
সুমন মুন্সি,জেলা প্রতিনিধি ফরিদপুরঃ
ফরিদপুরে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে স্বাস্থ্য সহকারী পদে নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (৩০ জুন) বেলা ১১টার দিকে অনিয়মের অভিযোগ তুলে সিভিল সার্জন কার্যালয় চত্বরে অবস্থান কর্মসূচী পালন করে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ভুক্তভোগী প্রার্থীরা। এ সময় স্বাস্থ্য সহকারি পদে চূড়ান্ত নিয়োগ পাওয়া রাজিব নামে এক প্রার্থী অভিযোগ করে জানান, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ন হওয়ার পর আমাকে চূড়ান্ত নিয়োগ দেওয়ার পরেও যোগদানের সময় আমার নিয়োগ বাতিল করে। ঐ প্রার্থী অভিযোগ করে বলেন, আমাকে চূড়ান্ত ভাবে মনোনিত করার পরেও যোগদানের সময় কর্তৃপক্ষ আমাকে ডেকে নানা ভাবে আমার মেধার প্রশংসা করে এত নিন্মমানের চাকরি করতে অনুৎসাহিত করা সহ চাকরির বিধিমালানুযায়ী যে কোন সময় নিয়োগ বাতিল বা স্থগীত করতে পারে বলে জানান কর্তৃপক্ষ। তবে কি কারনে আমাকে যোগদান করতে দেওয়া হয়নি তার কারনও নিদৃষ্ট করেননি তারা। আরেক জন নূরে জান্নাত সারা নামে এ প্রার্থী জানান, আমি মাচ্চর ইউনিয়নের সাবেক ৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। ওই ওয়ার্ডে আমার সাথে অনেকেই পরীক্ষা দিয়েছিল। রিটেনেও টিকেছে অনেকে। কিন্তু আমাদের কারোই নেওয়া হয়নি। নেওয়া হয়েছে পৌরসভার এক প্রার্থীকে। এ বিষয়েও প্রতিকার চেয়ে নিয়োগের পরপরই আমি সিভিল সার্জন বরাবর অভিযোগ দিলেও তার কোন সুরাহা মেলেনি আজও। এদিকে মাচ্চর ইউনিয়নে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যে প্রার্থীকে নেওয়া হয়েছে তিনি ফরিদপুর পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা ও ঐ ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দা মাসুদ এর পুত্র। এছাড়াও নিয়োগপ্রাপ্ত ঐ প্রার্থীর মা সদর উপজেলার মা”র ইউনিয়নের স্বাস্থ্য সহকারি হিসেবে কর্মরত আছেন। তবে মাসুদ বা তার পুত্র ঐ ওয়ার্ডে কোন সময় বসবাস করেছেন বা করছেন, তা সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বার সহ স্থানীয়রাও চিনেন না বলে জানিয়েছেন তারা। এ ছাড়াও যে নাগরিক সনদ দিয়ে ঐ প্রার্থী চাকরি নিছেন, সেটিও কোথা থেকে এসেছে, তা সংশিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানও নিশ্চিত করতে পারেননি। যদিও এ বিষয়ে মাসুদ ও তার পরিবাবের বক্তব্য জানার জন্য একাধীকবার তাদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা বিষয়টির কোন কর্ণপাত না করে এড়িয়ে গেছেন। এদিকে অবস্থান কর্মসূচিতে আসা ঐ ব্যাক্তিদের দাবী স্বাস্থ্য সহকারী পদে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম হয়েছে। পুনরায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হোক অথবা আমাদের যোগদান করতে দেওয়া হোক। বিষয়টি সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অবস্থান কর্মসূচী চলবে। দ্রত সমাধান না হলে আরো কঠোর আন্দোলনে নামবো আমরা। এ বিষয়ে ফরিদপুরের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ শাহ্ মোহাম্মাদ বদরুদ্দোজা জানান, কয়েকটি ওয়ার্ডের নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। এদিকে মাচ্চর এর বিষয়টি নিয়ে তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি নাগরিক সনদের ভিত্তিতে ঐ প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে বলেন অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে তদন্ত চলছে। প্রসঙ্গত গত বছরের ২৫ মার্চ ৯টি ক্যাটাগরিতে শূন্য পদে ১শ ২৯ জনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়। এর মধ্যে স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে ১শ ৪ জনকে নিয়োগের কথা উল্লেখ করা হয়। বিধি অনুয়ায়ী গত ২৩ মে লিখিত ও ২৬ মে মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ২৯ মে চূড়ান্ত ফলাফলের ঘোষণা করা হয়।