প্রকাশিত : ৩১ মে, ২০২৫, ১০:৫০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নকলায় সরকারি সহায়তার পণ্য মজুতে বিএনপি নেতা আটক , দলীয় পদ স্থগিত ও সাময়িক বহিষ্কার

জান্নাতুল বাকী শেরপুর জেলা রিপোর্টার : শেরপুরের নকলা উপজেলায় সরকারি সহায়তা কর্মসূচির (ভিজিডি ও টিসিবি) আওতায় বিতরণযোগ্য খাদ্যপণ্য মজুতের অভিযোগে চরঅষ্টধর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান মিয়াকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষায় তাকে প্রাথমিক সদস্যপদসহ সকল পদ থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
৩০ মে (শুক্রবার) রাতে উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে আয়োজিত এক জরুরি সভা শেষে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. খোরশেদুর রহমান এবং সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মাহমুদুল হক দুলালের যৌথ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলীয় ভাবমূর্তি ও শৃঙ্খলা রক্ষার্থে সাময়িক বহিষ্কারের এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অভিযোগের বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে। যদি তিনি আদালতে দোষী প্রমাণিত হন, তবে তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে; অন্যথায় পূর্বের পদে পুনর্বহাল করা হতে পারে।
২৯ মে (বৃহস্পতিবার) রাতে উপজেলার নারায়নখোলা বাজার ও হাজী মোড় এলাকায় উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও নকলা থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে সরকারি সহায়তার বিপুল পরিমাণ খাদ্যপণ্য জব্দ করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ তাকী তাজওয়ার।
অভিযানে নারায়নখোলা বাজারের “নূর ইসলাম মার্কেট”-এর একটি কক্ষ থেকে ৪১ বস্তা ভিজিডির চাল এবং হাজী মোড় এলাকার একটি নির্মাণাধীন ভবন থেকে আরও ৫৫ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়। নারায়নখোলা বাজার থেকে অভিযুক্ত শাহজাহান মিয়াকে আটক করা হয়। অপর জায়গা থেকে কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, অভিযানে মোট ২,৭৩০ কেজি চাল, ১,১৭৮ লিটার সয়াবিন তেল, ১,২০০ কেজি ডাল এবং ৫৪০ কেজি চিনি জব্দ করা হয়েছে। এগুলো ভিজিডি ও টিসিবি কর্মসূচির আওতায় বরাদ্দকৃত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ তাকী তাজওয়ার জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালিত হয়। প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, অভিযুক্ত দীর্ঘদিন ধরে সরকারি সহায়তার খাদ্যপণ্য অবৈধভাবে মজুত ও বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে এটিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় একটি সাহসী উদ্যোগ হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ কেউ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত ও দোষীদের যথাযথ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এ ঘটনা রাজনৈতিক অঙ্গনে সতর্কতা, জবাবদিহিতা এবং জনস্বার্থ রক্ষায় প্রশাসনের দৃঢ় অবস্থানের বার্তা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়