প্রকাশিত : ২৪ জুন, ২০২৫, ০৯:৪৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রত্নগর্ভা মা হাজেরা বেগমকে সোনাইমুড়ী প্রেসক্লাবের হৃদয় নিংড়ানো শ্রদ্ধা

মহিউদ্দিন সুজন - রিপোর্টার নোয়াখালী

কানায় কানায় পূর্ণ সোনাইমুড়ী প্রেসক্লাবে প্রতিটি কোণায় যেন উৎসবের আলোর ঝিকিমিকি, আর বাতাসে ভাসছে এক অনাবিল আনন্দের সুর। তবে এই আনন্দ নিছকই কোনো উৎসবের নয়, এ যেন এক গভীর কৃতজ্ঞতার মহোৎসব। সোনাইমুড়ী প্রেসক্লাবের রজতজয়ন্তী উপলক্ষে এমনই এক হৃদয়স্পর্শী দৃশ্যের অবতারণা হলো। যখন সোনাইমুড়ী উপজেলায়  অঞ্চলের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, রত্নগর্ভা মা হাজেরা বেগমের হাতে তুলে দেওয়া হলো বিশেষ সম্মাননা স্মারক। ডাঃ মোস্তফা হাজেরা ফাউন্ডেশনের স্বপ্নদ্রষ্টা এই মহীয়সী নারীর সম্মাননা গ্রহণ মুহূর্তটি উপস্থিত সকলের চোখে পানি এনে দেয়, এক নীরব ভালোবাসার বাঁধ ভেঙে যায়।
 
হাজেরা বেগম, নিছকই একটি নাম নয়, এ যেন ভালোবাসা, ত্যাগ আর অদম্য জীবনীশক্তির প্রতিচ্ছবি। তিনি শুধু জন্মদাত্রী নন, তিনি ডাক্তার মোস্তফা হাজেরা ফাউন্ডেশন এর   স্বপ্ন পূরণের নীরব কারিগর। তাঁর অনুপ্রেরণা, তাঁর নিরলস ত্যাগ আর দূরদর্শিতার ফলই হলো ডাঃ মোস্তফা হাজেরা ফাউন্ডেশন। এই ফাউন্ডেশন নীরবে নিভৃতে সোনাইমুড়ীর পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার অমূল্য আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে গ্রামের পর গ্রামে। একজন মায়ের স্বপ্ন, কীভাবে হাজারো বঞ্চিত মানুষের জীবনে আশার প্রদীপ জ্বালাতে পারে, হাজেরা বেগম তারই এক উজ্জ্বলতম দৃষ্টান্ত, যা আমাদের হৃদয়ে গভীর শ্রদ্ধাবোধ জাগিয়ে তোলে। তিনি যেন  সোনাইমুড়ী  ও চাটখিল অঞ্চলের জন্য এক প্রেরণার উৎস।

'এক ঝাঁক কলাম সৈনিক'দের হৃদয় নিংড়ানো শ্রদ্ধাঞ্জলি
সোনাইমুড়ী প্রেসক্লাবের 'এক ঝাক কলাম সৈনিক'রা এই সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানকে আরও মহিমান্বিত করে তোলেন। দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে সোনাইমুড়ীর আনাচে-কানাচে ঘটে যাওয়া প্রতিটি ঘটনা, প্রতিটি সুখ-দুঃখের সঙ্গী এই প্রেসক্লাব। তাদের রজতজয়ন্তীর এই বিশেষ দিনে হাজেরা বেগমের মতো একজন রত্নগর্ভা মাকে সম্মান জানানো, সত্যিই এক বিরল ও অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। সাংবাদিকরা সমাজের দর্পণ, আর এই দর্পণে যখন একজন নিবেদিতপ্রাণ, ত্যাগী মায়ের প্রতিচ্ছবি প্রতিফলিত হয়, তখন তা হয়ে ওঠে আরও শক্তিশালী, আরও প্রেরণাদায়ক।

সুধীজন, শিক্ষাবিদ এবং সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সোনাইমুড়ির প্রেসক্লাবের এক ঝাঁক কলম সৈনিক  করতালির মাধ্যমে হাজেরা বেগমের প্রতি তাদের অকুণ্ঠ শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, এই সম্মাননা শুধু হাজেরা বেগমকে নয়, এটি সকল ত্যাগী মাকে, সকল স্বপ্নদ্রষ্টা নারীকে উৎসর্গ করা। তিনি যেন সোনাইমুড়ী  ও চাটখিলের জন্য এক উজ্জ্বল নক্ষত্র।

ডাঃ মোস্তফা হাজেরা ফাউন্ডেশন হাজেরা বেগমের স্বপ্ন এবং তার সুযোগ্য সন্তানদের নিরলস প্রচেষ্টার ফল। এই ফাউন্ডেশন প্রমাণ করে, যদি সদিচ্ছা ও একাগ্রতা থাকে, তবে সমাজের জন্য কত মহৎ কাজ করা সম্ভব। হাজেরা বেগমের মতো মায়েরা যখন তাদের সন্তানদের মধ্যে এমন মহৎ চেতনার বীজ বুনে দেন, তখনই জন্ম নেয় এমন সব প্রতিষ্ঠান, যা মানবকল্যাণে নিবেদিত হয়। এটি সোনাইমুড়ী উপজেলার  জন্য এক গর্বের প্রতীক। এই সম্মাননা স্মারক হাজেরা বেগমের হাতে তুলে দেওয়ার সময় সোনাইমুড়ী প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ আবেগঘন কণ্ঠে বলেন, "আমরা গর্বিত যে এমন একজন মহীয়সী নারীকে সম্মান জানাতে পেরেছি। তাঁর জীবন আমাদের সকলের জন্য এক বড় অনুপ্রেরণা, এক উজ্জ্বল পাথেয়।" এই রজতজয়ন্তী শুধু একটি অনুষ্ঠান ছিল না, এটি ছিল একটি প্রতিজ্ঞা  হাজেরা বেগমের মতো মায়েরা যে আলোর পথ দেখিয়েছেন, সেই পথে, সমাজের কল্যাণে নিরন্তর কাজ করে যাওয়ার প্রতিজ্ঞা। সোনাইমুড়ীর আকাশে আজও সেই মহীয়সী মায়ের আশীর্বাদ আর অনুপ্রেরণার আলো ঝলমল করছে, যা আমাদের পথ দেখায়, আমাদের এগিয়ে চলার সাহস যোগায়। তিনি যেন আমাদের হৃদয়ের গহীনে এক চিরন্তন উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে জ্বলজ্বল করছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়