রবিউল ইসলাম সাজু, বগুড়া
মুসলমানদের দুয়ারে কড়া নাড়ছে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। আর কয়দিন পরই কোরবানির ঈদ। এবারের ঈদকে সামনে রেখে বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও জমতে শুরু করেছে কোরবানির পশুর হাট। জেলার ১২ টি উপজেলায় প্রায় একশত স্থায়ী হাটের পাশাপাশি কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে বসবে অনেক অস্থায়ী হাটও। জেলা প্রাণীসম্পদ অফিস সুত্রে জানা যায়, এবার কোরবানির জন্য সাত লাখ ৪৬ হাজার ৮৪২ টি পশু প্রস্তত করা হয়েছে যা চাহিদার চেয়ে ৩৮ হাজার বেশি। জেলার চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত এসব পশু রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন হাটবাজারে বিক্রি করা হবে । জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা বলেন, আমরা খামারগুলো নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছি এবং পশুগুলোকে কাচাঁঘাস, খড় এবং প্রাকৃতিক খাবার খাওয়ানোর পরামর্শের পাশাপাশি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হরমোনজাতীয় এবং ষ্টেরয়েড যেন ব্যবহার না করে সে ব্যাপারে পরামর্শের পাশাপাশি নিয়মিত পর্যবেক্ষনও করছি । কোরবানির জন্য প্রস্তত পশুর মধ্যে ষাঁড় এক লাখ ৯৩ হাজার ৫৯৯ টি, বলদ গরু ৪২ হাজার ৭৪৬ টি,গাভী ৮০ হাজার ৪২৬ টি, মহিষ দুই হাজার ৩০৪ টি,ছাগল তিন লাখ ৮০ হাজার ৬৩২ টি ও ভেড়া ৪৭ হাজার ১৪০ টি। জেলার ১২ টি উপজেলার ৫১ হাজার খামারী সিংহভাগ কোরবানির পশু প্রস্তুত করছেন বলে জানা যায়। ডাকুমারা হাটে আসা ক্রেতা শরিফুল ইসলাম বলেন, এবছর কোরবানির পশুর দাম স্বাভাবিক রয়েছে তবে বড় আকারের গরুর চেয়ে মাঝারী বা ছোট আকারের গরুর দাম একটু বেশী বলে জানান। সেই সাথে গরুর ছাপা খরচ বেশি বলে অভিযোগ করেন। পশুর দাম নিয়ে অসন্তষ্ঠি প্রকাশ করেন জেলার সোনাতলা উপজেলার খামারী নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, তার ২০ টি ষাঁড় পালন করতে যে ব্যয় হয়েছে বর্তমানে যেদাম তাতে তিনি লোকসানের আশংকা প্রকাশ করেছেন। আরেক খামারী সোহরাব হোসেন বলেন, পশু পালন তুলনামূলক লাভজনক হওয়ায় বাণিজ্যিক খামারীদের পাশাপাশি অনেকেই বাড়ীতে পশুপালন করে থাকে যার কারণে ভারত থেকে পশু না আসলেও দাম অনেকটাই নাগালের মধ্যে থাকে। সোনাতলার কানুপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম বলেন, বৈরী আবহাওয়া, দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা , সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা ও ভালো নয় তাছাড়া বিগত বছরগুলোতে যারা বড় বড় কোরবানি দিতো তারা পলাতক থাকায় কোরবানির বাজারে এর একটা নেগেটিভ প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গরুর পাইকাড় কালু জানান,গরুর দাম স্বাভাবিক রয়েছে তবে পশু পরিবহন নিয়ে শংকা প্রকাশ করেন তিনি। তিনি বলেন, পথে পথে চাঁদাবাজি এবং নিরাপদ পশু পরিবহনের নিশ্চয়তা চান ব্যবসায়ীরা। তাই প্রশাসনের সহযোগিতা খুবই প্রয়োজন। ডাকুমারা হাট ইজারাদার বলেন, হাটে পশুর সুস্থতা যাচাইয়ের জন্য প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের ভেটেরিনারি মেডিক্যাল টিম কাজ করছে এবং জাল টাকা পরীক্ষার জন্য একটি টিম কাজ করছে। বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা বলেন, হাটগুলোতে যেকোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এবং পশু পরিবহনের ক্ষেত্রে জোরদার নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে । তিনি আরও বলেন, সড়কের নিরাপত্তায় একাধিক টিম কাজ করবে।