সাইদুল ইসলাম সাকিব– চট্টগ্রামে পতেঙ্গা থানা এলাকার ধুমপাড়ার বাসিন্দা শাহাদাত হোসেন সাধুর ৫ মাসের কন্যা তাহিয়া হোসেনতাইবা নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে। শাহাদাতের কোল আলোকিত করে আসা তাহিয়ার
হঠাৎ চলে যাওয়ায় পরিবার জুড়ে চলছে শোকের মাতাম।
সোমবার (২০ই নভেম্বর) সকালে মৃত্যু হওয়া শিশু তাহিয়াকে দাফন করতে নিয়ে যাওয়া হয় নিকটস্থ ধুমপাড়া বায়তুর রহমত জামেমসজিদের কবরস্থানে।
কিন্তু কবর দিতে গিয়ে বাঁধে বিপত্তি। মৃত ব্যক্তিকে কবরস্থানে দাফনের জন্য দেওয়া লাগে টাকা এমন দাবি করে মসজিদ কমিটির দায়িত্বেথাকা মোতোয়াল্লীর। শিশু তাইবাকে দাফন করতে হলে মসজিদ কমিটিতে দিতে হবে ৫০ হাজার টাকা।
অস্বচ্ছল পরিবার মসজিদ কমিটি চাঁদা দাবি শুনে দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়। সকাল থেকে তাহিয়ার বাবা শাহাদাত মৃত কন্যার লাশ কাফনেমুড়িয়ে রেখে কবর দেওয়ার অনুমতির জন্যে দিক বেদিক ছুটতে থাকে কমিটিকে রাজি করিয়ে কোন রকম মেয়েকে কবরে শায়িত করতে।কবরস্থানে শিশুর লাশ দাফন করতে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন মোতোয়াল্লীর নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা এমন অভিযোগ করেন তাহিয়ারবাবা শাহাদাত হোসেন।
শিশুর চাচা সোহেল রানা সরেজমিন বার্তাকে বলেন, তাহিয়ার মৃতুর পর দাফনের জন্য মসজিদ কমিটির দায়িত্বে থাকা ফরিদের কাছেগেলে সে শামসু আলমের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। এভাবে একেকজনের সাথে কথা বলতে বলেসারাদিন ছোটাছুটি করতে থাকিপরবর্তীতে তারা
৫০ হাজার টাকা দাবি করে কিন্তু আমরা এত টাকা দেওয়ার সামর্থ্য রাখি না কেমনে দিব, পরে এলাকাবাসী এসে আমর ভাতিজিকেদাফন করার ব্যবস্থা করে দেয়।
জানা যায়, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শিশুটির লাশ ধুমপাড়া বায়তুর রহমত জামে মসজিদের কবরস্থানে নিয়ে গেলে মোতোয়াল্লীরদায়িত্বে থাকা শামসুল আলম ও ফরিদ ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন।শাহাজাদা নামে একজনের দাবি, কিছুদিন আগে তার বাবারমৃত্যুর পর তাদের একই পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে। তার বাবাকে দাফনের সময় টাকা দাবি করে বলে জানান শাহাদাত ।
এদিকে ঘটনাটি নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হলে আ.জ.ম. নাসির উদ্দিন ব্লাড ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা জোবায়ের বাসার ও এলাকাবাসীরহস্তক্ষেপে দুপুর ৩টার দিকে টাকা ছাড়া ওই শিশুর লাশ দাফন করা হয়।
তবে শিশু তাহিয়ার পরিবারের সেই অভিযোগের বিষয়ে জানতে শামসুল আলমর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে, তিনি এই বিষয়কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি অন্য মোতোয়াল্লীর সাথে যোগাযোগ করতে বলে অর্থ দাবির বিষয়টি অস্বীকার করেন।
কবরস্থানের জায়গাটির মালিক শামীমুল হক রায়হান বলেন, মসজিদটি ওয়াকফ এস্টেট হলেও মসজিদ নির্মান করা হয়েছে স্থানীয়মানুষের টাকায়। আর কবরস্থানটি আমার বাবা মৃত আব্দুল হকের কেনা সম্পত্তি। এটি আমাদের পারিবারিক কবরস্থান। তবে এলাকারগরিব, সাধারণ মানুষের জন্য এটি উন্মুক্ত। কিন্তু মোতোয়াল্লীর দায়িত্বে থাকা লোকগুলো টাকা না দিলে খাটিয়া বের করতে দেয় না এখনথেকে আমরা আর তাদের কোন দায়িত্ব দিব না আমি নিজে একটা খাটিয়ার ব্যবস্থা করে দিব আর তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলাকরার মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
কবর নিয়ে মসজিদ কমিটির এমন বাণিজ্য নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এলাকাবাসী। এছাড়াও মৃত্যুর পর মরদেহ নিয়ে এমন গর্হিতবানিজ্য রোধে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন স্থানীয়রা।