মোঃ রিপন হাওলাদার:
টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে ওয়ারিশ সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিরোধের জেরে মামার পরিকল্পণায় বোন জামাইয়ের হাতে এক যুবক খুন হয়েছেন। রহস্যজনক এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পিবিআই টাঙ্গাইল জেলার তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য উদ্ঘাটিত হয়েছে।
পিবিআই সূত্রে জানা যায়, গত ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখ সকালে ধনবাড়ী থানার নাথেরপাড়ার জনৈক মামুন মিয়ার জমির ঝোপের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় স্থানীয়রা রফিকুল ইসলাম (৩০)-এর মৃতদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিহতের মা ছাহেরা বেওয়া (৫৮) বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে ধনবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-০১, তারিখ-০৩/০২/২০২২, ধারা-১৪৩/৩৪১/৩০২/১১৪ দণ্ডবিধি)।
প্রাথমিকভাবে ধনবাড়ী থানা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করলেও পরবর্তীতে পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে তদন্তভার পিবিআই টাঙ্গাইল জেলা-কে অর্পণ করা হয়। মামলাটি তদন্ত করছেন এসআই (নিঃ) মো. আলমগীর কবির।
তদন্তের একপর্যায়ে পিবিআই জানতে পারে যে, এজাহারনামীয় কোনো আসামি ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত নয়। পরবর্তীতে ১২ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ রাতে ধনবাড়ীর নাথেরপাড়া এলাকা থেকে সন্দেহভাজন আসামি মকবুল (৫৫)-কে গ্রেফতার করা হয়। পরে আদালতে হাজির করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।
জবানবন্দিতে মকবুল জানান, ওয়ারিশের সম্পত্তি ও গরু চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভিকটিম রফিকুলের সঙ্গে তার মামা ও মামাতো ভাইদের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এছাড়া জমি দখল ও ঘর ভাঙা নিয়ে রফিকুলের সঙ্গে তার বোন জামাই মকবুল ও হাফিজুরেরও বিরোধ ছিল।
ঘটনার কয়েকদিন আগে রফিকুলের মামা রেহানের বাড়িতে এক গোপন বৈঠকে মকবুল, হাফিজুর, রেহান, জলিল, সেকান্দার ও আলম মিলে রফিকুলকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন রফিকুলের মামাতো ভাই আলম একটি চাপাতি ধানের জালায় লুকিয়ে রাখে। পরে মাদক সেবনের প্রলোভন দেখিয়ে রফিকুলকে ওই স্থানে ডেকে নেয়া হয়।
সেখানে পৌঁছামাত্রই লুকিয়ে থাকা মকবুল, হাফিজুর, রেহান, জলিল ও সেকান্দার লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে। একপর্যায়ে আলম চাপাতি দিয়ে রফিকুলের মাথা ও মুখে আঘাত করে তাকে হত্যা করে। পরবর্তীতে লাশ স্থানীয় মামুন গংদের বিরোধপূর্ণ জমিতে ফেলে পালিয়ে যায়।
পিবিআই জানায়, ঘটনায় জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে এবং মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।