চট্টগ্রাম ব্যুরো- তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সরকার পরিচালনা করতে গিয়েনিশ্চয়ই আমাদের ভুলত্রুটি থাকবে, ভুলত্রুটি মানুষেরই হয়। পৃথিবীর কোন সরকার শতভাগ নির্ভূল কিছু করতে পারেনা। পাঁচ’শ বছর অতীতেরসরকারেও ভুল ছিল, আগামী পাঁচ’শ বছর পরের সরকারেরও ভুল থাকবে। তবে দেখতে হবে সরকার দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে গেছে কিনা। কেউস্বীকার করুক বা না করুক গত সাড়ে চৌদ্দবছরে দেশ এগিয়ে গেছে।
শনিবার (১৫ জুলাই) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম শহরে বসবাসরত রাঙ্গুনিয়া সমিতি আয়োজিত সুধী সমাবেশে রাজধানীর গ্রীণ রোডের বাসা থেকেঅনলাইনে সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
নিজের নির্বাচনী এলাকা রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সুধীজনের উদ্দেশ্যে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সরকারের এই অগ্রযাত্রা যাতে অব্যাহত থাকেসেজন্য আপনাদের সহযোগীতা চাই। আমি সব দল ও মতের মানুষের এমপি হওয়ার চেষ্ঠা করেছি। গত সাড়ে ১৪বছর সবার জন্য আমার দুয়ারখোলা ছিল। ভবিষ্যতেও যদি কোন নিবেদন নিয়ে আপনাদের দুয়ারে আসি দয়া করে আপনাদের দুয়ারটাও দলমত নির্বিশেষে খোলা রাখবেন, সেটিই আপনাদের কাছে আমার প্রত্যাশা।
তিনি বলেন, আমার দলের নেতাকর্মীদের সবসময় বলি ক্ষমতায় থাকলে বিনয়ী হতে হয়, মাথা নিচু করে চলতে হয়, বিনয় মানুষকে মহান করে।আমি চেষ্ঠা করছি আপনাদের পাশে থাকার। সরকারের মন্ত্রী ও দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি আমি প্রতি সপ্তাহে চট্টগ্রামে ওরাঙ্গুনিয়ায় যাই।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান বলেন, রাঙ্গুনিয়া একটি কৃষি প্রধান জনপদ। চাষাবাদে সুবিধার জন্য তিনটি রাবার ড্যাম নির্মাণ করা হয়েছে।আমাদের প্রচুর কৃষি জমি আছে। আগে রাঙ্গুনিয়া থেকে কৃষি পণ্য শহরে আসত, এখনো আসে। তবে, এখন কিছু কিছু কৃষি পণ্য শহর থেকেরাঙ্গুনিয়া যাওয়া শুরু করেছে। প্রচুর কৃষি জমি অনাবাদি পড়ে রয়েছে। রাঙ্গুনিয়ায় কৃষি জমি অনাবাদি পড়ে থাকার কারণ নেই।
তিনি বলেন, অনেক ছেলে বিদেশে গেছে, সেখান থেকে টাকা পাঠায়, পরিবারে অন্যরা কাজ নাকরে জমিগুলো অনাবাদি ফেলে রেখেছে, এতেদেশের ক্ষতি হচ্ছে। রাঙ্গুনিয়ার কোন কৃষি জমি যাতে অনাবাদি না থাকে সেদিকে সবাইকে নজর দিতে হবে। কালিন্দীরাণী সড়ক ও মরিয়মনগরডিসি সড়ক প্রশস্তকরণের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।
রাঙ্গুনিয়ার উন্নয়ন নিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, গত সাড়ে চৌদ্দ বছরে এমন কোন স্কুল কলেজ ও আলিয়া মাদ্রাসা নেই নতুন ভবন হয়নি।এমন কোন বেসরকারি মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দির ও প্যাগোডা নেই বরাদ্দ পায়নি। নতুনভাবে ২৮টি মসজিদ নির্মিত হয়েছে। আগেও অনেকেরাঙ্গুনিয়া থেকে নির্বাচিত এমপি ও মন্ত্রী ছিল। তারা কতটুকু করতে পেরেছেন আপনারা জানেন।
তিনি বলেন, আমি চেষ্ঠা করেছি রাঙ্গুনিয়ার মানুষের কল্যানে কাজ করার। কয়েক হাজার ছেলেমেয়ের চাকুরি হয়েছে। বিএনপি করে এমনপরিবারের চাকুরিও আমার হাত দিয়ে হয়েছে। ১৪ বছর আগে রাঙ্গুনিয়ার আভ্যন্তরীণ যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম মরিয়মনগর ডিসি সড়ক, পারুয়া ডিসি সড়ক ও কালিন্দীরাণী সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। আজকে রাঙ্গুনিয়ার সমস্ত রাস্তাঘাট পিচ ঢালাই হয়ে গেছে। এভাবেরাঙ্গুনিয়ার প্রতিটি গ্রাম ও জনপদ বদলে গেছে। আপনারা যদি ভবিষ্যতেও সুযোগ দেন তাহলে মানুষের পাশে থাকার সেই চেষ্ঠা আমার সব সময়থাকবে।
চট্টগ্রাম নগরের ষোলশহর এলজিইডি ভবনের কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী মিলনায়তনে রাঙ্গুনিয়া সমিতির আহবায়ক খালেদ মাহমুদেরসভাপতিত্বে সুধী সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চুয়েটের ভিসি ড. রফিকুল আলম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. সেকান্দরচৌধুরী, এলজিইডির তত্ত্ববধায়ক প্রকৌশলী তফাজ্জল হোসেন, পরিবেশ অদিদপ্তরের পরিচালক হিন্দোল দাশ, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা চেয়ারম্যানস্বজন কুমার তালুকদার, জেলা পরিষদ সদস্য আবুল কাশেম চিশতি, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্ঠা আরহাজ্ব জহির আহমদ চৌধুরী, সিডিএ’র বোর্ড সদস্য মুহাম্মদ আলী শাহ, জেলা রেড ক্রিসেন্টের সাধারন সম্পাদক মাষ্টার আসলাম খাঁন, আবুধাবী বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতিইফতেখার হোসেন বাবুল প্রমুখ।