তৌহিদ হাসান জেলা প্রতিনিধি
মাদারগঞ্জ (জামালপুর): জামালপুরের মাদারগঞ্জে
নদীতে নিখোঁজ হওয়া পাঁচ শিশুর সবার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। দুর্ঘটনার পর গত তিন দিনের অভিযানে আজ রোববার (২ নভেম্বর) সকালে সর্বশেষ নিখোঁজ শিশু বৈশাখী আক্তার (১১)-এর মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল এবং স্থানীয় লোকজন এই অভিযানে অংশ নেয়। এই মর্মান্তিক ঘটনায় গোটা মাদারগঞ্জ উপজেলায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
গত শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) বিকেল তিনটার দিকে উপজেলার চর ভাটিয়ানী এলাকার ঝিনাই নদীতে এই হৃদয়বিদারক ঘটনাটি ঘটে।
দুর্ঘটনার কারণ: স্থানীয় একজন জানান, সাতার না জানা শিশুরা নৌকা ভাসিয়ে নদীতে খেলছিল। খেলার এক পর্যায়ে আবু হাসান (৮) নৌকা থেকে পানিতে পড়ে যায়। তাকে বাঁচাতে গিয়ে একে একে সবাই পানিতে ডুবে নিখোঁজ হয়।
স্থানীয় আরেকজন জানান, খেলা শেষে শিশুরা নদীতে গোসল করতে গেলে এই দুর্ঘটনা ঘটে। শিশুরা মূলত নদীঘাট থেকে একটু দূরের গ্রামের।
নিহত শিশুরা
নৌকাডুবিতে নিহত পাঁচ শিশুর পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে। তারা হলো:
আবু হাসান (৮) - প্রবাসী দুদু মিয়ার ছেলে।
পলি আক্তার (১২) - প্রবাসী দুদু মিয়ার মেয়ে (আবু হাসানের বোন)।
ছায়েবা আক্তার (১২) - আবু হাসান ও পলির ফুফাতো বোন।
কুলসুম আক্তার (১২) - আজাদের মেয়ে।
বৈশাখী আক্তার (১১) - হোসেন আলীর মেয়ে।
উদ্ধার অভিযান
নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ও স্থানীয়রা উদ্ধার অভিযান শুরু করে।
শুক্রবার সন্ধ্যায়: নিখোজ দিন রাতেই আবু হাসান, ছায়েবা ও পলির মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
শনিবার দুপুরে: উদ্ধার করা হয় নিখোঁজ আরেক শিশু কুলসুমের মরদেহ।
রোববার সকালে: তিন দিনের অভিযানের সমাপ্তি টেনে ঝিনাই নদী থেকে উদ্ধার করা হয় সর্বশেষ নিখোঁজ বৈশাখী আক্তার (১১)-এর নিথর দেহ।
মাদারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ সাইফ বলেন, গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘটনাস্থলে পুলিশ ছিল। একে একে চার শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়। কিন্তু একটি শিশু নিখোঁজ থেকে যায়। আজ সকালে সেই শিশু লাশও ভেসে উঠে। পরে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে বিষয়টি জানায়। পুলিশ যাওয়ার আগেই স্থানীয় লোকজন লাশটি উদ্ধার করে। সব মিলিয়ে পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পুরো ঘটনাটি পুলিশ খতিয়ে দেখছে।