মোঃ ফেরদৌস হোসেন উপজেলা প্রতিনিধি বদলগাছী, নওগাঁ।তাং-২৭-১০-২০২৫ ইং।
নওগাঁর বদলগাছীতে আঃলীগ নেতার স্ত্রীর বিরুদ্ধে শিক্ষক নিবন্ধনের জাল সনদ ব্যবহার করে দীর্ঘদিন থেকে শিক্ষকতা করার অভিযোগ উঠেছে । এনটিআরসিএ (বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ) এর প্রতিবেদনে ওই শিক্ষিকার সনদটি জাল বলে প্রমাণিত হয়েছে। এ বিষয়টি জানাজানি হলে তিনি চাকুরি থেকে গোপনে ইস্তফা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
অভিযুক্ত শিক্ষিকা ফাতেমা বেগম উপজেলার কোলা বিজলী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। তিনি বিগত ফ্যাসিস্ট আঃলীগ সরকারের বদলগাছী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু খালেদ বুলু'র স্ত্রী। তিনি ২০০৬ সালের বাংলা বিষয়ে ২য় শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার রোল নম্বর ২১০১০১১৭ এর সনদ ব্যবহার করে চাকরি নেন। তবে এনটিআরসিএর সংরক্ষিত ফলাফলের সঙ্গে যাচাই করে দেখা যায়, ওই রোল নম্বরের কোনো রেকর্ড পাওয়া যায়নি। ফলে সনদটি জাল বলে নিশ্চিত করে কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রের মাধ্যমে জানা যায়, ২০০৮ সালে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আবু খালেদ বুলুর ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে ফাতেমা বেগম তখন ওই জাল সনদে চাকরি নেন। পরবর্তীতে ২০২০ সালে তিনি উচ্চতর স্কেলও গ্রহণ করেন। প্রায় ৩০ লাখ টাকার বেশি সরকারি অর্থ তিনি বেতন ও ভাতা তুলেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এনটিআরসিএ গত ১৩ অক্টোবর/২৫ ইং জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে পাঠানো প্রতিবেদনে জানা যায়, ফাতেমা বেগমের দাখিল করা প্রত্যয়নপত্রটি “জাল ও ভুয়া”। প্রতিবেদনে বলা হয়, তিনি জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন এবং তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। এর পরপরই ১৮ অক্টোবর/২৫ ইং তারিখে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পার্থ কুমারের সহায়তায় ফাতেমা বেগম চাকরি থেকে ইস্তফা দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি তার জন্য একটি ভুয়া মেডিকেল সার্টিফিকেটও প্রস্তুত করা হয় এবং বর্তমানে ফাতেমা বেগম আত্মগোপনে।
বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি অলি বলেন, “সে ইস্তফা দিয়েছে কিনা, আমি জানি না।”
অন্যদিকে, অভিযুক্ত ফাতেমা বেগম বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি এবং ফোনের সংযোগ কেটে দেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) পার্থ কুমার মন্তব্য এড়িয়ে যান।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, “আমি এখনো অফিসিয়ালি প্রতিবেদন হাতে পাইনি। পেলে নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয় সচেতন মহলের মধ্যে এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তারা অভিযুক্ত শিক্ষিকার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ এবং সরকারি অর্থ ফেরতের দাবি জানিয়েছেন।