বুধবার, ডিসেম্বর ৪, ২০২৪

 সুবর্ণচরে বৃদ্ধকে জবাই করে হত্যা অপরিচিত মুঠোফোন কলের সূত্র ধরে হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন,গ্রেপ্তার ৩

Logo
Desk Report 2 রবিবার, ১৪ ২০২৪, ৮:০৪ অপরাহ্ণ

মোজাহের ইসমাইল নাঈম, নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি:

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে আব্দুল খালেক ওরফে খাজা মিয়াকে (৮০) জবাই করে হত্যা তেরদিন পর ক্লুলেস এ হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। একই সাথে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করে এবং হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, উপজেলার চররশিদ গ্রামের মন্তাজ মিয়ার বাড়ির মো.জয়নাল আবেদীরে ছেলে আইয়ুব আনছারী (২৯), পশ্চিম চরজব্বর গ্রামের শফিক উল্যার ছেলে আব্দুল হাকিম (২৩) ও একই গ্রামের রেজাউল হক চৌধুরীর ছেলে মো.রাজু (২২)।

রোববার (১৪ জুলাই)  বিকেল ৫টায় নোয়াখালী পুলিশ সুপার কার্যালয়ের হলরুমে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয়া সেন।

নিহত খাজা মিয়া উপজেলার চরজব্বর ইউনিয়নের ৩নম্বর ওয়ার্ডের চর রশিদ গ্রামের খালেক মিয়ার বাড়ির মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। তিনি ৫সন্তানের জনক ছিলেন।

প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ জানায়, বৃদ্ধ খাজা মিয়ার হত্যাকান্ডের শিকার হওয়ার দুই দিন আগে তার ছোট ছেলে আব্দুল্যার মোবাইলে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে কল আসে এবং তার বাবাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। পুলিশ ওই মোবাইল নম্বরের তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে সন্দিগ্ধ আসামি আইয়ুব আনছারীকে সনাক্ত করে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদের আইয়ুব আনছারী এই হত্যাকান্ডে তার সহযোগী হিসেবে আব্দুল হাকিমের নাম প্রকাশ করে। পরবর্তীতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে আব্দুল হাকিমকে উপজেলার কাঞ্চন বাজার এলাকা থেকে আটক করে। এরপর পুলিশ দুই আসামিকে বিজ্ঞ আদালতে উপস্থাপন করলে আদালত আইয়ুবকে ৪ দিন ও আব্দুল হাকিমের ৩ দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করে।

পুলিশ জানায়, রিমান্ডে থাকা সন্দিগ্ধ আসামি আব্দুল হাকিম পুলিশের কাছে আরো একজনের জড়িত থাকার বিষয়ে তথ্য দেয়। তার ভাষ্যমতে অপর সন্দিগ্ধ আসামি মো.রাজুকে আটক করে। এরপর রাজুকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে রাজু পুরো ঘটনা পুলিশের কাছে স্বীকার করে।

