মোঃ রাকিবুল ইসলাম,
রাজশাহী জেলা প্রতিনিধিঃ
হামলা মামলায় জর্জড়িত রাজশাহীর আলোচিত সেই বিএনপি নেতা আবু সাঈদ চাঁদ। রাজনীতি করতে গিয়ে বার বার কারা বরণ করতে হয়েছে তাকে। বিভিন্ন কারনেই রাজশাহীর বিএনপি সিনিয়র এই নেতা বরাবরই ছিলেন দেশজুড়ে আলোচনায়। সর্বশেষ শেখ হাসিনাকে কবরস্থানে পাঠাতে হবে বলে বক্তব্য দিলে দেশ জুড়ে আলোচনায় আসেন তিনি।
এরপর সেই অভিযোগে তিনি একটানা ১৩ মাস কারা অভ্যন্তরে ছিলেন। আর এ সময়ে তিনি হারিয়েছেন তার গর্ভধারীনি মা ও প্রিয়তমা স্ত্রীকে। তবে বর্তমানে তিনি মুক্ত আকাশে ঘুরছেন। এক সময়ের বিএনপির ঘাটি রাজশাহীকে আবারো বিএনপির ঘাটিতে পরিনত করতে জেলা শহর ছাড়া জেলার প্রতিটি উপজেলায় ছুটছেন অবিরাম জেলা বিএনপির দায়িত্বে থাকা আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ।
দলীয় একাধিক সুত্রে জানা যায়, বিএনপির তৃনমুল থেকে উঠে আসা আবু সাঈদ চাঁদ এখন রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক। এছাড়াও তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির অন্যতম একজন সদস্য। রাজনীতিতে দেশজুড়ে বিভিন্ন কারনেই ব্যাপক আলোচিত নাম আবু সাঈদ চাঁদ। ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিসহ অধিকাংশ দলের অংশ গ্রহণ ছাড়াই আওয়ামীলীগ একক ভাবে নির্বাচনের ঘোষণা দেয়। বিএনপিসহ অধিকাংশ দল সেই আলোচিত নির্বাচন বর্জনসহ প্রতিহত করার ঘোষনা দেয়। তবে সেই ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী নির্বাচনে সারা দেশের বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে কম বেশী ভোট পড়লেও এর ব্যাতিক্রম ঘটে রাজশাহীর চারঘাটে। একটি ভোটও পড়েনি রাজশাহীর জনপ্রিয় নেতা আবু সাঈদ চাঁদের নিজস্ব ভোট কেন্দ্রে। ব্যাপক আলোচিত হয় সেই চাদের বাড়ী চারঘাটের শলুয়া ইউনিয়নের মাড়িয়া সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্র।
সর্বশেষ ২০২৩ সালের ২১ মে পুঠিয়ার শিবপুরে জনসভায় শেখ হাসিনাকে কবরস্থানে পাঠাতে হবে বলে রাজনৈতিক বক্তব্য দিলে আবারো দেশজুড়ে বাপক আলোচিত হোন আবু সাঈদ চাঁদ। আর সেই রাজনৈতিক বক্তব্যের কারনে দেশের বিভিন্ন থানায় আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে চাঁদের বিরুদ্ধে দেয়া হয় অর্ধশতাধিক মামলা। হামলা মামলায় জর্জড়িত হয়ে ১৩ মাস কারা অভ্যান্তরিন ভোগ করতে হয় তাকে। কারা অভ্যান্তরিন থাকা অবস্থায় চাদ হারান তার গর্ভধারীনি মাকে। হারিয়েছেন তার সহধর্মীনিকে। এরপরও তিনি দমে যাননি চাঁদ। জেল থেকে মুক্ত হয়ে তিনি দৌড়াতে থাকেন দল গোছাতে। জেলা থেকে শুরু করে প্রতিটি উপজেলায় সাংগঠনিক তৎপরতা বাড়াতে সভা সমাবেশ করে দলকে করেছেন শক্তিশালী।
চারঘাট পজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক সাবেক পৌর মেয়র জাকিরুল ইসলাম বিকুলসহ স্থানীয়একাধিক নেতাকর্মী জানান, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত মাসের ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগের পর দল গোছাতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন আবু সাঈদ চাঁদ। তার একটিই উদ্দেশ্য, আগামী জাতীয় নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিকে ক্ষমতায় আনতে হবে। এক সময়ের বিএনপির ঘাটি হিসেবে পরিচিত রাজশাহীকে আবারো বিএনপির ঘাটিতে পরিণত করতে দিনের অধিকাংশ সময় জেলার বিভিন্ন উপজেলাসহ চারঘাট-বাঘার সব ইউনিয়ন ও পৌর এলাকায় পাঠ পর্যায়ে কাজ করে চলেছেন তিনি।
এ দিকে চাঁদের নিজ এলাকা চারঘাট ও বাঘার একাধিক বিএনপির নেতা কর্মীরা বলছেন, আগামী অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে রাজশাহীর চারঘাট-বাঘা থেকে আবু সাঈদ চাঁদের দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এ কারণে তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে সব মতবিভেদ ভুলে সাংগঠনিক তাৎপর্য তুলে ধরাসহ দল গোছাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সাঈদ চাঁদ জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদকালে বিএনপির নেতাকর্মীরা জেল-জুলুম ও পুলিশী নির্যাতনের শিকার হয়ে মাঠে দাড়াতে পারেনি। তবে অন্য সময়ের চেয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা এখন অনেক শক্তিশালী। রাজশাহী বিএনপির ঘাটি হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি একটি নাম। সেই রাজশাহীকে আবারো বিএনপির ঘাটিতে পরিনত করতে নেতাকর্মীরা এখন সুসংগঠিত। দেশ নায়ক তারেক জিয়ার নেতৃত্বে আমরা সব ভেদাভেদ ভুলে দলকে শক্তিশালি করতে কাজ করছি।