চ্যাম্পিয়ন অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান কি পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে অংশ নেবেন? কানাডার গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট থেকে কবে দেশে ফিরে আসবেন তিনি?
এলে কী হবে? টানা তিন মাসের বেশি সময় ধরে সাদা বলে ২০ ওভারের ক্রিকেটের সাথে সম্পৃক্ত ও ক্রিকেটের সবচেয়ে ছোট ফরম্যাটে খেলায় থাকা সাকিব লাল বলে হাতেগোনা দু-তিনদিনের অনুশীলনে মানিয়ে নিয়ে ৫ দিনের ক্রিকেটে কি নিজেকে মানিয়ে নিয়ে সেরাটা উপহার দিতে পারবেন?
এসব প্রশ্ন উঁকি-ঝুঁকি দিচ্ছিল আগে থেকেই। জাগো নিউজে গত এক সপ্তাহের একটু বেশি সময় আগে এ নিয়ে দুটি প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে। যেহেতু ১২ আগস্ট পর্যন্ত তার এনওসি আছে, তাই ধরেই নেওয়া যাচ্ছে, ১২ আগস্টের আগে তিনি দেশে ফিরবেন না।
মানে পাকিস্তানের সাথে টেস্ট খেললেও ‘চ্যাম্পিয়ন অলরাউন্ডার’কে যেতে হবে নামমাত্র প্রস্তুতি নিয়ে। তবে বিসিবি এবার তাকে অনেক বড় বার্তা দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। তাকে বলা হবে, এভাবে চলবে না। নিয়ম মেনে জাতীয় দলের ম্যানেজমেন্টের বেঁধে দেওয়া সিস্টেমে থেকে তবেই জাতীয় দলে খেলতে হবে। নচেত নয়।
এটা ছিল এক সপ্তাহেরও বেশি সময় আগের কথা; কিন্তু সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী, আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ ও দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পরের পরিবেশ ও প্রেক্ষাপট গেছে বদলে।
এখন আওয়ামী লীগ প্রধান থেকে শুরু করে দলটির নেতাকর্মীদের ওপর জনতার রাজ্যের ক্ষোভ। আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজার বাড়িতেও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। আরেক সংসদ সদস্য সাকিবের বিপক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জনতা প্রতিনিয়ত ক্ষোভ ঝাড়ছে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, কানাডার গ্লোবাল টুর্নামেন্ট খেলে দেশে ফিরে এসে সাকিবের অপমানিত, লাঞ্ছিত হওয়াও বিচিত্র নয়।
আওয়ামী লীগের অন্যসব নেতার মতো সাকিবও জনরোষের শিকার হতে পারেন। বলার অপেক্ষা রাখে না, অন্য সব ফেডারেশনের মতো বিসিবিও ছিল ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগ সমর্থক, আওয়ামী লীগারপুষ্ট। বিসিবির প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপনসহ বিসিবির অনেক শীর্ষ কর্মকর্তাই শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর নিখোঁজ। কে কোথায় আছেন? বলা কঠিন।
এমন অবস্থায় জনতার রুদ্ররোষের শিকার সাকিব কানাডা থেকে দেশে ফিরলে তার নিরাপত্তা দেবে কে বা কারা? তা নিয়েও জেগেছে প্রশ্ন।
আজ বুধবার বাংলাদেশ ‘এ’ দল শেরে বাংলায় যখন অনুশীলন করেছে, তখন সেনাবাহিনীর দুটি গাড়ি খানিকক্ষণ হোম অব ক্রিকেটে অবস্থান করেছে এবং ক্রিকেটারদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিল। এখন অন্যসব ক্রিকেটারদের সাথে শেরে বাংলায় অনুশীলন করতে আসলে হয়ত সাকিবও সেনা প্রহরায় প্র্যাকটিস করতে পারবেন; কিন্তু তার বিমানবন্দর থেকে নিজ বাসায় ফেরা এবং বাসা থেকে মাঠে আসার সময়ের নিরাপত্তা দেবে কে?
এ মুহূর্তে সে প্রশ্নের উত্তর দেয়ার মত কাউকে পাওয়া যায়নি। সাকিব নিশ্চয়ই পুরো পরিবেশ-পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত ও সচেতন। এমন অবস্থায় তিনি দেশে ফিরে অনুশীলনে যোগ দেয়া যে ঝুঁকিপূর্ণ, সেটা অবশ্যই সাকিব খুব ভাল করেই জেনে গেছেন। এমন অবস্থায় তাই সাকিব ১২ আগস্ট বা তারপর দিন দেশে ফেরার সম্ভাবনাও কম।