চট্টগ্রাম ব্যুরো– বৈরি আবহাওয়ায় সন্দ্বীপ চট্টগ্রাম (কুমিরা– গুপ্তছড়া) নৌ রুটে তেমন কোন নৌযান চলেনি বৃহস্পতিবার। শুধুমাত্র এমভি আইভি রহমান শীপ এক ট্রিপ চলাচল করে। কুমিরা থেকে সন্দ্বীপে ছেড়ে যাওয়া শীপ প্রায় দুপুর দুইটায় গুপ্তছড়া ঘাটে পৌছায়। এরপর সন্দ্বীপেরগুপ্তছড়া ঘাটে লালবোটে করে যাত্রী নামতে থাকে।
শীপ থেকে যাত্রী নিয়ে লালবোট টি কুলে ভিড়ানোর একটু আগেই যাত্রী নদীতে পড়ে যায়। লালবোটের মাঝি দড়ি ও লাইফ জ্যাকেট ছুড়ে মারেকিন্তু নদীতে পড়ে যাওয়া যাত্রী লাইফ জ্যাকেট ধরতে পারেনি সে ডুবে যাচ্ছিল দেখে নদীতে লাফ দেয় লালবোটের মাঝি মামুন।
শুক্রবার সকালে লালবোটের মাঝি মামুনের সাথে কথা বলে জানা যায় তিনি যাত্রীর জীবন বাঁচাতে ঐ মুহুর্তে নদীতে লাফ দেন। তিনি বলেনযাত্রী যখন হাত উচু করে ডুব দেয় আর উঠে ঠিক তখনি বুজতে পেরেছি তিনি হয়তো সাতার জানেন না। তাই আমি ঝাঁপ দিয়ে উনাকে উদ্ধারকরি। উদ্ধারের পর আমার ধারনা সত্যি হলো যাত্রী আসলেই সাতার জানতেন না।
মামুন মাঝি আরো জানান, আমার কোমরে মোবাইল ও টাকা ছিল সেগুলো পানিতে ডুবে গেছে আমার তাতে আপছোস নেই আমি একটামানুষকে প্রানে বাঁচাতে পেরেছি। গুপ্তছড়া ঘাটের কাছেই বেড়িবাধে স্বপরিবারে বসবাস করেন মামুন মাঝি, পরিবারে স্ত্রী এক ছেলে ও দুই মেয়েরয়েছে বলে জানান তিনি।দীর্ঘ দেড় যুগ ধরে এ ঘাটে লালবোট চালান সব সময় চেষ্টা করেন মানুষের উপকারের।
সন্দ্বীপে এমন ঘটনা প্রায় ঘটে থাকে গত ২০১৭ সালে লালবোট উল্টে ১৮ জনের প্রানহানি হয়, গত বছর সার্ভিস ট্রলার থেকে লালবোটে নামতেগিয়ে আরো একজন নদীতে পড়ে নিখোঁজ হন এবং তার এক দিন পর নিথর মরদেহ নদীতে ভেসে উঠতে দেখেন মাঝিরা।
২০২২ সালে একই ঘাটে স্পীডবোট উল্টে একই পরিবারে ৩ শিশু সহ মারা যান ৪ জন। গতকাল সারাদিন দেশে বিদেশে থাকা সন্দ্বীপীরা মাঝিরছবি দিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ধন্যবাদ জানিয়ে পোষ্ট করে। মাঝির এমন সাহসি কর্মকান্ডে মাঝিকে ৫ হাজার টাকার নগদ অর্থ পুরস্কার দিবেন বলেজানান হিউম্যান ২৪ নামক একটি সংগঠন। সংগঠনের উদ্যোক্তা সালেহ নোমান চট্টগ্রাম খবর কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া এক প্রবাসিমাঝির এমন সাহসিকতার জন্য ৫ হাজার টাকার মানের গিফর্ট দেওয়ার ঘোষনা দেন।
নদীতে পড়ে যাওয়া যাত্রীর পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন শীপে প্রচুর যাত্রী ছিল তাই উদ্ধার করার পর আমি আবার বোট নিয়ে যাত্রীনামাতে চলে গেছি পরে জানতে পেরেছি ঘাটের লোকজন উনাকে সিএনজি করে বাড়ি পাঠিয়েছে।