এনামুল হক আরিফ
ব্যুরো চিফ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কাউতলী এলাকায় লোকাল বাস চলাচলে চরম অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা ও দায়িত্বহীনতার অভিযোগ উঠেছে। যানবাহনের কাগজপত্র পরীক্ষা করতে গেলেই মালিক সমিতির নেতা-কর্মীদের ‘অর্থনৈতিক তত্ত্বে’ জর্জরিত হতে হয় ট্রাফিক পুলিশের।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শহরের অধিকাংশ লোকাল বাসই লক্করঝক্কর অবস্থা ও মডেল আউট। অনেক বাসের ফিটনেস, ট্যাক্স টোকেন ও ইনস্যুরেন্স মেয়াদোত্তীর্ণ, এমনকি ড্রাইভারের লাইসেন্সও হালনাগাদ নয়। তবুও এসব যানবাহন প্রতিদিন শহরের প্রধান সড়কগুলোয় যাত্রী বহন করছে নির্ভয়ে।ট্রাফিক সার্জেন্টরা যখন এসব বাসের কাগজপত্র পরীক্ষা করতে চান, তখনই মালিক সমিতির নেতাদের একটি দল তেড়ে আসে। তারা গাড়ি উৎপাদন না থাকা, দেশের অর্থনৈতিক সংকট ও মালিকদের দুরবস্থা নিয়ে লম্বা বক্তৃতা শুরু করেন। এই সময়টাতে সুযোগ বুঝে ড্রাইভাররা অনেক সময় গাড়ি নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
একাধিক ট্রাফিক কর্মকর্তা জানান, কাউতলী এলাকায় বাস মালিকদের একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে রেখেছে। ফলে নিয়ম-শৃঙ্খলার আওতায় আনা কঠিন হয়ে পড়েছে।
একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,“আমরা যখন কাগজ চাই, তখন গাড়ির বৈধতা নয়, বরং দেশের অর্থনীতি ও ‘গরিব দেশ’-এর গল্প শুনতে হয়। এই ফাঁকে গাড়ি চলে যায়, আর আমরা শুনে যাই লেকচার!”এই পরিস্থিতিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন কাউতলীতে দাঁড়ানো প্রতিটি বাসের কাগজপত্র পরীক্ষা করতে হবে।কাগজে ত্রুটি বা অনিয়ম ধরা পড়লে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।এসপি’র নির্দেশনায় ইতোমধ্যে ট্রাফিক বিভাগ মাঠে নেমেছে। নিয়মিত অভিযানে বেশ কয়েকটি বাসের কাগজপত্র পরীক্ষা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।ব্রাহ্মণবাড়িয়া ট্রাফিক বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন,“নিরাপদ সড়ক ও শৃঙ্খল ট্রাফিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য। কোনো অবৈধ বা অনিয়মিত যানবাহনকে ছাড় দেওয়া হবে না।”স্থানীয় সচেতন মহলের অভিমত, প্রশাসনের এ ধরনের উদ্যোগ চলমান থাকলে শহরের লোকাল বাস চলাচলে শৃঙ্খলা ফিরবে এবং যাত্রীসেবা অনেকাংশে উন্নত হবে।