্থীরাও সরাসরি প্র্যাকটিক্যাল অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ পাবেন।