খান নাজমুল হুসাইন, সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ
সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য অফিসার আনিছুর রহমানের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
জানাগেছে, বাংলাদেশ মৎস্য অধিদপ্তর মহা পরিচালকের বরাবর সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য অফিসার মোঃ আনিছুর রহমান এর বিরুদ্ধে ঠিকাদার মোঃ শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। শহিদুল ইসলাম বলেন, আমি মৎস্য অধিদপ্তরে কয়েক বছর যাবৎ সুনামের সাথে ঠিকাদারি কাজ করে আসছি। মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের ব্যক্তি ও অফিসারদের সাথে সম্পর্ক বজায় রেখে কাজ বাস্তবায়ন করি।কাজের সুবাদে মৎস্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের সম্পর্কে কটূক্তিমূলক কথা শোনা যায়। যা কাজ করতে গিয়ে আমি ভালো ভাবে বুঝতে পারি। বিশেষ করে মোঃ আনিছুর রহমান সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য অফিসার এর বিষয়ে একটু বেশি শোনা যায়। তার কিছু খারাপ কর্মকাণ্ড লিখিত ভাবে উপস্থাপন করেন শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, আনিছুর রহমান জেলা অফিসার দ্বায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে উনি ঠিকঠাক মতো অফিস করেন না এবং তার অধিন্যাস্ত উপজেলা অফিসের কর্মকর্তা, কর্মচারীরা ঠিক মতো অফিস করেন না।বিশেষ করে কলারোয়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার অন্যতম। এজন্য মৎস্য চাষিরা তাদের কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং মৎস্য অফিসের চেইন অব কমান্ড বজায় রাখে না। এ জেলার উপজেলা অফিসার, কর্মচারীরা সময় মতো অফিস না করে, জেলা মৎস্য অফিসার আনিছুরকে ম্যানেজ করে নিয়মিত বেতন ভাতাদি উত্তোলন করছে। যা সরকারি অর্থ অপচয় হচ্ছে মর্মে প্রতিয়মান হয় । বিশেষ করে তালা ও কলারোয়ার অফিসের অবস্থা বেহাল দশা । এ দুটি উপজেলাসহ সকল উপজেলায় তিনি কোন ধরনের তদারকি করেন না । তিনি যেদিন অফিস করেন সেদিন অফিসের কাজ বাদ দিয়ে চিংড়ি চাষ প্রদর্শনী খামার, এল্লারচর গিয়ে বন্ধু-বান্ধব নিয়ে আড্ডাবাজিতে মগ্ন থাকেন। এছাড়াও নিজ দপ্তর অর্থাৎ জেলা মৎস্য দপ্তর, সাতক্ষীরা সঠিক ভাবে সংস্কার কাজ না করিয়ে সরবরাহকারী বা কোটেশন প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে অর্থ আত্মসাৎ পূর্বক কোন রকম দায়-সারা কাজ শেষ করেছেন।
এছাড়াও সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে উপজেলা মৎস্য অফিসার ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীর মাধ্যমে মাছ চাষি ও খামারীদের নিকট থেকে বিভিন্ন সময় চাঁদা উত্তোলন করেন, পাশাপাশি সাসটেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিসারিজ প্রজেক্ট এর আওতায় প্রতিটি উপজেলায় খাল খনন করা হয়।খাল খনন করতে গিয়ে মোঃ আনিছুর রহমান প্রতিটি খালের সভাপতি ও সাধারণ
