প্রকাশিত : ০৮ আগস্ট, ২০২৫, ০২:১৪ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মানসিক ভারসাম্যহীন  বৃদ্ধার সম্পত্তি দখল, জোরপূর্বক দলিল, অপহরণ ও নির্যাতনের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

মুকুল হোসেন 

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার অ্যাডভোকেট মোঃ আব্দুল হামিদ (৮০) মানসিক ভারসাম্যহীন ও অসুস্থ অবস্থায় অনিচ্ছায় জোরপূর্বক সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্যে দলিল তৈরি, অপহরণ ও শারীরিক-মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে তারই মেয়েদের বিরুদ্ধে।
 বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) বেলা ১২টার দিকে সিরাজগঞ্জ শহরের কালিবাড়ী  নিজ বাসভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে - এসব অভিযোগ তুলে ধরেন ভুক্তভোগীর পুত্র টি.এম. নুর এজাজ।
লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, সিরাজগঞ্জ পৌরশহরের  কালীবাড়ী মোড় থেকে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা রাতে অপরিচিত  চারজন ব্যক্তি নিজেদের ‘ডিবি পুলিশ’ পরিচয় দিয়ে তাকে জোরপূর্বক একটি গাড়িতে তুলে নেয়। পরে জানা যায়, তারা একটি বেসরকারি রিহ্যাব সেন্টারের ভাড়া করা লোক, যাদের পেছনে ছিলেন- তার আপন বোনেরা এবং তাদের সহযোগী সোহাগ নামের এক ব্যক্তি। পরে তাকে জোরপূর্বক ‘রেনেসাঁ রিহ্যাব সেন্টারে’ আটক রেখে ‘মাদকাসক্ত’ হিসেবে মিথ্যাচার চালানো হয়।
নুর এজাজ জানান, ওই রেনেসাঁ রিহ্যাব  সেন্টারে তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। একই সময়ে সোহাগ নামের  স্ত্রী মেহেজাবিন মৌ এবং আমার ২ কন্যা শিশুসন্তান কে সিরাজগঞ্জ থেকে কলাকৌশলে জোরপূর্বক  ঢাকা নিয়ে গিয়ে বড় বোনের বাসায় অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে এক আত্মীয়ের চল্লিশা অনুষ্ঠানের সুযোগে আমার স্ত্রী ২ শিশুকন্যা পালিয়ে আসেন। আমার স্ত্রী আমাকে  মুক্ত করার চেষ্টা করেন। দীর্ঘ দুই মাস আটকের পর   গত১৫মে-২০২৫ খ্রিঃ  আমার  আত্মীয়-স্বজনের সহায়তায় মোটা  রিহ্যাব অংকের টাকার মাধ্যমে আমাকে সেখান থেকে  মুক্ত করা হয়। 
 এই সব পরিকল্পিত ভাবে সাজানো ঘটনা  ঘটিয়ে এই সুযোগে আমার   পিতার  প্রায় ৬ বিঘা  জমি পিতাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে কলাকৌশলে   দলিল তৈরি করে আত্মসাৎ করেছেন আমার বোনেরা। জমিগুলোর দলিল নম্বর ১২২৮ (২৩.০৩.২০২৫), ১৯৮০ (২৩.০৩.২০২৫) ও ১৯৮১ (২৪.০৩.২০২৫)। এসব জমির বাজার মূল্য প্রায় দুই কোটি টাকা । নুর এজাজ বলেন, আমার পিতাকে কে  ভুল বুঝিয়ে জোর করে   স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে, যা  ভিডিও চিত্র  প্রমাণ রয়েছে।
এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করতে গেলে- আমার বোনদের নিয়োগকৃত এক উকিল সহ অন্যারা বাধা দেয় এবং আমাকে ভয় দেখায় এবং   কোর্টে গিয়ে   মামলা করিস এই বলে পরামর্শ দেয় এবং আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে সরিয়ে নিয়ে আসে।  তবে কোর্টে মামলা করতে গেলে আবারও ওই উকিল  সিরাজগঞ্জ আইনজীবী সমিতি নিয়ে যায় তারা  আলোচনার মাধ্যমে মিমাংসা করার আশ্বাস দেন। পরে দুই দফা নোটিশ দিলেও অভিযুক্তরা হাজির হয়নি বরং তদবিরের মাধ্যমে অভিযোগ প্রত্যাহারের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। 
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, এ ঘটনায় মূলহোতা সোহাগ ও তার পরিবার বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নুর এজাজের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে এবং তাকে র‌্যাব দিয়ে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। এ সংক্রান্ত প্রমাণ, মেসেঞ্জারের বার্তা ও অডিও রেকর্ড তার কাছে রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে টি.এম. নুর এজাজ এ ঘটনায় অপহরণ, অবৈধ আটক, নির্যাতন এবং জমি আত্মসাতের বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। পাশাপাশি তার বাবার সম্পত্তি রক্ষায় অবৈধ দলিল বাতিল করার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান তিনি।
এসময় আরটিভি ও বাংলাদেশ বেতারের জেলা প্রতিনিধি সাজিরুল ইসলাম সঞ্চয়, দীপ্ত টিভি ও খবরের কাগজ পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি সিরাজুল ইসলাম শিশির, দৈনিক  সকালের সময় জেলা প্রতিনিধি ও স্থানীয় দৈনিক   জয়সাগর পত্রিকার সিনিয়র  স্টাফ রিপোর্টার আজিজুর রহমান মুন্না, বিজনেস মিরোর ও আলোকিত সকাল পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি নজরুল ইসলাম, দৈনিক অগ্রসর ও বাংলাদেশ গার্ডিয়ান পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি আশরাফুল ইসলাম জয়, দৈনিক চিত্র পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি হোসেন আলী ছোট্র, দৈনিক অধিকরণ ও দি ট্রিব্যুনাল পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি মাসুদ রানা, দৈনিক জনবানী ও আজকের সিরাজগঞ্জ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার সোহান সেখ, ক্রাইম তালাশের শাহ আলম, দৈনিক আমার বাঙলা ও বিজনেস বাংলাদেশ পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি মাহবুব চৌধুরী সহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার গণ্যমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়