মোঃ রিপন হাওলাদার
রাজধানীর মিরপুরে এক হাজার মানুষকে ফ্রি চিকিৎসা সেবা দিলো নেটওয়ার্কিং বাংলাদেশ।
শুক্রবার ৯ ফ্রেব্রুয়ারি নেটওয়ার্কিং বাংলাদেশের এর আয়োজনে ১০০০ হাজার মানুষের জন্য সারা দিন ব্যাপী ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পেইনের আয়োজন করা হয়।
মিরপুর গার্লস আইডিয়াল ল্যাবরেটরী ইন্সটিটিউট মিরপুর (১০) এ সকাল ০.৮ থেকে শুরু হয়ে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত ক্যাম্পেইন কার্যক্রম চলে।এসময় প্রায় এক হাজার মানুষ এই ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পেইন থেকে তাদের চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করেন।
ক্যাম্পেইনে ১০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, ১০ জন প্রশিক্ষিত নার্স, ৫০ জন স্বেচ্ছাসেবী ও মাঠ কর্মী ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পেইন অংশগ্রহণ করেন।
চিকিৎসা সেবা নিতে আসা লোকজন বলেন তাদের এ মহতি উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে।তারা আমাদের মতো নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রম জীবি মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা চিন্তা করে এমন আয়োজন করেছেন ।
এখানে যে মানের চিকিৎসা পরামর্শ দেওয়া হয়েছে তা অন্য কোন জায়গায় গ্রহণ করতে গেলে আমাদের ৫০০-১০০০ টাকা গুণতে হতো আমরা নেটওয়ার্কিং বাংলাদেশের চিকিৎসা কার্ডের মাধ্যমে তা ফ্রি গ্রহণ করতে পারছি।
নেটওয়ার্কিং বাংলাদেশের স্বেচ্ছাসেবক ও মাঠপর্যায়ের কাজ করেন এমন কয়েকজন বলেন এই সংস্থার কাজ করতে আমাদের ভালো লাগে তার কারণ হচ্ছে তারা আমাদের যে প্রাথমিক চিকিৎসা বিষয়ক প্রশিক্ষণ দিয়েছেন তা থেকে আমি আমার পরিবার ও পরিচিত জনকে রোগ নিরাময় থেকে কি ভাবে রক্ষা পাওয়া যায় তা শিখতে পেরেছি। আবার অনেক সময় প্রতিবেশীরা বিভিন্ন রোগবালায় আকান্ত হয়ে অর্থের অভাবে ভালো চিকিৎসা সেবা নিতে পারে না তাদেরকে এখান থেকে বিভিন্ন উন্নতমানের হাসপাতালে সল্প মূল্যে সুচিকিৎসার সহায়তা করা যায়।
মূলত এই সংস্থার মাধ্যমে মানব সেবামূলক কার্যক্রমে সহায়তা করতে পারছি বলে আমরা নেটওয়ার্কিং বাংলাদেশের সেচ্চাসেবী হিসেবে কাজ করছি।
মহাখালী ইউনিভার্সেল মেডিকেলের কর্মরত চিকিৎসক তোফায়েল আহমেদ ভূঁইয়া বলেন,চিকিৎসা মানুষের মৌলিক অধিকার আমরা মূলত সেই সেবাটাই এখানে দিতে এসেছি।এখানে চিকিৎসা সেবা দিতে এসে দেখলাম নিম্ন আয়ের লোকজনই বেশি।
নেটওয়ার্কিং বাংলাদেশকে ধন্যবাদ না দিয়ে পারছি না যে তারা চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত বা অর্থের অভাবে ভালো চিকিৎসা সেবা নিতে পারছে না তাদের জন্য এমন আয়োজন করেছে।আমরাও তাদের এমন মানবিক কার্যক্রমের সাথে সবসময় নিঃস্বার্থভাবে থাকতে চাই।
নেটওয়ার্কিং বাংলাদেশের প্রজেক্ট ডাইরেক্টর কানিজ ফাতেমা চৌধুরী বলেন, আমাদের প্রকল্পটি দুঃস্থ অসহায় নিম্নবিত্তদের নিয়ে। আমরা চাচ্ছি অল্প টাকায় যাতে তারা আমাদের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে সাবলম্বী হতে পারে।
আমাদের কাছ থেকে যারা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছে তাদের দক্ষ করে তোলা সহ ভবিষ্যৎ কার্যক্রমের সকল দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকি। আমরা এখন মিরপুর এলাকা নিয়ে কাজ করছি।তার পর জেনেভা ক্যাম্প নিয়ে এমন চিকিৎসা বঞ্চিত বা অসহায়দের নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
এছাড়াও ৬৪ জেলা ব্যাপী আমাদের নেটওয়ার্কিং বাংলাদেশের কার্যক্রমের বিস্তৃতি ঘটাতে চাই।এ জন্য সকলের সম্মিলিত সহযোগিতা প্রয়োজন।
নেটওয়ার্কিং বাংলাদেশের হেড অব অপারেশন ফেরদৌসি সুস্মিতা বলেন, নেটওয়ার্কিং বাংলাদেশ মূলত একটি চিকিৎসা প্রশিক্ষণ সেন্টার আমাদের কাজগুলো হচ্ছে অসচ্ছল পরিবারের লোকজন নিয়ে। তাদের আমরা এমন ভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি যাতে তারা ছোট ছোট ব্যবসা বা উদ্যোগের মাধ্যমে তাদের পরিবার নিয়ে সচ্ছল ভাবে চলতে পারে। তাদের এমন প্রশিক্ষণ দিতে গিয়ে দেখলাম তাঁরা স্বাস্থ্য সম্পর্কে একদমই সচেতন নয়।
তারা এমন নোংরা পরিবেশে অসংখ্য লোকজন বসবাস করছে যা চোখে না দেখলে বোঝার উপায় নেই। আমরা তাদের নিয়ে কাজ করার সুবাধে দেখতে পেয়েছি তাই আমাদের মনে হলো এদের জন্য এমন একটি ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প খুবই দরকার। আমাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে তাদের স্বাবলম্বী হতে সাহায্য করা সেটা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে হোক আর বিভিন্ন ব্যবসার দিকনির্দেশনার মাধ্যমে হোক।আর এই ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পেইনের চিন্তা আসে মাত্র বিশ দিন আগে গত সাত দিন আগে আরো একটি ক্যাম্পেইন করে ছিলাম সেখানে প্রায় পাঁচশত মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিয়েছি। তারপর এই ক্যাম্পেইনে প্রায় একহাজার মানুষকে এমন ভাবে চিকিৎসা সেবা দিতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের সংগৃহীত আর্থায়নেই এই ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পেইন সেবা কার্যক্রম চলছে
আর/এইচ/সরে