কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : এস এম বাদল
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত ঘেঁষে থাকা কুষ্টিয়ার সীমান্ত জনপদে বিরাজ করছে অভূতপূর্ব শান্তি ও নিরাপত্তা। এক সময় যে এলাকায় চোরাচালান, মাদক ও অনুপ্রবেশ ছিল নিত্যদিনের ঘটনা, সেখানে এখন বিজিবির (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) কঠোর নজরদারি ও দক্ষ নেতৃত্বে ফিরেছে স্থিতিশীলতা ও স্বস্তির পরিবেশ।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে কুষ্টিয়া সীমান্তে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর বা আপত্তিকর ঘটনা ঘটেনি। দেশের সীমান্ত সুরক্ষায় বিজিবি সদস্যরা এখন দিনরাত টহল দিচ্ছেন নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে।
বিজিবির এই সাফল্যের পেছনে রয়েছেন বর্তমান মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, ওএসপি, বিএসপি, এসইউপি, বিজিবিএম, এনডিসি, পিএসসি, এমফিল— যার সাহসিক নেতৃত্ব, দূরদর্শী পরিকল্পনা ও আধুনিক ব্যবস্থাপনায় সীমান্ত নিরাপত্তা কার্যক্রমে এসেছে বিপুল অগ্রগতি।
তার নেতৃত্বে বিজিবি এখন আরও আধুনিক, দক্ষ ও জনবান্ধব বাহিনীতে রূপ নিচ্ছে। সীমান্তে আধুনিক প্রযুক্তি, গোয়েন্দা কার্যক্রম ও জনসম্পৃক্ততার সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে এক শক্তিশালী নিরাপত্তা বলয়। এর ফলে সীমান্ত এলাকায় এখন চাষাবাদ, বাণিজ্য ও জনজীবন নির্বিঘ্নে চলছে।
বিশেষ করে কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার সীমান্তঘেঁষা ধর্মদহ গ্রামে এখন শান্তিপূর্ণভাবে চলছে চাষাবাদ। স্থানীয় ইউপি সদস্য নান্টু মেম্বার বলেন,
“বর্ডারের কোল ঘেঁষে আমাদের জমিতে আমরা নিশ্চিন্তে আবাদ করি। বিজিবির টহল জোরদারের কারণে ভারতীয় বিএসএফ সদস্যরা কোনো রকম সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে না। বিজিবির সহযোগিতায় আমরা এখন নিরাপদে চাষাবাদ করতে পারছি।”
ধর্মদহ গ্রামের কৃষক জবেদ আলী জানান,
“বিজিবির সঠিক নেতৃত্বের কারণেই আমরা এখন শান্তিতে বসবাস করছি। আগের তুলনায় সীমান্তে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর নেই। আমরা বিজিবি মহাপরিচালককে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।”
স্থানীয়দের মতে, বিজিবির দৃঢ় নেতৃত্ব ও সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান-এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে সীমান্তে আজ শান্তি ও আস্থার পরিবেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ২০২৪ সালের ২৩ জুন দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই সেনাবাহিনীর পেশাদারিত্ব, শৃঙ্খলা ও দক্ষতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সমন্বিত কার্যক্রম এখন দেশের জাতীয় নিরাপত্তার অন্যতম স্তম্ভে পরিণত হয়েছে।
সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি বিজিবি জনগণের সহযোগিতায় স্থানীয় উন্নয়ন ও মানবিক কর্মকাণ্ডেও ভূমিকা রাখছে। বিজিবির সদস্যদের নিয়মিত টহল ও দায়িত্বশীল আচরণের ফলে সীমান্তের মানুষ এখন নির্ভয়ে দিন কাটাচ্ছেন, শিশুরা ভয়হীনভাবে স্কুলে যাচ্ছে, কৃষকরা নির্বিঘ্নে মাঠে কাজ করছেন।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন,
“বিজিবির টহল ও দায়িত্বশীল আচরণের কারণে এখন আমরা অনেক নিরাপদে বসবাস করছি। সীমান্তে আগের মতো কোনো উত্তেজনা নেই।”
বিজিবির এই প্রশংসনীয় ভূমিকা শুধু সীমান্ত সুরক্ষায় নয়, বরং দেশের সার্বিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষাতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। সরকারের নীতিগত দিকনির্দেশনা ও সেনাপ্রধানের তত্ত্বাবধানে বিজিবি আজ সীমান্ত জনপদের মানুষের আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়েছে।