এনামুল হক আরিফ
ব্যুরো চিফ ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় পুলিশের অভিযানে বিপুল পরিমাণ চোরাচালানকৃত ভারতীয় বিড়ি উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার (১৩ অক্টোবর ২০২৫) বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে বিজয়নগর থানা ও আউলিয়া বাজার তদন্ত কেন্দ্রের সমন্বিত অভিযানে এ বিড়ি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
বিজয়নগর থানার আওতাধীন আউলিয়া বাজার এলাকায় মাদক ও চোরাচালানবিরোধী বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে একটি চৌকস পুলিশ টিম। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে যে, জনৈক মঞ্জু মিয়ার মালিকানাধীন একতলা ভবনের নিচ তলার উত্তর-পূর্ব দিকের মাঝখানের দোকানঘরে ভারতীয় বিড়ির একটি বড় চালান মজুদ করে রাখা হয়েছে।
অভিযানকালে পুলিশ দোকান ঘরে তল্লাশি চালিয়ে ২৬,৫০০ (ছাব্বিশ হাজার পাঁচশত) পিস ভারতীয় বিড়ি উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত বিড়িগুলো চোরাচালানের মাধ্যমে অবৈধভাবে বাংলাদেশে আনা হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে জড়িত আসামিরা কৌশলে পালিয়ে যায়।উদ্ধার করা বিড়িগুলো উপস্থিত স্থানীয় সাক্ষীদের সম্মুখে বিধি মোতাবেক জব্দ তালিকা মূলে জব্দ করা হয়েছে।
এই ঘটনায় বিজয়নগর থানায় নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, পলাতক আসামিদের দ্রুত চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বিজয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বলেন,
“চোরাচালানের মাধ্যমে আনা এসব পণ্য রাষ্ট্রের জন্য আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি সমাজে অবৈধ ব্যবসা বাড়ায়। এসব অপরাধের সঙ্গে জড়িত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।”
আউলিয়া বাজার তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জও বলেন,“তথ্য পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা অভিযান পরিচালনা করি। জড়িতদের গ্রেফতারের জন্য একাধিক স্থানে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।”ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় এই অঞ্চলে ভারতীয় বিড়ি, সিগারেট, চিনি, পেঁয়াজ ও অন্যান্য ভোগ্যপণ্যের চোরাচালানের প্রবণতা দীর্ঘদিন ধরেই একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে বিজয়নগর, আখাউড়া ও কসবা সীমান্ত ঘেঁষা এলাকাগুলো চোরাচালানকারীদের কাছে সংবেদনশীল পয়েন্ট হিসেবে পরিচিত।জেলা পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর এখন পর্যন্ত বিজয়নগর এলাকা থেকে কয়েক লাখ পিস ভারতীয় বিড়ি ও অন্যান্য চোরাচালানকৃত পণ্য উদ্ধার করা হয়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ জনগণ পুলিশের এ সফল অভিযানে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা জানান, সম্প্রতি ভারতীয় বিড়ির অবৈধ বিক্রি এলাকায় বৃদ্ধি পাচ্ছিল, যা স্থানীয় বাজার ও রাজস্ব ব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছিল। এ ধরনের অভিযান আরও জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
চোরাচালানের বিরুদ্ধে বিজয়নগর থানা ও আউলিয়া বাজার তদন্ত কেন্দ্রের সমন্বিত অভিযান প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখছে। পুলিশের দৃঢ় অবস্থান ও আইনগত পদক্ষেপের ফলে সীমান্ত এলাকা থেকে অবৈধ পণ্য পাচার রোধে ইতিবাচক অগ্রগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।