প্রকাশিত : ০৯ অক্টোবর, ২০২৫, ০১:৪৫ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মামলার আসামী শিক্ষক  মহম্মদপুরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থেকেও নিচ্ছেন বেতন।

স্টাফ রিপোর্টারঃ

মাগুরার মহম্মদপুরের রাজাপুর ইউনিয়নের রাজপাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক মামলার আসামি হয়ে দিনেরপর দিন অনুপস্থিত থেকেও প্রধান শিক্ষককে ম্যানেজ করে গোপনে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে নিয়মিত বেতন তুলে নিচ্ছেন  মোঃ হেদায়েতুল্লাহ তালুকদার নামের একজন সহকারী শিক্ষক।

জানা যায়,  স্থানীয়  গ্রাম্য সংঘর্ষের জেরে প্রতিপক্ষের করা একটি ফৌজধারী  মামলার গুরুত্বপূর্ণ আসামী হয়েছেন রাজপাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের  সহকারী শিক্ষক মোঃ হেদায়েতুল্লাহ তালুকদার । দীর্ঘ ৪ মাস বিদ্যালয়ে উপস্থিত না হয়েও তিনি প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির ক্ষমতার জোরে নিয়মিত বেতন-ভাতা তুলে নিচ্ছেন ও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে আসছেন । অভিযুক্ত ওই  শিক্ষক বিদ্যালয়ে উপস্থিত না হলেও  প্রধান শিক্ষক গোপনে হাজিরা খাতা পাঠিয়ে দিয়ে ওই খাতায় তার  স্বাক্ষর করিয়ে নেন।
সরেজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক মোঃ হেদায়েত উল্লাহ তালূকদার উপস্থিত নেই, এমনকি বিদ্যালয়ে আসেননি। তবু ও  হাজিরা খাতায় তার স্বাক্ষর করা রয়েছে। বিদ্যালয়ের উপস্থিত ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে কথা বললে তারা জানায়, দীর্ঘ ৪ মাস যাবৎ হেদায়েত স্যার বিদ্যালয়ে আসেন না। যার কারণে আমাদের লেখাপড়াও পিছিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া  বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের অনুপস্থিত থাকার কারনে প্রায়ই বিদ্যালয় নির্ধারিত সময়ের আগেই ছুটি দিয়ে দেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এমনটিই জানান বেশ কয়েকজন স্থানীয় লোকজন।
সহকারী প্রধান শিক্ষক অনিমেষ কুমার দাস বলেন, হেদায়েত স্যার মামলা পরবর্তী সময়ে কয়েকদিন গোপনে বিদ্যালয়ে এসেছেন। তবে কোনও ক্লাস নেননি। অভিযুক্ত শিক্ষক কখন বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন? এমন প্রশ্নে উক্ত শিক্ষক বলেন, আসার কোনও নিয়ম নেই। বিদ্যালয় চলাকালিন যে কোনও সময়ে তিনি উপস্থিত হয়ে খাতায় স্বাক্ষর করে হেড স্যারের সাথে কথা বলে আবার চলে যান। তবে তিনি কোনও ক্লাস নেননা।
বিদ্যালয়ে উপস্থিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক বলেন, হেড স্যার তাকে গোপনে ডেকে  স্বাক্ষর করান এমনকি খাতা ওই শিক্ষকের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েও স্বাক্ষর করান। তবে একজন প্রধান শিক্ষক হয়ে  কিভাবে স্বাক্ষর করান সেটা আমার জানা নেই।

এবিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক হেদায়েত উল্লাহ তালুকদারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে, তিনি পলাতক থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যাইনি।

প্রধান শিক্ষক তুষার কান্তি বলেন, সহকারী  শিক্ষক হেদায়েত তালুকদার বিদ্যালয়ে মাঝে মাঝে এসে হাজিরা দিয়ে যান। একটু সমস্য হইছে। এজন্য তাকে  সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়ে থাকে। এছাড়া তিনি অসুস্থতার  কথা বলে আবেদন করে ছুটি নেন। মামলার আসামীকে কতদিন ছুটি দিতে পারবেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, যতদিন ইচ্ছা ছুটি নিতেও পারে এবং আমি দিতেও পারবো। 

মহম্মদপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী শফিউল আলম  (অঃ দাঃ) বলেন, যদি অভিযোগ সঠিক হয় তাহলে প্রধান শিক্ষক এসকল কাজ বিধি মোতাবেক করছেন না। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত আকারে উপস্থাপন করা হবে।

মাগুরা জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ আলমগীর হোসেন বলেন, বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থেকে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করার বিষয়টি সত্য হলে এবং বিদ্যালয়ের নিয়মকানুন না মানলে অবশ্যই তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়