এস এম বাদল, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি:
বর্ষা মৌসুমে চাষযোগ্য সবচেয়ে লাভজনক সবজির একটি হচ্ছে বরবটি। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ইতোমধ্যেই বরবটি চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা। অল্প জমিতে কম খরচে এই ফসল উৎপাদন করে কৃষকরা যেমন লাভবান হচ্ছেন, তেমনি দেশের সবজি সরবরাহ ব্যবস্থাও চাঙ্গা থাকছে।
বরবটি সাধারণত আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে বপন করা হয়। মাটি স্যাঁতসেঁতে ও জলধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন হলে ফসল ভালো হয়। সুনিষ্কাশিত দোআঁশ বা বেলে দোআঁশ মাটি বরবটি চাষের জন্য উপযুক্ত। জমি ভালোভাবে চাষ করে জৈব সার মিশিয়ে বীজ বপন করা হয়।
প্রাথমিকভাবে খুঁটি ও জালের মাধ্যমে গাছকে ছড়িয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হয়।ফসল গাছে ফুল আসার সময় অল্প পরিমাণ ইউরিয়া সার প্রয়োগ করলে ফলন বাড়ে। পোকামাকড় দমনে জৈব কীটনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে। প্রতি শতাংশে গড়ে ১২-১৫ কেজি বরবটি পাওয়া যায়। বাজারে বরবটি বিক্রি হয় ৩০-৫০ টাকা প্রতি কেজি দরে, যা মৌসুম ও এলাকায় ভেদ করে পরিবর্তিত হয়। ভালো পরিচর্যা হলে এক মৌসুমে তিন থেকে চারবার ফসল তোলা যায়। আব্দুল মালেক, এক কৃষক জানান,আমি এক কাঠা জমিতে বরবটি লাগিয়ে মাত্র দেড় মাসেই বিক্রি শুরু করি।
স্থানীয় হাটে প্রতি কেজি ৪০ টাকা দরে বিক্রি করছি। এতে আমার দৈনিক ৫০০ - ৬০০ টাকা আয় হচ্ছে। বরবটিতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং ভিটামিন ‘সি’ থাকে। এটি পুষ্টিকর ও হালকা হজমযোগ্য একটি সবজি, যা শিশু-কিশোরদের জন্যও উপযোগী। বরবটি বর্ষার পানি ও আবহাওয়ায় সহজেই টিকে থাকতে পারে। অন্যান্য অনেক সবজির তুলনায় এটি বর্ষায় রোগ ও পোকার আক্রমণ থেকে নিরাপদ থাকে। বরবটি চাষ একটি লাভজনক উদ্যোগে পরিণত হতে পারে যদি কৃষকরা সময়মতো বীজ বপন করে সঠিক পরিচর্যা করতে পারেন। সরকার ও কৃষি বিভাগের সহায়তা পেলে এই চাষ পদ্ধতি আরও বিস্তৃতভাবে ছড়িয়ে পড়বে এবং দেশের সবজি উৎপাদনে বড় ভূমিকা রাখবে।