তপন কুমার সাহা, সিনিয়র রিপোর্টার।। আসন্ন ঈদুল আজহার ছুটিকে কেন্দ্র করে সবসময়ই পর্যটকদের আনাগোনায় মুখর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় গন্তব্য সিলেটে। ইতোমধ্যে হোটেল, ও রিসোর্টগুলো পর্যটক বুকিংয়ে ব্যস্ত। তবে টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে বাড়তে শুরু করেছে সিলেট অঞ্চলের নদ-নদীর পানি। ফলে পর্যটনশিল্প সংশ্লিষ্টদের মাঝে শঙ্কা দেখা দিয়েছে—বন্যার প্রভাবে ভাটা পড়তে পারে পর্যটকদের আগমনে।
পরিস্থিতি বিবেচনায় গত রোববার সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জনপ্রিয় পর্যটন স্পট সাদাপাথর সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে উপজেলা প্রশাসন। যদিও এখনো খোলা রয়েছে জাফলং, বিছানাকান্দি, রাতারগুলসহ অন্যান্য স্পটগুলো।
তবে পর্যটকদের নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিতে সিলেট জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে বিশেষ উদ্যোগ। অতিরিক্ত ট্যুর গাইড নিয়োগ, স্পটভিত্তিক রোডম্যাপ তৈরি ও ব্যবস্থাপনায় নজরদারি বাড়ানোর কথা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদ। তিনি বলেন, “পর্যটকদের অভিজ্ঞতা যেন ইতিবাচক হয়, সেজন্য আমরা প্রতিটি স্পটেই মনিটরিং জোরদার করেছি।”
সিলেট হোটেল অ্যান্ড গেস্ট হাউস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া জানান, কয়েক বছর ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে পর্যটনখাত ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারের ঈদে দুই থেকে তিন লাখ পর্যটকের আগমন হতে পারে সিলেটে। এতে স্থানীয় পর্যটনশিল্পে ৫ থেকে ১০ কোটি টাকার বাণিজ্যের সম্ভাবনা রয়েছে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এদিকে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, পর্যটন স্পটগুলোর অব্যবস্থাপনা ও নাজুক যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক সময় পর্যটকদের নিরুৎসাহিত করছে। তাই শুধু পর্যটনকেন্দ্রের উন্নয়ন নয়, সড়ক ও যাতায়াত ব্যবস্থারও আধুনিকায়ন চান তারা।
পর্যটকদের মতেও, সিলেটের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অতুলনীয় হলেও নানা অব্যবস্থাপনার কারণে ভ্রমণের স্বাচ্ছন্দ্য বিঘ্নিত হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ঈদের ছুটিতে সিলেট আবারও পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠবে—এমন প্রত্যাশাই এখন ব্যবসায়ী ও স্থানীয়দের।