মোঃ রিপন হাওলাদার
সার্ক চেম্বারের সভাপতি হিসেবে নতুন দায়িত্ব পেলো বাংলাদেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি( এফবিসিসিআই)’র বর্তমান সভাপতি জসিম উদ্দিন।
দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা সার্কের সদস্য দেশগুলোর শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন সার্ক চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এসসিসিআই) ২০২৩-২৪ মেয়াদকালের জন্য তিনি সভাপতি হিসেবে এ দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
গত বৃহস্পতিবার (২৫ মে ২৩ ইং) তারিখ সন্ধ্যায় রাজধানী ঢাকার অন্যতম অভিজাত হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আনুষ্ঠানিক ভাবে এসসিসিআইয়ের সভাপতির দায়িত্ব বুঝে নেন তিনি।
দায়িত্ব গ্রহণ অনুষ্ঠানে জসিম উদ্দিন বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার বৈচিত্র্যময় সম্পদ ও দক্ষ জনবলের অভূতপূর্ব সম্ভাবনা রয়েছে। এ অঞ্চল বিশ্বে দ্রুত বর্ধনশীল রপ্তানিকারক অঞ্চল। তবে এই অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়ে গেছে।
দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে আন্তঃবাণিজ্যের হার এই অঞ্চলের মোট বাণিজ্যের মাত্র ৫-৭ ভগের মতো। উপরন্তু, প্রতি বছর এই হার আরও কমছে। অন্যদিকে, অন্যান্য আঞ্চলিক জোটগুলোর মধ্যে বাণিজ্য দিন দিন সম্প্রসারিত হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন ।
তিনি বলেন, অন্যান্য আঞ্চলিক চুক্তির সাফল্য থেকে শিক্ষা নিয়ে সার্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে আমাদের সমন্বিত প্রচেষ্টা থাকতে হবে। বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উদ্ভাবনী ও টেকসই সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। এই অঞ্চলের জনগণের জন্য একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ তৈরি করতে একসঙ্গে কাজ করা আমাদের দায়িত্ব। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, উৎপাদনমুখী শিল্প, জ্বালানি, পর্যটন এবং কৃষির মতো সম্ভাবনাময় খাতগুলোয় অগ্রাধিকার দিতে হবে।
অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ.কে. আবদুল মোমেন। তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়া বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর একটি। অনেক সম্ভাবনা সত্ত্বেও দুর্ভাগ্যবশত আমরা বিদ্যমান সুযোগগুলোকে কাজে লাগাতে পারছি না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের ঘনিষ্ঠ অংশীদারিত্ব দক্ষিণ এশিয়ায় অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে বড় ভূমিকা রাখেতে পারে। এ ক্ষেত্রে ট্যারিফ এবং নন-ট্যারিফ বাধা কমিয়ে আনতে হবে। আমি আশা করি সার্ক চেম্বার এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় বিপুল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা রয়েছে, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমরা কিছু কৃত্রিম রাজনৈতিক বাধার কারণে অগ্রসর হতে পারছি না। দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলকে সমৃদ্ধশালী করতে আমাদের এই সমস্যার সমাধানে পৌঁছাতে হবে।
দায়িত্ব গ্রহণের পর নতুন সভাপতির নেতৃত্বে সার্ক চেম্বারের এক্সিকিউটিভ কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়।মো. জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে বেগবান করতে সমন্বিতভাবে কাজ করার অঙ্গিকার ব্যক্ত করেন সার্কভুক্ত দেশগুলোর শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতারা।
অনুষ্ঠানে ফেডারেশন অব পাকিস্তান চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফপিসিসিআই) সভাপতি ইরফান ইকবাল শেখ, সার্ক সিসিআইয়ের (শ্রীলঙ্কা) সাবেক সভাপতি মিকি হাশিম, রুয়ান এদিরিঙ্গে, সার্ক সিসিআইয়ের (পাকিস্তান) সহ-সভাপতি আঞ্জুম নিসার, মালদ্বীপের সাবেক মন্ত্রী মরিয়ম শাকিলা, সার্ক সিসিআইয়ের (শ্রীলঙ্কা) সাবেক সভাপতি রুয়ান এদিরিঙ্গে, সার্ক সিসিআইয়ের (নেপাল) ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং নেপাল চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফএনসিসিআই) সাবেক সভাপতি চন্ডি রাজ ঢাকাল, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (আইবিসিসিআই) ভাইস প্রেসিডেন্ট সঞ্জয় বসু, আফগানিস্তান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সদস্য জানাকা সিদ্দিকী, এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি, পরিচালকসহ বাংলাদেশ ও সার্কভুক্ত দেশগুলোর ব্যবসায়ী নেতারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও রাতের আহারের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।