
মাদারীপুরে ফুটবল খেলায় দ্বন্দ্বের জেরে অন্যের নামে মামলা দেওয়ার জন্য নিজেদের একজনের মাথা কেটে হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে উল্টো তাদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ দায়ের করা হয়। এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে মাদারীপুর সদর উপজেলার শান্তিনগর এলাকায়।
বুধবার (২৪ অক্টোবর) রাতে বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন মাদারীপুর সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন আহমেদ।
জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার রাস্তি এলাকায় ফুটবল খেলা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে স্থানীয় শহিদ মোল্লার ছেলেকে কুপিয়ে আহত করেন পার্শ্ববর্তী এলাকার কিছু বখাটে। এর সূত্র ধরে গত দুদিনে বেশ কয়েকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে শহিদ মোল্লার ভাগনে শান্তিনগর এলাকার চান্দু হাজির ছেলে অহিদ, শহিদ মোল্লার পক্ষ নিয়ে দ্বন্দ্বের নেতৃত্ব দেন। দুপক্ষের দ্বন্দ্বে অহিদ গ্রুপের আকাশ নামে এক কিশোর সামান্য আহত হয়। পরে সোমবার রাতে রাস্তি এলাকার হাকিম বেপারীর বিরুদ্ধে মামলা দিতে শান্তিনগর এলাকার সিরাজ বেপারীর ছেলে আকাশকে নিজেরাই মাথা কেটে হাসপাতালে ভর্তি করেন চান্দু হাজী ও তার ছেলে অহিদ।
পরবর্তীতে আকাশের অভিভাবকরা জানতে পারে অহিদসহ কয়েকজন ডাক্তার দিয়ে আকাশের মাথা কেটে মাদারীপুর সদর হাসপাতালের ভর্তি করেছেন এবং হাকিম বেপারীর বিরুদ্ধে মামলা দিতে আকাশের মাকে নির্দেশ দেন। কিন্তু আকাশের মা সামসুন্নাহার বেগম হাকিম বেপারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ না দিয়ে উল্টো অহিদসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে মাদারীপুর সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
ভুক্তভোগী কিশোর আকাশ ঢাকা পোস্টকে জানান, আমাকে ভয় ভীতি দেখিয়ে ক্লাবে নিয়ে যায়। পরে ডাক্তার ডেকে অবশ করার ইনজেকশন দিয়ে আমার মাথা কেটে এরপর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
ভুক্তভোগী কিশোর আকাশের মা সামসুন্নাহার বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, যারা মামলা দেওয়ার জন্য আমার ছেলের মাথা কাটতে পারে তারা তো আমার ছেলেকে হত্যা করেও মামলা দিতে পারে। তাই আমি উল্টো ওদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছি। আমি এর বিচার চাই।
অভিযুক্ত অহিদ বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত নই। এটি ষড়যন্ত্রমূলক ও মিথ্যা।
হাকিম বেপারী বলেন, আমি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত না তবুও আমাকে ফাঁসাতে গিয়ে একটি ছেলের মাথা কেটে হাসপাতালে ভর্তি করেন তারা। পরে সত্য উদঘাটিত হলে এখন উল্টো ওদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে মাদারীপুর সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।