মো: রিপন হাওলাদার:
নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানার সালেহনগর বারইপাড়া এলাকায় হোসিয়ারি শ্রমিক আলমগীর হোসেন (৫২) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিনজন আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), নারায়ণগঞ্জ জেলা। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে একজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
পিবিআই সূত্র জানায়, নিহত আলমগীর হোসেন ও তার ছেলে মুন্নার নিকট থেকে অভিযুক্ত জুয়েল নামের এক ব্যক্তি বেশ কিছু টাকা ধার নেয়। ওই টাকা লেনদেন সংক্রান্ত বিরোধের জেরে গত ৩ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটের দিকে আসামি পারভেজের গ্যারেজে একটি সালিশ বৈঠক বসে। কিন্তু ভিকটিম আলমগীর বৈঠকে না গেলে, রাত ৭টার দিকে এজাহারনামীয় আসামিরা আলমগীর ও তার ছেলেকে জোরপূর্বক বাসা থেকে ধরে গ্যারেজে নিয়ে যায়।
সেখানে ঝগড়ার এক পর্যায়ে সালিশে উপস্থিত লোকজন ও ভিকটিমের ছেলে চলে গেলে, আসামিরা আলমগীরকে গ্যারেজের এক পাশে টেনে নিয়ে হাতুড়ি ও এসএস পাইপ দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। এতে তার মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক জখম হয়। গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ৪ অক্টোবর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
ঘটনার পর নিহতের বোন কল্পনা বেগম বাদী হয়ে ৫ অক্টোবর বন্দর থানায় এজাহারনামীয় ১৯ জন ও অজ্ঞাত ৬/৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা (নং-০৭, তারিখ ০৫/১০/২০২৫ খ্রি.) দায়ের করেন। মামলাটি পিবিআই নারায়ণগঞ্জ জেলা ৬ অক্টোবর স্ব-উদ্যোগে অধিগ্রহণ করে তদন্ত শুরু করে।
পিবিআই-এর দ্রুত অভিযানে মূল পরিকল্পনাকারী আসামি মো. জুয়েল মিয়া (৩৬)-কে ঢাকাস্থ সদরঘাট এলাকা থেকে এবং তার সহযোগী মীর আকিব ইবনে রাতুল (৩০) ও আমজাদ হোসেন আনজু (৩২)-কে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। পরবর্তীতে আসামি আকিব ইবনে রাতুল আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। জবানবন্দিতে তিনি জানান, আসামি জুয়েলের পরিকল্পনা ও নির্দেশে তিনি নিজে এবং আরও ৬ জন এজাহারনামীয় আসামি মিলে হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত করেন।
অপর দুই আসামি জুয়েল ও আনজুর বিরুদ্ধে আদালত এক দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। এ ঘটনায় পলাতক অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই (নি:) জাহিদ হোসেন রায়হান, বিপি: ৯৩২০২২৭৭৬৮ জানান, “ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকি আসামিদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।”