সম্পাদকের নিকট হতে খাল প্রতি ১.৫ লক্ষ থেকে ২.০০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঘুষ দাবী করেন। অর্থাৎ ঘুষ গ্রহণের মাধ্যমে সঠিক ভাবে খাল খনন না করে টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি। পাশাপাশি খাল খননকারী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের নিকট হতেও মোটা অংকের চাঁদা দাবি করেন এবং খনন কাজে ব্যাপক অনিয়ম হয় । খাল খননকালে তিনি কোন ধরনের তদারকি করেন না । এতে সঠিক ভাবে খাল খনন হয়নি তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ কলারোয়া উপজেলার একড়া, নারায়ণপুর ও যুগিখালি ক্লাস্টার । উর্দ্ধতন বিভিন্ন অফিসারের নাম ভাঙ্গিয়ে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে চাকুরী প্রত্যাশিদের নিকট হতে টাকা নিয়ে তা আত্মসাৎ করেন ।এজন্য তার কিছু এজেন্ট ইতোমধ্যে সাতক্ষীরায় তৈরী হয়েছে । এই সকল অবৈধ অর্থ দিয়ে তিনি ইতোমধ্যে ঝিনাইদহ পৌরসভা এলাকায় জমি ক্রয় করে বহুতল অট্টালিকা নির্মাণ করছেন । খুলনা জেলার সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকায় ৪০ লক্ষাধিক টাকায় একটি প্লট ক্রয় করেন এবং ঢাকাতেও তার একটি প্লট বুকিং দেওয়া আছে আর এসকল তথ্য তিনি তার আয়কর ফাইলে প্রদান করেনি । তার একমাত্র কারণ উক্ত অর্থ গুলো তিনি সম্পূর্ণ অবৈধ ভাবে উপার্জন করেন ।তিনি সব থেকে বেশি শ্যামনগর উপজেলায় যাতায়াত করেন, নামে মাত্র বলেন মাঠ তদারকিতে যাচ্ছেন কিন্তু বাস্তবতা হল ভিন্ন । শ্যামনগর উপজেলায় তিনি বিভিন্ন রিসোর্ট এ নারী নিয়ে আমোদ-প্রমোদ ও দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করে থাকেন ।পাশাপাশি তিনি লাল পানিতেও বিশ্বাসী অর্থাৎ নারীর সাথে সময় কাটানো এবং মদ-তাড়ি খাওয়া তার পুরণ অভ্যাস, যা যশোর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা থাকাকালীন শার্শা উপজেলায় গিয়ে করতেন । ইতোপূর্বে তিনি যখন জেলা মৎস্য অফিসার হিসেবে যশোর জেলায় কর্মরত ছিলেন তখন ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল টেকনোলজি প্রোগ্রাম ফেজ-২ প্রজেক্ট (এনএটিপি-২) প্রকল্পের পরিচালক
এস,এম, মনিরুজ্জামান এর সাথে সু-সম্পর্ক স্থাপন করেন এবং তার নাম ভাঙ্গিয়ে মাঠ পর্যায়ের বিভিন্ন দপ্তর হতে বিভিন্ন সময় চাঁদা উত্তোলন করতেন । এনএটিপি-২ প্রকল্পের এগ্রিকালচারাল ইনোভেশন ফান্ড (এআইএফ-২,৩) এর আওতায় অনুদান দেওয়ার নাম করে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও সিআইজি সদস্যদের নিকট হতে টাকা দাবি করতেন । ক্ষুদ্র উদোক্তা বা সিআইজি সদস্যরা টাকা দিলে
তাদের উপ-প্রকল্পের প্রস্তাব ঢাকায় প্রেরণ করতেন এবং এনএটিপি-২ প্রকল্প পরিচালক তার বন্ধুর নিকট হতে পাশ করিয়ে নিতেন ।
পাশ করানোর পর কেনাকাটাতেও তিনি মধ্যস্ততাকারী হিসেবে কাজ করে একটি নির্দিষ্ট পরিমান টাকা সরবরাহকারীর নিকট থেকে গ্রহণ করতেন। মাঠ পর্যায়ে প্রদর্শনী বাস্তবায়নে তার ছিল ব্যাপক অনিয়ম । প্রতিটি প্রদর্শনীর জন্য তিনি ৩-৫ হাজার টাকা দাবি করতেন । এ ঘটনায় সাতক্ষিরা জেলা মৎস্য অফিসার মোঃ আনিছুর রহমানের কাছে মুঠোফোনে আলাপকালে তিনি অস্বীকার করেন।
পাহাড়ে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দ্রুত তুলে নেয়া হবে; সুপ্রদীপ চাকমা
ফারহানা আক্তার খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধি পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও...