প্রকাশিত : ২৮ অক্টোবর, ২০২৫, ০৮:১৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অভিযোগের পর বদলি: ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার দুই এসআই সরাইল ও নবীনগরে

এনামুল হক আরিফ

ব্যুরো চিফ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার দুই উপপরিদর্শক (এসআই) মো. রফিকুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর আলমকে অবশেষে বদলি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডব-সংক্রান্ত মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ আদায়সহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছিল।
গত বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে জারি করা এক অফিস আদেশে এসআই রফিকুল ইসলামকে সরাইল থানা ও এসআই জাহাঙ্গীর আলমকে নবীনগর থানায় বদলি করা হয়।
জানা গেছে, ২০২১ সালে হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবের ঘটনার পর দায়ের করা একাধিক মামলায় নিরপরাধ ব্যক্তিদের ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগে দুই এসআইয়ের নাম উঠে আসে। স্থানীয় ব্যবসায়ী, ছাত্র ও রাজনৈতিক কর্মীদের মধ্যে কেউ কেউ মৌখিকভাবে এবং কেউ লিখিতভাবে এসব অভিযোগ পুলিশ প্রশাসনের কাছে দাখিল করেন।এ বিষয়ে সদর মডেল থানার একাধিক কর্মকর্তা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, অভিযুক্ত দুই এসআইয়ের আচরণ ও কর্মকাণ্ড নিয়ে অভ্যন্তরীণভাবে বেশ কিছুদিন ধরে আলোচনা চলছিল। জেলা পুলিশের একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি তাদের বিরুদ্ধে প্রাথমিক অনুসন্ধানও শুরু করে।জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ সুপারের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) ওবায়দুর রহমান এর  নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি ইতোমধ্যে প্রাথমিক সাক্ষ্যগ্রহণ ও অভিযোগপত্র বিশ্লেষণ করেছে। সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী, ভুক্তভোগী এবং থানার কয়েকজন কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণও সম্পন্ন হয়েছে।তদন্ত কমিটির এক সদস্য জানান, “অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে প্রতিবেদন শিগগিরই পুলিশ সুপারের কাছে দাখিল করা হবে।”
জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. এহতেশামুল হক  বলেন,
“ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সবসময় জবাবদিহিমূলক প্রশাসন পরিচালনায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যেকোনো অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। এসআই রফিকুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে কিছু অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্তের স্বার্থে ও প্রশাসনিক প্রয়োজনে তাদের বদলি করা হয়েছে।”তিনি আরও বলেন,
“তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর যদি অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হয়, তবে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অভিযুক্ত এসআই রফিকুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর আলম উভয়েই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,“আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কিছু মহল আমাদের বদনাম করার জন্য অপপ্রচার চালাচ্ছে।”এদিকে স্থানীয় সচেতন মহল পুলিশের এ পদক্ষেপকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। তারা বলছেন,
“জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে এবং পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল রাখতে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা প্রশংসনীয় উদ্যোগ।”

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়