
ইফতেখার হোসেন, চট্টগ্রাম ব্যুরো- রেলওয়ের রানিং স্টাফরা মাইলেজ জটিলতা সংক্রান্ত দাবি পূরণ না হলে কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে ।
মঙ্গলবার (১ আগস্ট) সকাল ১০ টায় বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের জরুরী সভায় এ ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতি।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সভাপতি রফিক চৌধুরী সভাপতিত্বে আয়োজিত এ সভায় রানিং কর্মচারীগণ আগামী ২৭ তারিখের মধ্যে অর্থ মন্ত্রনালয় কর্তৃক তাদের আইনগত পাওনার বিষয়ে জটিলতা নিরসন করা না হলে ২৮ তারিখ থেকে কর্মবিরতিতে যাবেন বলে সিদ্ধান্ত নেন সমিতির নেতৃবৃন্দরা।
মাইলেজ জটিলতা নিরসন না হওয়ায় গত ২৩ জুলাই থেকে অতিরিক্ত ডিউটি বন্ধ রেখেছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের ট্রেন চালকরা। এতে বিঘ্ন ঘটছে যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রেন পরিচালনায়। এছাড়াও বন্ধ হয়েছে বিভিন্ন লোকাল ট্রেন সার্ভিস। তবে রেলওয়ের মহাপরিচালকের অনুরোধে ২৯ তারিখ থেকে স্বাভাবিক হয়েছে ট্রেন চলাচল।
কেন্দ্রীয় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান বলেন, রানিং কর্মচারীদের অবসরোত্তর ৭৫ শতাংশ মাইলেজ মূল বেতনের সাথে যোগ করে পেনশন নির্ধারণের বিধান প্রায় ১৬০ বছর যাবত চলমান। কিন্তু ২০২০ সালে রেলওয়ের এই কোডিফাইড রুল অমান্য করা হয় সেখান থেকে টিএ খাতে নেয়ার ফলে জটিলতা তৈরি হয়।
তিনি আরও বলেন, ২০২১ সালে অর্থ মন্ত্রনালয়ের অর্থ বিভাগ রেলওয়ে রানিং স্টাফদের মাইলেজ যোগে পেনশন ও আনুতোষিক সুবিধা প্রদানে অসম্মতি জানায়। এর প্রেক্ষিতে আমরা রেলমন্ত্রী, রেল সচিবসহ রেলওয়ে প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে বহুবার বৈঠক করি। আমাদের অধিকারের বিষয়ে আইনগত ভিত্তি ও যুক্তি তুলে ধরি। তাঁরা আমাদের যৌক্তিকতা অনুধাবন করে অর্থ মন্ত্রণালয় বারবার চিঠি পাঠান এবং আমাদের প্রাপ্যতার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন।
তবে দাবি মেনে না নেওয়ায় গতবছরও রানিং স্টাফরা ৮ ঘন্টা কর্মবিরতিতে গেলে সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তাদের ওই আন্দোলনের মুখে পড়ে অর্থ মন্ত্রনালয় তাদের প্রেরিত সেই চিঠি প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হন। এরপর রেলমন্ত্রী মিডিয়ার সামনে এসে এই সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়নের পরিবর্তে চলতি বছরের ১৮ জুন অর্থ মন্ত্রনালয়ের অর্থ বিভাগ রেলওয়ের মহাপরিচালকের চিঠির বিপরীতে পুনরায় আপত্তি জানান। যার ফলে মাইলেজ জটিলতাসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধানের মুখ দেখছেন না রেলওয়ের রানিং স্টাফরা। ফলে ক্ষোভ ও চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে সমগ্র রেলওয়ের রানিং স্টাফদের মধ্যে।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন গার্ড কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. মিজানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন, অত্র সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যকরী সভাপতি সাইদুর রহমান, কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মুজিবুর রহমান ভূঁইয়া, খুরশিদ আলম, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহেদ আলী, আব্দুল বারী, রবিউল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল আলম, আব্দুল হাকিম, কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ জাহেদুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ ওমর ফারুক, কেন্দীয় সহ দপ্তর সম্পাদক গোলাম শাহরিয়ার, রেল শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, সিজিপিওয়াই শাখার যুগ্ম সম্পাদক আবু বক্কর ছিদ্দিক, টিটিইজ এসোসিয়েশন এর সবুজ নন্দীসহ সারা বাংলাদেশ থেকে আগত সংগঠনের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ।সভায় সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রেলওয়ে শ্রমিক লীগ, রেলওয়ে গার্ড কাউন্সিল ও টিটিইজ এসোসিয়েশন এর কেন্দ্রীয় শাখার বিভিন্ন নেতৃবৃন্দরা । – সংবাদ বিজ্ঞপ্তি