
তাহের তারেক
চুয়াডাঙ্গা জেলার আলম ডাঙ্গা উপজেলার নুর মোহাম্মদ মেমোরিয়াল প্রাইভেট ক্লিনিকে সিভিল সার্জনের বিরুদ্ধে ভুল অপারেশনে রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
গত ১২/৬/২৫ ইং তারিখ শুক্রবার আলমডাঙ্গা উপজেলার নুর মোহাম্মদ মেমোরিয়াল প্রাইভেট ক্লিনিকে শিল্পী খাতুন নামে এক মহিলার গলস্টং (পিত্তথলি) অপারেশন করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা সিভিল সার্জন হাদি জিয়া উদ্দিন আহমেদ।
শিল্পী খাতুনের স্বামীর নাম হাবিবর রহমান ও পিতা মৃত মজিবুর রহমান,বাসা শঙ্খদিয়া ইবি কুষ্টিয়া।
অপারেশনের কিছু ক্ষন পর রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক জনক হলে রোগীকে রাজশাহী মেডিকেলে রেফার্ড করেন সিভিল সার্জন হাদি জিয়া উদ্দিন আহমেদ।
এবং আজ ১৪/৬/২৫ ইং তারিখ রাজশাহী মেডিকেলে রোগীর মৃত্যু হয়।
রোগীর স্বজনদের সাথে কথা বললে তারা বলেন রোগীর ভুল অপারেশনের কারণে মৃত্যু হয়েছে।
এবং আমাদেরকে সিভিল সার্জন হাদি জিয়া উদ্দিন আহমেদ বলেন যা হবার হয়ে গেছে আপনারা এ নিয়ে আর ঝামেলা করেন এটা একটা ইনফেকশনের কারণে মৃত্যু হয়েছে এসব ভুলে যান যে যাবার সে তো চলেই গেছে।
এব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা জেলার সিভিল সার্জন হাদি জিয়া উদ্দিন আহমেদের সাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন এটা একটা ইনফেকশনের কারণে মৃত্যু হয়েছে আমি ব্যস্ত আছি পরে কথা হবে হবে বলে ফোন রেখে দেন তাই এর চেয়ে বেশি জানা সম্ভব হয়নি।
এদিকে বেলা গড়িয়ে যায়।
এনিয়ে আলমডাঙ্গা উপজেলায় সাধারণ মানুষের ভিতরে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। তবে এই ক্ষেত্রে কোন প্রতিকার পাওয়ার আশা নেই। কারন হিসাবে বিগত দিনে যখন কোন দুর্ঘটনার জন্ম দিয়েছে তার পরপরই পদোন্নতি পেয়েছে। অনেকের ধারণায় এবারও কি সামনে পদোন্নতি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়ে গেল। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিধি মোতাবেক সিভিল সার্জন পদে পদায়নের বিধান না থাকলেও অদৃশ্য শক্তির কারণে দাপটের সহিত বাহলে আছে চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন,
থেমে নেই তার আধিপত্যের কোন কর্মকাণ্ড। ঘটনাটি ঘটছে চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ডাঃ হাদী জিয়া উদ্দিন আহমেদের ক্ষেত্রে।
চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলাধীন এলাকাতে বর্তমান সিভিল সার্জন ডাঃ হাদী জিয়াউদ্দিন আহমেদের বিধি বহির্ভূত পদায়নের ক্ষেত্রে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আইনগত ভূমিকা নেয়ার ক্ষেত্রে রহস্যজনক ও উদাসীনতার অভিযোগ পাওয়া যায়।
বর্তমান সিভিল সার্জন হিসেবে কর্মরত আছেন নিজ জেলা চুয়াডাঙ্গাতে ডাঃ হাদী জিয়াউদ্দিন আহমেদ। এই বিষয়ে বিধি না থাকায় গত ২৭/০৪/২৫ তাং এ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের হয় ও তারএ পুর্বে গত ২০/০৩/২৫ তাং এ স্বাস্থ্য সচিব বরাবর অভিযোগ থাকলে দীর্ঘ কালক্ষেপনের অজানা এবং রহস্যজনক ভূমিকা পাওয়া যায় বর্তমান সিভিল সার্জন ডাঃ হাদী জিয়াউদ্দিনের বিরুদ্ধে।