ADVERTISEMENT

আসামি রাজু পুলিশকে জানায়, গত ৫ জুলাই শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে আইয়ুব আনছারীর উদ্যোগে স্থানীয় কাঞ্চন বাজারে স-মিলের সামনে তারা তিনজন একত্রিত হয়। ওই সময় আইয়ুব আনছারী অপর দুইজনকে জানায় যে, চরজব্বর থানার মামলা নং- ০২, এর বাদী শফিকের সাথে মামলার বিষয়ে কথা হয়েছে। শফিক আব্দুল খালেক খাজা অথবা খাজার ছোট ছেলে আব্দুলকে শায়েস্তা করার ইচ্ছা প্রকাশ করে। যদি আইয়ুব শফিকের সাথে থাকে তাহলে ওই মামলার বাদী শফিক আইয়ুবকে মামলা থেকে বাদ দেওয়ার ব্যবস্থা করবে। আসামি আইয়ুব আনছারী শফিকের এই প্ররোচনায় প্ররোচিত হয়ে আব্দুল খালেক খাজা অথবা খাজার ছোট ছেলে আব্দুলকে মেরে ফেলার ছক আঁকতে শুরু করে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ আরও জানায়, আসামি আইয়ুব আনছারী অপর দুই আসামিকে আব্দুল খালেক খাজা মিয়াকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা জানায় এবং কে কি দায়িত্ব পালন করবে তা বন্টন করে দেয়। আব্দুল হাকিমকে দায়িত্ব দেওয়া হয় কাঞ্চন বাজারে ভিকটিমের গতিবিধি পর্যবেক্ষণের জন্য। বিনিময়ে আইয়ুব আনছারী আব্দুল হাকিমকে নগদ ২হাজার টাকা দেয় এবং কাজ হয়ে গেলে আরো টাকা দিবে মর্মে জানায়। অপর সহযোগী রাজু কে পরবর্তীতে ৫হাজার টাকা দিবে বলে আশ্বস্থ করে। ঘটনার দিন গত ৬ জুলাই শনিবার বিকেল ৪টা থেকে আব্দুল হাকিম কাঞ্চন বাজারে ভিকটিমকে খোঁজাখুজি শুরু করে। মাগরিবের নামাজের পর আব্দুল হাকিম খাজা মিয়াকে জিরোপয়েন্টে দেখতে পেয়ে বিষয়টি আইয়ুব আনছারীকে জানায়। এর কিছুক্ষণ পর রাত ৮টার দিকে ভিকটিম আব্দুল খালেক খাজা মিয়াকে আবুল কালামের সাথে জিরো পয়েন্টে দেখে নিশ্চিত হয়ে ভিন্নপথে দ্রুত ঘটনাস্থল সংলগ্ন মাদরাসার সামনে থাকা আইয়ুব আনছারীর সাথে রাত সাড়ে ৮টার দিকে গিয়ে মিলিত হয়। এর ২/৩ মিনিট পর অপর সহযোগী রাজু সেখানে উপস্থিত হয়। পরবর্তীতে তিনজনই ভিকটিম আসার অপেক্ষায় ভিকটিম খাজা মিয়ার বাড়ির প্রবেশের রাস্তায় খড়ের স্তূপের পিছনে ওঁৎ পেতে থাকে।

নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয়া সেন বলেন, হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী আইয়ুব আনছারী খড়ের স্তূপের পিছন থেকে বের হয়ে ভিকটিমকে আক্রমণ করে। আইযুব আনছারী ডান হাত দিয়ে ভিকটিমের সামনে থেকে গলা চাপ দিয়ে ধরে এবং বাম হাত দিয়ে ভিকটিমের পিঠে ছুরিকাঘাত করে। ছুরিকাঘাতের ফলে ভিকটিমের হাতে থাকা বেতের লাঠিটি পড়ে গেলে ভিকটিম মাটিত লুটিয়ে পড়ে। এরই মধ্যে আইয়ুব আনছারী ভিকটিমের তলপেটের বাম পার্শ্বে উপর্যুপুরি দুইবার ছুরিকাঘাত করে। তখন খড়ের স্তূপের আড়াল থেকে আব্দুল হাকিম ও রাজু (২২) এসে সন্দিগ্ধ আসামি আইয়ুব আনছারীর নির্দেশে সন্দিগ্ধ আসা আব্দুল হাকিম (২৩) ভিকটিমের বাম হাত মাটিতে চাপিয়া ধরে এবং মো.রাজু ভিকটিমের মাথা চাপিয়া ধরিলে সন্দিগ্ধ আসামি আইয়ুব আনছারী ভিকটিমের বুকের উপর হাঁটু গেড়ে বসে ডান হাত দিয়ে ভিকটিমের গলার সামনের অংশে ছুরি চালিয়ে জবাই করে হত্যা করে। আভিযানিক দল পুলিশ রিমান্ডে থাকা আইয়ুব আনছারীর দেওয়া তথ্য মতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করে।

অন্যান্য সংবাদ

হামিদুল ইসলাম, লাকসাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি: মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) লাকসাম পৌর কনফারেন্স হলে ‘পিপলস অ্যাডাপটেশন প্ল্যানস ফর ইনক্লুসিভ ক্লাইমেট স্মার্ট সিটিস’ প্রকল্পের আওতায় …

মোঃ নুর ইসলাম সবুজ, লালমনিরহাট প্রতিনিধি: লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের খোলাহাটি দারুস সালাম মহিলা মাদ্রাসা এতিমখানার হাফেজা ছাত্রীদের সনদ প্রদান ও …

ইউসুফ আলী নাটোর প্রতিনিধি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সকলকে …

ইউসুফ আলী নাটোর প্রতিনিধি ফুটবল খেলার সময় হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েন নাটোর সদরের চাঁদপুর গোরস্থান বাজারের গোলাম রাব্বি (২৩) নামের যুবক। …