প্রকাশিত : ০৩ জুলাই, ২০২৫, ০৯:৫৮ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নোয়াখালীতে অপ চিকিৎসায়  মা ও নবজাতকের মৃত্যু, চার চিকিৎসকের সনদ বাতিল

মোঃ রফিকুল ইসলাম 

নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি 
 
চিকিৎসকের অবহেলা,ও ভুল চিকিৎসার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় চার চিকিৎসকের  সনদ সাময়িকভাবে বাতিল করেছে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি)।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ডা. মো. লিয়াকত হোসেনের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। উক্ত বিষয়ে এর আগে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় অবহেলা সংক্রান্ত সংবাদটি গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করা হয়েছিলো।

সনদ সাময়িকভাবে বাতিল হওয়া চার চিকিৎসক হলেন- ডা. ফৌজিয়া ফরিদ, ডা. সাওদা তাসনীম, স্বাস্থ্য সহকারী জাহেদ হাসান ও ডা. মোহাম্মদ আক্তার হোসেন।
 ডা. ফৌজিয়া ফরিদ ও ডা. মোহাম্মদ আক্তার হোসেন তিন বছর এবং ডা. সাওদা তাসনীম এক বছর ও জাহেদ হাসানের ছয় মাসের জন্য রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হয়েছে। উক্ত  সময়ের মধ্যে তারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে চিকিৎসক হিসেবে অথবা নিজেকে মেডিক্যাল চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দিতে পারবেন না। নিষেধাজ্ঞাটি গত (১জুলাই) থেকে কার্যকর হয়েছে।

বিএমডিসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ডা. ফৌজিয়া ফরিদের বিরুদ্ধে চিকিৎসা নিতে আসা প্রসূতি উম্মে সালমা নিশির চিকিৎসায় অভিযোগের দায় প্রমাণিত হওয়ায় বাংলাদেশ মেডিক্যাল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন ২০১০ (৬১ নং আইন) এর ধারা ২৩(১) এবং বাংলাদেশ মেডিক্যাল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল প্রবিধানমালা ২০২২ এর বিধান ৩৬(৪) (খ) অনুযায়ী রেজিস্টার থেকে তার নাম প্রত্যাহারপূর্বক প্রদত্ত রেজিস্ট্রেশন তিন বছরের জন্য বাতিল করা হয়েছে।
একই অভিযোগে রেজিস্টার থেকে ডা. সাওদা তাসনীমের নাম প্রত্যাহারপূর্বক প্রদত্ত রেজিস্ট্রেশন এক বৎসরের জন্য বাতিল করা হয়েছে। স্বাস্থ্য সহকারী জাহেদ হাসানের রেজিস্ট্রেশন ছয় মাসের জন্য বাতিল করা হয়েছে। এই সময় তিনি তার জন্য নির্ধারিত ক্ষেত্রে পেশাগত দায়িত্ব পালন ও চিকিৎসক  পরিচয় দিতে  পারবেন না। এছাড়াও ডা. মোহাম্মদ আক্তার হোসেনের নাম রেজিস্টার থেকে প্রত্যাহার ও রেজিস্ট্রেশন তিন বৎসরের জন্য বাতিল করা হয়েছে।

২০২৩ সালের ১৬ অক্টোবর রাতে নোয়াখালীর সেনবাগ প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক এম এ আউয়াল তার একমাত্র মেয়ে ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা উম্মে সালমা নিশির বাবুর ২৪১ হার্টবিট নিয়ে চিকিৎসার জন্য জেলা সদর মাইজদীতে বেসরকারি সাউথ বাংলা হাসপাতালে আসেন। ওই সময়ে হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আক্তার হোসেন অভি ও তার স্ত্রী ডা. ফৌজিয়া ফরিদ রোগীর কোনো প্রকার  পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে এবং অভিভাবকের সম্মতি না নিয়েই সিজারে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এতে মুহূর্তেই মা ও সন্তানের মৃত্যু হয়। এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে চিকিৎসক ডা. আক্তার হোসেন অভি তার স্ত্রী ফৌজিয়া ফরিদসহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রসূতির অবস্থা সংকটাপন্ন জানিয়ে আইসিইউ সাপোর্টের কথা বলে তাদের কুমিল্লায় পাঠান। পরে প্রসূতিসহ নবজাতকের মৃত্যু ঘটনায় নিশির বাবা সাংবাদিক এম এ আউয়াল বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিক এম এ আউয়াল বলেন, আমার অনুমতি ছাড়া মেয়ের অপারেশন করা হয়েছিলো। এতে করে আমার মেয়ে ও নবজাতককে হত্যা করা হয়। আমি প্রথমে মৌখিক ও পরে ২৩ অক্টোবর  সিভিল সার্জন বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। সব শেষ আমি আদালতে মামলা দায়ের করেছি । হতভাগা বাবা হিসেবে আমার সন্তান ও নাতি হত্যার ন্যায় বিচার চেয়েছিলাম। কিন্তু উক্ত  হাসপাতাল ও অভিযুক্ত চিকিৎসকরা প্রভাবশালী ও বিত্তশালী হওয়ার কারণে আমি নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়েছিলাম। 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়