রোকন বিশ্বাসঃ
নাটোরের লালপুরে প্রায় ১০ কোটি ৬০ লাখ টাকায় সরকারিভাবে ইজারা নেওয়া একটি বৈধ বালু মহালকে কেন্দ্র করে ঈশ্বরদীর সাড়া ঘাট এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। একদিকে বৈধ ব্যবসায়িক কার্যক্রম, অন্যদিকে প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের অনুসারীদের প্রকাশ্য চাঁদাবাজি ও সশস্ত্র মহড়ার কারণে নদীপথ এখন আতঙ্কের নাম হয়ে উঠেছে।
সরেজমিনে ঘুরে ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,মোল্লা ট্রেডার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান চলতি অর্থবছরে নাটোর জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে লালপুর বালু মহালের এক বছরের ইজারা নেয়। কিন্তু বালু পরিবহনের জন্য তাদের নৌযান সাড়া ঘাট অতিক্রম করতে গেলে বাধার সম্মুখীন হয়।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন,বিএনপি নেতাকর্মীদের অনুসারীরা স্পিডবোর্ডে করে প্রকাশ্যে নদীতে মহড়া দিয়ে বালুবাহী নৌকাগুলো থামিয়ে মোটা অঙ্কের চাঁদা নিচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, অস্ত্রধারী কয়েকজন ব্যক্তি স্পিডবোর্ডে করে এসে মাঝিদের ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা দাবি করে। কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের হুমকি দেওয়া হয় এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিতও করা হয়।
নৌকার এক মাঝি বলেন,
“আমরা তো শুধু কাজ করি। সরকারি অনুমতি নিয়ে বালু আনি। এখন স্পিডবোর্ডে লোকজন এসে ভয় দেখায়, বলে টাকা না দিলে নৌকা যাবে না।”
এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, ইতোমধ্যেই বিষয়টি তাদের নজরে এসেছে এবং তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে টহল জোরদার করেছে।
মোল্লা ট্রেডার্স এর কর্ণধার শহিদুল ইসলাম বলেন,
“আমরা সরকারকে প্রায় ১১ কোটি টাকা দিয়ে বৈধভাবে ইজারা নিয়েছি। অথচ কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসী প্রকাশ্যে অস্ত্র দেখিয়ে চাঁদা তুলছে। আমরা আইনের প্রতি আস্থা রাখি, তবে প্রশাসনের কাছ থেকে দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা চাই।”
বর্তমানে সাড়া ঘাট এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। সাধারণ মাঝি ও ব্যবসায়ীরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
স্থানীয় এক ব্যবসায়ী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,
“নিয়ম মেনে ব্যবসা করতে গিয়ে যদি অস্ত্রের মুখোমুখি হতে হয়, তাহলে দেশে ব্যবসার পরিবেশ কোথায়?”
এ পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ প্রশাসনের দ্রুত, কঠোর ও কার্যকর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। পাশাপাশি, চাঁদাবাজ চক্রকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।