বুধবার, জানুয়ারি ২২, ২০২৫

হত্যা মামলার আসামী হয়েও দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন গাজীপুরে বিতর্কিত আওয়ামী লীগ নেতা সালাউদ্দিন চৌধুরী

Logo
ডেস্ক রিপোর্ট বুধবার, ১১ ২০২৪, ৭:৫২ অপরাহ্ণ

বৃন্দাবন মল্লিকঃ

বিগত সরকারের সময় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় মো: সালাউদ্দিন চৌধুরী এখন রং পাল্টে হয়ে যাচ্ছেন যেন বিএনপি নেতা। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হলেও তিনি দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এখন তার উঠাবসা স্থানীয় বিএনপি নেতা থেকে শুরু করে র‌্যাব, পুলিশ, আর্মি সবার সঙ্গে। এলাকাবাসাীর কাছে রীতিমতো প্রতারক হিসেবে পরিচিত সালাউদ্দিন একজন গার্মেন্টস ব্যবসায়ী। নিজেকে জাহির করে করেন একজন সমজেসেবক হিসেবেও। তার এসব নীতিহীন কর্মকান্ডের কারণে মানুষ তাকে “হলুদ সালাউদ্দিন” বলে ডাকেন। গাজীপুরের ভোগড়া এলাকার মো: আজিজ চৌধুরীর ছেলে সালাউদ্দিনের বাড়ি গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বি—৩০৬/১১, ভোগড়া (চৌধুরী বাড়ি)। বিগত সরকারের আমলে আওয়ামী লীগের স্থানীয় এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে তদবির বাণিজ্য করে অর্থ বিত্তের মালিক সালাউদ্দিন গড়ে তুলেছেন নিজস্ব কিশোর গ্যাং বাহিনীও। তার কথার বাহিরে গেলে তিনি নিজস্ব ক্যাডার দিয়ে মামলা—হামলা করান। বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা কর্মীদের উপর হামলা ও মামলা দিতে সে অর্থের জোগান দিতেন। প্রতারক সালাউদ্দিন ও তার স্ত্রীকে অবিলম্বে গ্রেফতারের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের সহযোগিতা কামনা করছেন গাজীপুরবাসী।

প্রতারণার হাতিয়ার ভয়ভীতি দেখানো!
স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের সরকারের আমলে সালাউদ্দিন চৌধুরী পারিবারিক টাকার বিনিময়ে নিউজ ভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল “ডিবিসি টিভি” এর পরিচালক পদটি বাগিয়ে নেন নিজের নামে। পৈত্রিক ফান্ডের টাকা দিয়ে নিজের নামে স্বৈরাচারীভাবে পরিচালক পদটি নিজের করে নেন। এই টিভির পরিচালক সাইনবোর্ডটি ব্যবহার করেই জাল বিস্তার করতে থাকেন নিজের অপকর্মের। নিজের অপকর্ম ঢাকতে একেক সময় একেক কৌশল অবলম্বন করছেন। আওয়ামী লীগের শাসন আমলে তিনি নিজেকে আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী নেতা দাবী করে অনেক অপকর্ম করেছেন। বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা কর্মীদের অকারণে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাভোগ, ব্যাংক ও একটি ঋণ সংস্থার কাছ থেকে প্রতারণা করে মোট ২১৭ কোটি টাকা উত্তোলন করে ঋণ খেলাপি হওয়াসহ অসংখ্য অপকর্ম করেছে। কিন্তু কোথাও আটকে গেলেই ব্যবহার করতেন ডিবিসি চ্যানেলের পরিচালক পদটি। বিগত সরকারের আমলে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার কার্যালয়, বিভিন্ন মন্ত্রীর কার্যালয় থেকে কিংবা পুলিশের আইজিপির কার্যালয় থেকে ফোন করে সব থামিয়ে দিতেন। ডিবিসি চ্যানেলের চেয়ারম্যান সাংবাদিক ইকবাল সোবাহান চৌধুরীর মাধ্যমে শেখ হাসিনার কার্যালয়ে তার যোগাযোগ ছিল সকল পর্যায়ের শীর্ষ লোকদের সাথে। বড় বড় ঠিকাদারীর কাজ, ব্যাংক লোন, নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্য, বিভিন্ন পদ বাণিজ্য, চাকরি পাইয়ে দিতেন। বিভিন্ন শিল্পপতিদেরকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে এই সিন্ডিকেটের সাথে মিলে কয়েক হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ডিবিসি চ্যানেল যেন এখনো তার প্রভাব বিস্তারের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে আছেন। এই ডিবিসির প্রভাব দেখিয়ে অন্যান্য টেলিভিশন ও পত্রিকার গাজীপুরের সাংবাদিকদের জনপ্রতি মাসে ২০/৪০ হাজার টাকা করে মাশোহারা দিয়ে যেন কর্মচারী বানিয়ে রেখেছেন। নিজে যেসব বিষয়ে সামাল দিতে ঝামেলা মনে করেন সেখানে তার পোষা সাংবাদিক টিম পাঠিয়ে দেন। তার মতো এইসব পোষা সাংবাদিকরাও তার হয়ে বিভিন্ন সরকারী কর্মকর্তা ও নেতাদেরকে হুমকি ধমকি দিয়ে কাজ হাসিল করেন।
গত ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনা পলায়নের পর সালাউদ্দিন নিজেকে একজন সুধীজন হিসেবে জাহির করতে কখনো পুলিশের সাথে ছবি, কখনোবা সেনাবাহিনীর সাথে ছবি ও বিভিন্ন উপদেষ্টা এবং বিএনপির নেতাদের সাথে জোরালো লবিং করে যাচ্ছেন নিজেকে রক্ষা করতে ব্যস্ত। এসব ছবি সংযুক্ত করা হলো নিচে।
শেখ হাসিনাকেও আম্মু ডাকতো!
আওয়ামী লীগের শাসন আমালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে আম্মু বলে ডাকতেন এই প্রতারক সালাউদ্দিন চৌধুরী। তিনি তার সকল প্রতারণা ও অপকর্ম ঢাকতে শেখ হাসিনার কার্যালয়ের তৎকালীন বিভিন্ন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরকে প্রতি মাসে টাকা দিতেন। তার গুণকীর্তণ গাওয়ার জন্য কয়েকজন এমপি ও মন্ত্রীকেও মোটা অংকের টাকা দিতেন। নানান কৌশল ও অভিনয় করে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন তদবির বাণিজ্য ও ব্যাংক লোন করে। এখনো ধরাছোয়ার বাইরে থাকে কিভাবে এই প্রশ্নের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে বিএনপির কিছু শীর্ষ নেতাকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে এখন পার পেয়ে যাচ্ছেন।