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, স্বাস্হ্য বিভাগের নীতিমালা ২০১৬ এর সিভিল সার্জন পদায়নের ক্ষেত্রে নিজ জেলা পরিহারের বিধান স্পষ্টত উল্লেখ থাকলেও তা বর্তমান সিভিল সার্জন ডাঃ হাদী জিয়া উদ্দিন আহমেদের ক্ষেত্রে উপেক্ষিত হচ্ছে বলে জানা যায়। তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, সিভিল সার্জন চুয়াডাঙ্গা জেলারই একজন বাসিন্দা। ডাঃ হাদী জিয়াউদ্দিন আহমেদ আলমডাঙ্গা থানাধীন উদয়পুর গ্রামের মৃতঃ আহমেদ আলীর সন্তান। বর্তমান স্টেশন পাড়া আলমডাঙ্গার নিজ বাড়িতে বসবাস করেন। তার স্ত্রী ডাঃ শারমিন আক্তার আলমডাঙ্গা থানাধীন যাদবপুর গ্রামের মৃতঃ আবু সাঈদের কন্যা। বর্তমান আলমডাঙ্গা স্বাস্হ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্হ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা হিসাবে কর্মরত আছেন। এক্ষেত্রে প্রকৃত বিধি মোতাবেগ সিভিল সার্জন নিজ জেলাতে বহাল থাকার কোন বিধান না থাকলেও বর্তমান সিভিল সাধনের ক্ষেত্রে আইনে কোন প্রভাব ফেলছে না বলে জানা যায়। বিধি বহিরভূত ও বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন টেলিভিশন ও একাধিক জাতীয় প্রিন্ট মিডিয়াতে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলো কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে না।
নিজ জেলাতে তিনার ডক্টরস কেয়ার নামে একটি প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার আছে। গত২০২২ সালে আলমডাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা থাকা অবস্থায় দালাল মাধ্যমে নিজ ক্লিনিকে রোগী ভাগিয়ে নেওয়া ও বিভিন্ন অনিয়ম বিষয়ে তিনার বিরুদ্ধে যমুনা টেলিভিশনের একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এছাড়া দ্যা নিউজ টোয়িন্টিফোর ডটকমে ২০২৪ সালে ৯ ই মার্চ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক থাকা অবস্থায় স্বাস্থ্য সেবা পার-২ শাখার যুগ্ম সচিব মন্জুরুল হাফিজ স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে ওএসডি করা হয়। সেই প্রতিবেদনেও অবৈধ হাসপাতাল পরিচালনার অভিযোগ উঠে। ডক্টরস কেয়ার এন্ড স্পেসালাইস্ট হসপিটালটি ডাক্তার দম্পতি পরিচালনা করেন। ডাঃ হাদী জিয়াউদ্দিন আহমেদ আলমডাঙ্গা স্বাস্হ্য কমপ্লেক্সে উপজেলা স্বাস্হ্য ও পঃ পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে গত ৯/৯/২৪ তারিখে প্রথম প্রমোশন পেয়ে ম্যাটসে অধ্যক্ষ হিসেবে পদোন্নতি পান।
তার এক মাস পর ৯/১০/২৪ তারিখে সিভিল সার্জন হিসেবে ঝিনাইদহতে পদোন্নয়ন পান। শেষ ২৫/১২/২৪ তারিখে ট্রান্সফার হয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলায় সিভিল সার্জন হিসেবে যোগদান করেন।
ডাঃ হাদী জিয়া উদ্দিন আহমেদ কর্মজীবনে তিনি অত্যন্ত চতুরতার সহিত ক্ষমতাসীন দলের সহিত সখ্যতা রাখেন বলে যায়। তার অন্যতম বাস্তব উদাহরণ হিসেবে বিগত সরকারের শাসনামলেও স্থানীয় সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দার সেলুনের সহিত তার পরিবারসহ ফুলের শুভেচ্ছা বিনিময় এবং নিয়মিত যাতায়াতের বিষয়ে জনমনে প্রশ্ন। অনেকের ধারণা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে তার কর্মস্থল আলমডাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা হিসাবে দাপট ছিল। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে ঠিক পরিবারতন্ত্র হিসাবে নিজে সিভিল সার্জন এবং তিনার স্ত্রী ডাঃ শারমিন আক্তার আলমডাঙ্গা হারদীতে স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা হিসাবে কর্মরত।