জলাশ পাহান
নওগাঁর পোরশা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় প্রতিরাতেই ঘটছে ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনা। প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপের অভাবে ডাকাতদের দৌরাত্ম্য যেন দিন দিন আরও বেড়েই চলেছে। সড়কে গাছ ফেলে যানবাহনের পথরোধ, অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে যাত্রী ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সর্বস্ব লুট—এমন দৃশ্য এখন পোরশার নিত্যদিনের চিত্রে পরিণত হয়েছে। বাজারের দোকানের তালা ভেঙে মালামাল লুট, রাতের বেলা ব্যবসায়ীদের পথরোধ করে টাকা-মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়া—সব মিলিয়ে চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে এলাকার সাধারণ মানুষ, পথচারী ও ব্যবসায়ীরা।
সর্বশেষ বুধবার গভীর রাতে উপজেলার সারাইগাছী-আড্ডা আঞ্চলিক মহাসড়কের মোশানতলা মোড় থেকে বন্ধুপাড়া মোড় পর্যন্ত সাত কিলোমিটারের মধ্যে তিনটি স্থানে ডাকাতরা গাছ ফেলে অবরোধ সৃষ্টি করে একাধিক যানবাহনে ডাকাতি চালায়। একই রাতে বেজোড়া মোড়ে তিন নাইট গার্ডকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ১৮টি দোকানের সব মালামাল লুট করে নেয় তারা। এর আগে রোববার সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত এক ঘণ্টা ধরে মোশানতলা মোড়ে গাছ ফেলে পথরোধ করে যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা, স্বর্ণালংকার ও মোবাইলসহ সবকিছু লুট করে নেয় ডাকাতরা। প্রতিবাদে অনেককে মারধর করে গুরুতর আহত করে প্রায় ২০ জনকে, যারা বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই মোশানতলা মোড়ে ডাকাতদের তাণ্ডব চললেও থানা পুলিশের তৎপরতা নেই বললেই চলে। ডাকাতি চলাকালীন সময়ে পুলিশ থাকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে সারাইগাছী বাজারে—ঘটনা শেষে এসে ‘তদন্তের নাটক’ শুরু করে। ফলে হতাশ ও ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী এখন কার্যকর প্রশাসনিক উদ্যোগের দাবি জানাচ্ছেন। গত সপ্তাহেই তাঁতিপাড়া বাজারের মুদিখানা ব্যবসায়ী আলমঙ্গীর হোসেন অস্ত্রের মুখে জিম্মি হয়ে ৪২ হাজার টাকা খোয়ান, যা এই এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ভয়াবহ চিত্র ফুটিয়ে তোলে।