ইলিয়াছ হুসাইন, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
মুরাদনগর উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ বদিউল আলম উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে ছাত্রী যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার সকালে ওই শিক্ষককে অপসারণ ও শাস্তির দাবিতে শিক্ষার্থীরা স্কুলে আন্দোলন করেন। এর আগে গণস্বাক্ষর কর্মসূচির আয়োজন করেন শিক্ষার্থীরা। এতে প্রায় ১৫০ জন শিক্ষার্থী স্বাক্ষর করেন । শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, নুরুল আমিন দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করে আসছে। এ ছাড়া তিনি বিভিন্ন সময়ে ছাত্রীদের সঙ্গে অসদাচরণ ও অশ্লীল ভাষায় কথা বলতেন বলে অভিযোগ। এ ব্যাপারে তাঁরা বেশ কয়েকবার প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু ওই শিক্ষক তাঁর আচরণ পরিবর্তন করেননি। নারী শিক্ষকেরাও তাঁর হয়রানি শিকার। মানসম্মান হারানোর ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চান না। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, নুরুল আমিন যত দিন এ স্কুলে থাকবেন, তত দিন ছাত্রীরা যৌন লালসার শিকার হবেন। ছাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য তাঁকে স্কুল থেকে অপসারণ করতে হবে। সেই সঙ্গে তাঁর শাস্তির দাবি করেন শিক্ষার্থীরা। বিচার না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে জানান তাঁরা।
৮ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলেন, ওই শিক্ষক তাকে বলেন তুমি অনেক সুন্দর! শাড়ীতে তোমাকে বউয়ের মতো লাগবে। মেহেদী হাতে দারুণ লাগছে বলে গায়ে স্পর্শ করেন। এছাড়াও চলতি বছরে এক ছাত্রীর সাথে আপত্তিকর বিষয় নিয়ে সোস্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড় উঠে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। জানা যায়, সে একজন খন্ডকালীন শিক্ষিকাকে রক্ষিতার মতো ব্যাবহার করে। ওই শিক্ষিকার স্বামী অসুস্থ। শিক্ষিকার বাড়ি পরমতলা। সে একটি কিন্ডারগার্টেনে চাকুরী করতো। পরিচয়ের সুবাদে তাকে কোম্পানীগঞ্জ স্কুলে খন্ডকালীন হিসেবে নিয়োগ দেন নুরুল আমিন। তারপর থেকে দু’জনের অশালীন চলাফেরা ও অবাধে মেলামেশা চলে আসছে। সহকারী শিক্ষকদের চোখে তাদের সম্পর্কের বিষয়টি পরিষ্কার হলেও কেউ ভয়ে মুখ খোলছেনা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবক বলেন, সহকারী প্রধান শিক্ষকের চরিত্র ভালো না। মেয়েদের নিয়ে খুব আতঙ্কে থাকতে হয়। পূর্বে নারী কেলেংকারী ঘটনা রয়েছে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। মানসম্মানের ভয়ে কেউ বিচার নিয়ে অভিযোগ দেয়না। যেহেতু শিক্ষার্থীরা দাঁড়িয়েছে আমরা চাই তার বিচার হউক। মুরাদনগর উপজেলা নবাগত নির্বাহী অফিসার আবদুর রহমান ও স্কুলের শিক্ষকরা মিলে শিক্ষার্থীদের শান্ত করে ক্লাসে ফিরিয়ে নেন। এসময় ইউএনও আবদুর রহমান অভিযুক্ত শিক্ষককে ১৫ দিনের জন্য ছুটির আবেদন করতে বলেন।
অভিযুক্ত শিক্ষক নুরুল আমিন বলেন, অভিযোগ সত্য নয়। আমি কাউকে যৌনহয়রানি করিনি। কোম্পানীগঞ্জ বদিউল আলম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে ওনাকে সতর্ক করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা তাঁকে অপসারণের দাবিতে আন্দোলন করছেন। তাদের বুঝিয়ে ক্লাসে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ইউএনও স্যার সুষ্ঠু সমাধানের কথা বলে ওই শিক্ষকসহ খন্ডকালীন একজনকে ১৫ দিনের ছুটির আবেদন করতে বলেছেন। এবিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুর রহমান বলেন, তদন্ত কমিটি গঠন হচ্ছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা নেওয়া হবে। আপাতত ওই শিক্ষককে ১৫ দিনের ছুটির আবেদন করতে বলা হয়েছে।