সীতাকুণ্ডে সওজের রাস্তায় গাইডওয়াল নির্মাণ, স্থানীয়দের চলাচলে দুর্ভোগ
দিদারুল আলম (দিদার)
➤ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড পৌরসভা এলাকায় সড়ক ও জনপথ (সওজ’র) জায়গা দখল করে গাইডওয়াল নির্মাণ করা হয়েছে। বিগত তিন যুগেরও বেশি সময় ধরে সরকারি (সওজ’র) জায়গাটি উন্মুক্ত থাকলেও গত কয়েকদিন ধরে জায়গাটি দখল করে গাইডওয়াল নির্মানের অভিযোগ তুলেন স্থানীয় বাসিন্দা ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা।
যদিওবা জায়গাটিতে সওজের একটি সাইনবোর্ড রয়েছে। সেখানে লীজ গ্রহীতা সাইফুল ইসলাম তসলিম, পিতা- সৃত সফিউল আলম, মৌজা-সীতাকুণ্ড, জেএল নং-২৮, সীট নং-০৫, খতিয়ান নং-০৩, বিএস দাগ- ৯২৩৪, সওজের অধিগ্রহণ এলএ মামলা নং – ০৩/৩ (১৯৬৬-৬৭) লেখা আছে। এছাড়া সরকারি সওজের এই জায়গায় অবৈধ অনুপ্রবেশের চেষ্টাকারী ও অবৈধ দখল করার চেষ্টাকারীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের আইন অনুযায়ী কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তবে সরকারি (সওজ’র) জায়গাটিতে গাইডওয়াল করা হলেও এখনো কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করেনি সওজ কর্তৃপক্ষ।
এদিকে মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পৌরসদরের দক্ষিন ইদিলপুর এলাকার যুবাইদিয়া মাদ্রাসার সংযোগ সড়কের সংলগ্ন ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের পশ্চিম পাশে সীতাকুণ্ড মৌজার সড়ক জনপথ (সওজ’র) জায়গায় গাইডওয়াল করে ঘেরাও করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় সাইফুল ইসলাম তসলিম নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। যদিও তসলিম দাবী করছেন ওই জায়গা সওজের কাছ থেকে লীজ নিয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির অভিভাবক সদস্য সাইফুদ্দিন বাবুল জানান, এই গ্রামীন রাস্তা দিয়ে স্থানীয়রা ও মাদ্রাসা ছাত্রীরা চলাচল করে আসছে। বর্তমানে রমজানে মাদ্রাসা বন্ধ থাকায় এই সুযোগে রাস্তাটিতে গাইডওয়াল নির্মান করে বন্ধ করে দিয়েছে। এ বিষয়ে পৌরসভার মেয়রকে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছি এবং তিনি অবগত আছেন। তিনি পুনরায় রাস্তাটি উন্মুক্ত করতে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
যুবাইদিয়া মহিলা মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সুমি বলেন, আমি শিশু শ্রেণি থেকে আলিম পর্যন্ত এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করেছি। বর্তমানে রাস্তাটি বন্ধ করে দেওয়ার ফলে আমরা মহাসড়কে উঠে চলাচল করতে হবে। এটি আমাদের জন্য অনেক ঝুঁকিপূর্ণ এবং দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছি।
গাইডওয়াল নির্মানের বিষয়ে জানতে চাইলে লীজ গ্রহীতা সাইফুল ইসলাম তসলিম সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এই জায়গাটি সওজর
কাছ থেকে আমি লীজ নিয়েছি। সরকারি জায়গায় গাইডওয়াল নির্মানের অনুমতি আছে কিনা এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। তবে গাইডওয়াল করায় পাশের যুবাইদিয়া মহিলা মাদ্রাসার ছাত্রী ও স্থানীয়দের চলাচলে নানা সমস্যা হচ্ছে সেটি শিকার করেন। সওজ কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হয়েছে। তাদের অফিসে শিঘ্রই যাব।
তিনি আরও বলেন, আমারও বাচ্চা আছে মহিলা মাদ্রাসার বাচ্চারা আমার মেয়ের মত তাদের যে সমস্যা হচ্ছে সেটির সমাধান করব। বর্তমানে আমি ঢাকায় অবস্থান করছি।কয়েকদিনের মধ্যে ওই জায়গাতে গিয়ে এই সমস্যাটির যেভাবে সমাধান করা দরকার সেভাবেই সমাধান করব বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে সীতাকুণ্ড পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা বদিউল আলম বলেন, আমরা পৌরসভার পক্ষ থেকে তাদের বাধা দিয়েছি তারপরও তারা গাইডওয়াল নির্মান করেছে। আমি গাইডওয়াল ভেঙ্গে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছি। তারা আমার সাথে দেখা করবে বলেছে। এই রাস্তাটি যুবাইদিয়া মহিলা মাদ্রাসার চলাচলের রাস্তা। গ্রামের মেয়েরা মাদ্রাসায় আসতে চলাচলের সুবিধার্থে তৎকালীন মেয়র নায়েক সফিউল আলমের আমলে রাস্তাটি করা হয়েছিল। প্রায় ৩০-৪০ বছরের পুরোনো রাস্তাটিতে বন্ধ করে দিয়েছে তারা।
এ বিষয়ে জানতে সড়ক জনপথ (সওজ) বিভাগীয় উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রোকন উদ্দীন খালেদ চৌধুরী বলেন, তাসলিম নামে এক ব্যাক্তি জায়গাটি লীজ নিয়েছেন এটিই আমার জানা আছে। তবে, সড়ক জনপথের জায়গায় কোন ধরনের গাইডওয়াল নির্মান করার সুযোগ নেই। আমি এখনি খবর নিয়ে তদন্ত করে দেখব। এধরনের সত্যতা পেলে গাইডওয়াল ভাঙ্গা হবে বলে তিনি জানান।