আসামী হয়েও আর্মি ও পুলিশের সাথে এতো সখ্যতা কেন?
হত্যা মামলার আসামি হয়েও দিব্বি স্থানীয় বিএনপি নেতা থেকে শুরু করে গাজীপুরের পুলিশ কমিশনার, গাজীপুরে যৌথবাহিনীর অভিযানে সেনাবাহিনীর লোকদের সাথে এমনকি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের সাথে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এইসব ছবি—ভিডিও মিডিয়াতে প্রচার করে ও ফেসবুকে দিয়ে নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে জাহির করছেন। এই নিয়ে গাজীপুরের সর্বস্তরের মানুষের মাঝে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সম্পর্কে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় বইছে। অভিযোগ আছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগকে পরামর্শ দিয়ে এবং অর্থ সহযোগিতা দিয়েছিলেন। একাধিক হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছে তার সহযোগিতায়। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। সবচেয়ে অবাক হওয়ার বিষয় হলো হত্যা মামলার আসামী হয়েও তিনি প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন টিভি চ্যানেল ও পত্রিকার সাংবাদিকদের ডেকে এনে টাকার বিনিময়ে গাজীপুরের শিল্প কারখানার বিভিন্ন নিউজ করান নিজের কুকর্ম আড়াল করে নিজেকে একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হিসেবে জাহির করে গ্রেফতার মুক্ত হতে।

ADVERTISEMENT
অন্যান্য সংবাদ

মোঃ আব্দুল হান্নান, আদমদিঘী উপজেলা, প্রতিনিধি: স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মোঃ রুহুল আমিন এর সভাপতিত্বে এব; সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ জিল্লুর রহমান এর …

মোঃ আবদুল আজিজ, স্টাফ রিপোর্টার: সুবর্ণচর উপজেলার চরবাটা ইউনিয়নের চরমজিদ ভূঁঞারহাট বাজারে ভয়াবহ এক অগ্নিকাণ্ডে ১৮টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। মঙ্গলবার …

তানজির আহমেদ সাকিব, কালাই উপজেলা প্রতিনিধিঃ জয়পুরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সাবেক পরিচালক এবং কালাই উপজেলার মাত্রাই ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আতাউর রহমান …

ইউসুফ আলী নাটোর প্রতিনিধি: কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সংখ্যা গরিষ্ঠ কৃষক জনগোষ্ঠীকে সংগঠিত করার লক্ষ্যে সারাদেশে ৩ মাস ব্যাপি ইউনিয়ন পর্যায়ে …