নাছির উদ্দিন ভূঁঞা-দেশে চলছে তাপপ্রবাহ,তীব্র দাবদাহ আর গরমে অতিষ্ঠ মানুষ,এই তীব্র গরমে মাটির ঘর যেন গরিব মানুষের জন্য আশীর্বাদ হয়ে দাঁড়িয়েছে, তীব্র গরমেও মাটির ঘরের ভেতরে বিরাজ করে ঠান্ডা। তাই গরিব মানুষের জন্য এসব মাটির ঘর যেন এসি। আহা কি আরাম!
একটা সময় এ দেশের প্রতিটি গ্রামেই মাটির ঘর পাওয়া যেত, এখন দেশে মাটির ঘর প্রায় বিলুপ্তির পথে,সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সারাদেশের মতো মীরসরাই উপজেলায় ও হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার চির ঐতিহ্যের নিদর্শন সবুজ শ্যামল ছায়াঘেরা শান্তির নীড় মাটির ঘর,যা এক সময় গ্রামের মানুষের কাছে মাটির ঘর বা গরিবের এসি বাড়ি নামে পরিচিত ছিল।মাটির ঘরের কদর কমিয়ে দিয়েছে দেশের মানুষের জীবনযাত্রার উন্নয়ন ও বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এসব মাটির ঘর ঠান্ডা থাকায় এক সময় এটাকে গরিবের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরও বলা হতো। এ ঘর গরমের সময় আরামদায়ক। তাই অনেক গ্রামেই বিত্তশালীদের দোতলা মাটির ঘরও ছিল।
মিরসরাই উপজেলার অনেক গ্রামে এখনো রয়েছে কিছু মাটির ঘর,উপজেলার হিঙ্গুলী, সোনাপাহাড়, পূর্ব দুর্গাপুর, ওয়াহেদপুর, করেরহাটের পাহাড়ী এলাকা সহ কয়েকটি অঞ্চল ঘুরে কয়েকটি মাটির ঘর চোখে পড়ে। ঝড়-বৃষ্টি থেকে বাঁচার পাশাপাশি তীব্র গরম ও কনকনে শীতে আদর্শ বসবাস-উপযোগী মাটির ঘর। এসব ঘর শুধু মাটির বাড়িই নয়, ছিল ধান-চাল রাখার জন্য মাটির তৈরি গোলা ঘর ও কুঠি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গ্রামে গ্রামে পৌঁছে গেছে বিদ্যুৎ,গ্রামীণ অর্থনীতির গতি সচল হওয়ায় মাটির ঘরের পরিবর্তে তৈরি হচ্ছে পাকা ঘর, কয়েক বছর পর পর মাটির ঘর সংস্কারের ঝক্কি-ঝামেলা ও ব্যয়বহুল দিক পর্যবেক্ষণ করে মাটির ঘরের পরিবর্তে দালান-কোটা বানাতে উৎসাহী হয়ে উঠেছেন এখানকার মানুষ।
উপজেলার কয়লা গ্রামের তপন ত্রিপুরা জানান, মাটির ঘর তৈরি করতে প্রথমে এটেল বা আঁঠালো মাটি কাদায় পরিণত করে দুই-তিন ফুট চওড়া করে দেয়াল তৈরি করা হতো,১০ থেকে ১৫ ফুট উঁচু দেয়ালে কাঠ বা বাঁশের সিলিং তৈরি করে তার ওপর খড় অথবা টিনের ছাউনি দেওয়া হতো,এসব মাটির ঘর তৈরি করতে কারিগরদের সময় লাগত দেড় থেকে দুই মাস। এক সময় আমাদের এলাকার প্রতিটা ঘর মাটি দিয়ে তৈরি করা হতো। অনেকেই মাটি, বাঁশ, টিন সংগ্রহ করে নিজেরাই মাটির ঘর তৈরি করত।
তিনি আরও বলেন, ভূমিকম্প বা বন্যা না হলে একটি মাটির বাড়ি শত বছরেরও বেশি স্থায়ী হয়। কিন্তু বর্তমানে কালের বিবর্তনে ইটের দালানকোটা আর বড় বড় অট্টালিকার কাছে হার মানছে মাটির ঘর। মাটির ঘরে দেয়ালে কাঠ বা বাঁশের শিলিং তৈরি করে তার ওপর খড় বা টিনের ছাউনি দেওয়া হতো,মাটির বাড়িঘর অনেক সময় দোতলা পর্যন্ত করা হতো। মাটির ঘর বড় মাপের হয় না।
প্রবীণ শিক্ষক মনজুর কাদের চৌধুরী বলেন গৃহিণীরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মাটির দেয়ালে বিভিন্ন রকমের আল্পনা এঁকে ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতেন,প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বর্ষা মৌসুমে মাটির ঘরের ক্ষতি হয় বলে বর্তমান সময়ে দীর্ঘ স্থায়িত্বের কারণে গ্রামের মানুষ ইটের বাড়ি নির্মাণে আগ্রহী হচ্ছেন, কিন্তু গরম সহ প্রাকৃতিক প্রতিকূল পরিবেশে মাটির ঘরই আদর্শ বাড়ি।
রামগড় বাজার কমিটি গঠন সম্পন্ন
মাহমুদুল হাসান, রামগড়(খাগড়াছড়ি)প্রতিনিধি: রামগড়, গতকাল ১৫ অক্টোবর ২০২৪—রাত ৯ ঘটিকায়...