
দেলোয়ার হোসেন
রেপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান র্র্যাবের একটি আভিজানিক দল (গত ০২ জুন ২০২৩) তারিখ কুমিল্লার, দেবিদ্বারে ০৭ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ঘটনায় ভিকটিমের মা বাদী হয়ে দেবিদ্বার থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ০১টি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-৫/১৩২, তারিখ ০৬ জুন ২০২৩। ধর্ষণের ঘটনাটি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুরুত্ব সহকারে প্রচারিত হলে দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচিত হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১১ এর যৌথ অভিযানে গত রাতে রাজধানীর মিরপুরে অভিযান পরিচালনা করে ধর্ষক ভন্ডপীর মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন শাহ সুন্নি আল কাদেরী @মাওলানা প্রফেসর মোঃ ইকবাল হোসাইন (৪৫), পিতাঃ মৃত শারফুদ্দিন, দেবিদ্বার, কমিল্লা’কে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত ধর্ষণের ঘটনার সাথে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য প্রদান করে।
গ্রেফতারকৃতকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গত ০২ জুন ২০২৩ তারিখ দুপুর আনুমানিক ১২ ঘটিকায় ভিকটিম গ্রেফতারকৃত ইকবালের বাড়ীর পাশের মাঠে খেলতে গেলে সে ভিকটিমকে লিচু দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তার আস্তানায় ডেকে নিয়ে কৌশলে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে ভিকটিম সেখান থেকে পালিয়ে বাড়ীতে আসলে তার মা তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করেন। গ্রেফতারকৃত ইকবাল এবং তার অনুসারীরা ঘটনাটি ধামাচাঁপা দেয়ার জন্য ভিকটিমের পরিবারকে ভয়ভীতি দেখায়। উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের মা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করলে গ্রেফতারকৃত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেফতার এড়াতে তার নিজ আস্তানা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত ইকবাল কুমিল্লার চান্দিনা এলাকার তথাকথিত একজন পীরের মুরীদ এবং স্বনামধণ্য একটি দরবার শরীফের অনুসারী ও প্রতিনিধি হিসেবে নিজেকে দাবী করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ তার বাড়ীতে একটি আস্তানা গড়ে তোলে। তার ধর্মীয় বিষয়ে কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকায় সে শুদ্ধভাবে আরবি পড়তে পারতো না বিধায় বিভিন্ন ইসলামিক বই পড়ে ও মোবাইলে বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিল শুনে কিছু ধর্মীয় বিষয় মুখস্ত করে সপ্তাহে একদিন তার আস্তানায় জমজমাট আসর বসিয়ে ধর্মীয় বিষয়ে বক্তব্য দিতেন এবং নিজ আস্তানার বাহিরেও বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতেন। তার আস্তানায় আগত লোকজন মাদকসেবনসহ বিভিন্ন অনৈতিক কার্যকলাপ করতো বলে জানা যায়। এছাড়াও সে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের এবং তার আস্তানার বিভিন্ন আইডি ও পেইজ খুলে আস্তানার প্রচার-প্রচারণা করে সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করতো। ইতোপূর্বে সে বেশ কয়েকবার অসামাজিক কার্যক্রমে লিপ্ত হলে স্থানীয় লোকদের নিকট ধৃত হয় এবং পরবর্তীতে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিকট অঙ্গিকারনামা দিয়ে সেখান থেকে ছাড়া পায়। তার অন্ধ ভক্তরা তাকে হাদিয়া স্বরূপ টাকা-পয়সা, স্বর্ণ অলংকার ও গবাদী পশু ইত্যাদি প্রদান করত যা সে নিজের ও নিজের আস্তানার জন্য ব্যয় করতো বলে জানা যায়।